ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রোগীর নিকট থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:০৩:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট কামিয়েছেন কাড়ি কাড়ি টাকা
ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে অপারেশনের নামে টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের অন্তত ৫টি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অ্যাটেনডেন্টরা নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে রোগীদের নিকট থেকে টাকা আদায় করে থাকেন বলে কথিত আছে। সেই সাথে হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। এতে রোগীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এছাড়া স্টাফদের অসৌজন্যমূলক ব্যবহার, অপরিষ্কার পরিবেশ, ওষুধ চুরি এবং আউটডোরে রোগীর হয়রানি বহুগুনে বেড়ে গেছে।
আব্দুর রহমান নামে এক রোগীর স্বজন অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে সিজারসহ অন্যান্য অপারেশন করতে টাকা দিতে হচ্ছে। তবে এই টাকার কোনো রশিদ দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতালের অর্থপেডিক ওয়ার্ডে ২৫ দিন আগে ভর্তি হন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চান্দেরপোল গ্রামের মৃত ফজের আলীর ছেলে কামারুল ইসলাম। তিনি পেশায় ভ্যানচালক। গান্না বাজার থেকে কাঁচামাল লোড করে কালীগঞ্জ যাওয়ার পথে ট্রাকের ধাক্কায় হাত ভাঙে তাঁর। অসহায় কামারুল ইসলামকে বিভিন্ন ব্যক্তি আর্থিক সহযোগিতা করে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি তাঁর অপারেশন করা হয়। অপারেশনের আগে ওষুধ কেনার জন্য সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিতে হয় রোগীর স্বজনদের। এছাড়া হাসপাতালের ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট মো. জাকির হোসেন ডাক্তার খরচ বলে তাঁর কাছ থেকে আরও সাড়ে ৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী পরিবারটি।
এ বিষয়ে জাকির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনি কে এই কথা জিজ্ঞাসা কারার? এতদিন আপনি কোথায় ছিলেন? আমিই তো রোগীর রক্ত দেওয়া, পরীক্ষাসহ সকল কিছু ঠিক করে দিয়েছি। এতদিন পরে এসে এই কথা জিজ্ঞাসা করছেন কারণ কী? তাহলে আপনার সবকিছু করার দরকার ছিল।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে ওটি বা ডাক্তারের কোনো খরচ নেই। তিনি বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি এই টাকা ম্যাটসের ছাত্র মিণ্টু নিয়েছে।’ এদিকে রোগী কামারুল ইসলাম টাকা গ্রহণের কথা ফাঁস করে দেওয়ায় ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট মো. জাকির হোসেন তাকে টেনেহেচড়ে তত্ত্বাবধায়কের রুমে নিয়ে শাসিয়েছে। হাসপাতালের অন্য স্টাফরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জাকির হোসেনের এটি নতুন অভ্যাস নয়, সে ওষুধ চুরি, প্রতারণার মাধ্যমে রোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে অনেক টাকা-পয়সা বানিয়েছে। মাঠে অনেক জমিও কিনেছে অল্প দিনে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে জেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য, অনিয়ম, রোগী হয়রানি ও দুর্নীতি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রোগীর নিকট থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৮:০৩:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট কামিয়েছেন কাড়ি কাড়ি টাকা
ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে অপারেশনের নামে টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের অন্তত ৫টি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অ্যাটেনডেন্টরা নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে রোগীদের নিকট থেকে টাকা আদায় করে থাকেন বলে কথিত আছে। সেই সাথে হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। এতে রোগীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এছাড়া স্টাফদের অসৌজন্যমূলক ব্যবহার, অপরিষ্কার পরিবেশ, ওষুধ চুরি এবং আউটডোরে রোগীর হয়রানি বহুগুনে বেড়ে গেছে।
আব্দুর রহমান নামে এক রোগীর স্বজন অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে সিজারসহ অন্যান্য অপারেশন করতে টাকা দিতে হচ্ছে। তবে এই টাকার কোনো রশিদ দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতালের অর্থপেডিক ওয়ার্ডে ২৫ দিন আগে ভর্তি হন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চান্দেরপোল গ্রামের মৃত ফজের আলীর ছেলে কামারুল ইসলাম। তিনি পেশায় ভ্যানচালক। গান্না বাজার থেকে কাঁচামাল লোড করে কালীগঞ্জ যাওয়ার পথে ট্রাকের ধাক্কায় হাত ভাঙে তাঁর। অসহায় কামারুল ইসলামকে বিভিন্ন ব্যক্তি আর্থিক সহযোগিতা করে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি তাঁর অপারেশন করা হয়। অপারেশনের আগে ওষুধ কেনার জন্য সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিতে হয় রোগীর স্বজনদের। এছাড়া হাসপাতালের ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট মো. জাকির হোসেন ডাক্তার খরচ বলে তাঁর কাছ থেকে আরও সাড়ে ৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী পরিবারটি।
এ বিষয়ে জাকির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনি কে এই কথা জিজ্ঞাসা কারার? এতদিন আপনি কোথায় ছিলেন? আমিই তো রোগীর রক্ত দেওয়া, পরীক্ষাসহ সকল কিছু ঠিক করে দিয়েছি। এতদিন পরে এসে এই কথা জিজ্ঞাসা করছেন কারণ কী? তাহলে আপনার সবকিছু করার দরকার ছিল।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে ওটি বা ডাক্তারের কোনো খরচ নেই। তিনি বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি এই টাকা ম্যাটসের ছাত্র মিণ্টু নিয়েছে।’ এদিকে রোগী কামারুল ইসলাম টাকা গ্রহণের কথা ফাঁস করে দেওয়ায় ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট মো. জাকির হোসেন তাকে টেনেহেচড়ে তত্ত্বাবধায়কের রুমে নিয়ে শাসিয়েছে। হাসপাতালের অন্য স্টাফরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জাকির হোসেনের এটি নতুন অভ্যাস নয়, সে ওষুধ চুরি, প্রতারণার মাধ্যমে রোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে অনেক টাকা-পয়সা বানিয়েছে। মাঠে অনেক জমিও কিনেছে অল্প দিনে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে জেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য, অনিয়ম, রোগী হয়রানি ও দুর্নীতি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।