ঝিনাইদহ অফিস:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক দুই মামলায় ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এস এম আনিছুর রহমান খোকার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বিচারক। গত বুধবার আনিছুর রহমান যশোরের স্পেশাল জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক নামঞ্জুর করে এই আদেশ দেন। বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন দুদকের পিপি অ্যাড. আশরাফুল আলম বিপ্লব।
মামলার বিবরণে জানা যায়, এস এম আনিছুর রহমান খোকা ১৯৯৩ সালে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র থাকাকালে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ৪০ জনকে মাস্টাররোলে চাকরি দেন। এ বিষয়ে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে কোনো অনুমোদন নেননি। এর ফলে পাঁচ বছরে বেতন বাবদ সরকারের ১৬ লাখ ২০ হাজার ৫৩৯ টাকা ক্ষতি হয়। দুদকের তদন্তে উঠে আসে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে আনিছুর রহমান এসব নিয়োগ দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় দুদকের পরিদর্শক নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০০৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।
অপর মামলা সূত্রে জানা যায়, একই সময়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৪ জন কর্মচারী নিয়োগ দেন আনিছুর রহমান। তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে তিনি সচিবের কাছ থেকে বিভিন্ন চেকে স্বাক্ষর করেন। এছাড়া তিনটি প্রকল্পের কাজের প্রাক্কলিত অর্থের বেশি টাকা ব্যয় করে দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের আর্থিক ক্ষতি করেন। এসব ঘটনায় দুদক তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। এই দুটি মামলায় আনিছুর রহমান গত বুধবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। এসময় বিচারক তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিকে ঝিনাইদহ পৌরসভায় মাস্টাররোল কর্মচারীদের সংখ্যা দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৌরসভায় নিয়ম ভঙ্গ করে স্টাফ প্যাটার্নের বাইরে প্রায় ৫১ জনকে মাস্টাররোলে বেতন দেওয়া হচ্ছে। এতে সরকারের কয়েক লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। অন্যদিকে ঝিনাইদহ পৌরবাসীর ঘাড়ে চাপছে তাদের বেতন-ভাতা বাবদ বাড়তি ট্যাক্স।