ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুজিবনগরে বাকপ্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ মামলার রায় একজনের যাবজ্জীবন ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩৬:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
মেহেরপুরে ধর্ষণের অভিযোগে খোকন ওরফে প্রতীক নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে মেহেরপুর (জেলা ও দায়রা জজ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. তহিদুল ইসলাম এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত খোকন ওরফে প্রতীক মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের মুকুল শেখ ওরফে মুকুল ডাকাতের ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের শাহিন আলীর মেয়ে বাক প্রতিবন্ধী নাজমা খাতুন (১৪) শিবপুর গ্রামে তার নানার বাড়িতে বেড়াতে যায়। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে সে বাড়ি ফেরার পথে একই গ্রামের খোকন তাকে ধরে নিয়ে তার বাড়িতে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে সে রক্তাক্ত অবস্থায় তার নানার বাড়ি গিয়ে ঘটনা খুলে বলে। ওই ঘটনায় বাক প্রতিবন্ধী নাজমা খাতুন আসামির বাড়ি দেখিয়ে দেয় এবং আসামি খোকন ওরফে প্রতীককে শনাক্ত করে। ওই ঘটনায় ধর্ষিতার মা বেলি খাতুন বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(১) একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ১১। নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা নম্বর ৬৪/১৯। মামলায় খোকন ওরফে প্রতীক এবং মমিনুল শেখ ওরফে কালুকে আসামি করা হয়। পরে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুব্রত কুমার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাঁদের সাক্ষ্য দেন। এতে আসামি খোকন ওরফে প্রতীক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (১ সন্দেহাতীতভাবে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত খোকনের ওরফে প্রতীকের প্রতি আরোপিত অর্থদণ্ড ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য করা হবে বলে রায় উল্লেখ করা হয়।

উক্ত ক্ষতিপূরণের টাকা আসামি খোকন ওরফে প্রতীকের বর্তমান সম্পদ হতে আদায় করা সম্ভব না হলে তিনি ভবিষ্যতে যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হবেন, সেই সম্পদ হতে আদায়যোগ্য হবে। এ ক্ষেত্রে সম্পদের ওপর অন্যান্য দাবি উপেক্ষা করে ক্ষতিপূরণের দাবি প্রাধান্য পাবে। রায়ে আরও বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১৬ ধারার বিধান অনুযায়ী কালেক্টরেট মেহেরপুরকে আসামি মো. খোকন ওরফে প্রতীকের স্থাবর বা অস্থাবর বা উভয় প্রকার সম্পদ নিলামে বিক্রি করে বিক্রয়লদ্ধ অর্থ এই ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়। ক্ষতিপূরণের উক্ত অর্থ এই ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়ার সাপেক্ষে তা এই মামলার ভিকটিমকে প্রদান করা হবে। মামলার অপর আসামি মমিনুল ওরফে কালুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পিপি এসএস আসাদুজ্জামান এবং আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কৌশলী ছিলেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মুজিবনগরে বাকপ্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ মামলার রায় একজনের যাবজ্জীবন ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা

আপলোড টাইম : ১১:৩৬:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:
মেহেরপুরে ধর্ষণের অভিযোগে খোকন ওরফে প্রতীক নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে মেহেরপুর (জেলা ও দায়রা জজ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. তহিদুল ইসলাম এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত খোকন ওরফে প্রতীক মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের মুকুল শেখ ওরফে মুকুল ডাকাতের ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের শাহিন আলীর মেয়ে বাক প্রতিবন্ধী নাজমা খাতুন (১৪) শিবপুর গ্রামে তার নানার বাড়িতে বেড়াতে যায়। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে সে বাড়ি ফেরার পথে একই গ্রামের খোকন তাকে ধরে নিয়ে তার বাড়িতে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে সে রক্তাক্ত অবস্থায় তার নানার বাড়ি গিয়ে ঘটনা খুলে বলে। ওই ঘটনায় বাক প্রতিবন্ধী নাজমা খাতুন আসামির বাড়ি দেখিয়ে দেয় এবং আসামি খোকন ওরফে প্রতীককে শনাক্ত করে। ওই ঘটনায় ধর্ষিতার মা বেলি খাতুন বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(১) একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ১১। নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা নম্বর ৬৪/১৯। মামলায় খোকন ওরফে প্রতীক এবং মমিনুল শেখ ওরফে কালুকে আসামি করা হয়। পরে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুব্রত কুমার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাঁদের সাক্ষ্য দেন। এতে আসামি খোকন ওরফে প্রতীক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (১ সন্দেহাতীতভাবে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত খোকনের ওরফে প্রতীকের প্রতি আরোপিত অর্থদণ্ড ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য করা হবে বলে রায় উল্লেখ করা হয়।

উক্ত ক্ষতিপূরণের টাকা আসামি খোকন ওরফে প্রতীকের বর্তমান সম্পদ হতে আদায় করা সম্ভব না হলে তিনি ভবিষ্যতে যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হবেন, সেই সম্পদ হতে আদায়যোগ্য হবে। এ ক্ষেত্রে সম্পদের ওপর অন্যান্য দাবি উপেক্ষা করে ক্ষতিপূরণের দাবি প্রাধান্য পাবে। রায়ে আরও বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১৬ ধারার বিধান অনুযায়ী কালেক্টরেট মেহেরপুরকে আসামি মো. খোকন ওরফে প্রতীকের স্থাবর বা অস্থাবর বা উভয় প্রকার সম্পদ নিলামে বিক্রি করে বিক্রয়লদ্ধ অর্থ এই ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়। ক্ষতিপূরণের উক্ত অর্থ এই ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়ার সাপেক্ষে তা এই মামলার ভিকটিমকে প্রদান করা হবে। মামলার অপর আসামি মমিনুল ওরফে কালুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পিপি এসএস আসাদুজ্জামান এবং আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কৌশলী ছিলেন।