ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হামলা ও বাঁধার মধ্যেই চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করল বিএনপি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:০২:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ১১১ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক:
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার সব ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। গতকাল শনিবার বিভিন্ন জায়গায় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়।
চুয়াডাঙ্গা:
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশের ন্যায় বিএনপির ১০ দফা দাবিতে চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা, জীবননগর, দামুড়হুদা, দর্শনা উপজেলার সকল ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। গতকাল শনিবার জেলার সকল ইউনিয়ন পর্যায়ে এ কর্মসূচি পালন করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এদিকে, আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নে কর্মসূচি চলাকালে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের’ হামলায় পাঁচজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চুয়াডাঙ্গার সকল ইউনিয়নে এই পদযাত্রা করা হয়। বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীরা পুলিশের বাঁধায় পদযাত্রা থামিয়ে সড়কে সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর জব্বার বাবলুর নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা এবং ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারে ১০ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম নজুর নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। দামুড়হুদা উপজেলার সকল ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ ইউনিয়নে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জীবননগর উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাজাহানের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়।
আলমডাঙ্গা উপজেলার গাংনী ইউনিয়নের জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক আবুর নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সদর থানা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপ্টনের নেতৃত্বে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলুর নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। হারদী ইউনিয়ন চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টুর নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়।


জীবননগর:
জীবননগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে গতকাল বেলা তিনটার দিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে জড় হয় নেতা-কর্মীরা। তবে পুলিশের বাঁধায় সীমান্ত ইউনিয়ন বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি পণ্ড হয়। পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। সীমান্ত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুল গনি বলেন, ‘আমরা নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে সীমান্ত ইউনিয়নের পিচমোড়ে শান্তিপূর্ণভাবে পদযাত্রা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের বাঁধায় কর্মসূচি পালন করা যায়নি।’
এদিকে শান্তিপূর্ণভাবে রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে। রায়পুর ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচিতে জীবননগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন ময়েন, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, রায়পুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান স্বপন, সীমান্ত ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল খালেক পদযাত্রা কর্মসূচিতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশ কোনো বাঁধা দেয়নি। তারা যে অভিযোগ করেছে, সেটা সঠিক না।
আন্দুলবাড়ীয়া:
কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে পদযাত্রা ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল চারটায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-কোষাধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাহমুদ হাসান খান বাবুর বাসভবনের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান খোকন, আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আতিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আজিম খানের নেতৃত্বে নিয়ে পদযাত্রাটি বের হয়। খাপাড়ার মোড়ে পৌঁছালে পদযাত্রাটি পুলিশি বাঁধার মুখে পড়ে। এসময় নেতা-কর্মীরা প্রধান সড়কে দাঁড়িয়ে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা করে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান খোকন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি মেম্বার আতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক আজিম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি মেম্বার শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, সিনিয়র সহসভাপতি বজলুর রহমান, রফু উদ্দীন, খন্দকার নাসির উদ্দীন সোহাগ মেম্বার, জহিরুল ইসলাম মেম্বার, সাবেক ইউপি মেম্বার মফিজ উদ্দীন, সানোয়ার হোসেন, নূর উদ্দীন, হোসেন আলী, আবু জাফর, রিপন খান, বাঁকা ইউপি মেম্বার আবুল বাসার, নজরুল, আজিজুল, আন্দুলবাড়ীয়া ইউনয়ন বিএনপি নেতা মোজাফফর হোসেন, আব্দুল মালেক, জেলা ছাত্রদল নেতা সাইদুর রহমান বাবু, ইউনিয়ন যুবদল নেতা, স্মরণ, জিয়া, পান্নু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাইদুর রহমান সাইদুল, পল্লব খানসহ সকল সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতা-কর্মী। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
মুজিবনগর:
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১০ দফা দাবিতে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর ও মোনাখালী ইউনিয়ন বিএনপি পদযাত্রা করেছে। গতকাল শনিবার বিকেল চারটার দিকে মোনাখালী ইউনিয়নের মোনাখালী বাজার থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুনের নেতৃত্বে পদযাত্রা বের করা হয়। পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবুল হাসান, সদস্যসচিব আনোয়ারুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আশরাফুল আলম, সদস্যসচিব জুলফিকার, ছাত্রদল সভাপতি আকিব জাভেদ সেঞ্জিরসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
ঝিনাইদহ:
বেগম খালেদা জিয়া ও কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে ঝিনাইদহে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপি। সাধুহাটি ও সাগান্না ইউনিয়ন বিএনপির পদযাত্রা ডাকবাংলা বাজার থেকে বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আব্দুর রওফ ডিগ্রি কলেজে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. এম এ মজিদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ^াস প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সরকার আজ ব্যর্থ। ফলে কোনো দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সরকার ও দলের নেতা-কর্মীরা সিন্ডিকেট বানিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। ইটভায় পোড়ানো কয়লাসহ ছোট ছোট ব্যবসায়ী খাত রাঘব বোয়ালদের হাতে ছেড়ে দিয়ে সরকার মাসোহারা নিচ্ছে। তাই আগামীতে গণতন্ত্র ও মানুষের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে সকলকে রাজপথে নেমে আসতে হবে। এদিকে, মহারাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির পদযাত্রা তেঁতুলতলা বাজার থেকে শুরু হয়ে বিষয়খালী বাজারে গিয়ে শেষ হয়। এছাড়াও জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এদিকে, ঝিনাইদহের বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলা ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ। এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, শনিবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আড়পাড়া গ্রামে আওয়ামী লীগ হামলা চালিয়ে যুবদল নেতা সাইদ হাসান হিরোন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা তাকিউল ইসলাম সাদ্দামের পা ভেঙে দেয়। শৈলকুপার কাঁচেরকোল গ্রামে বিএনপির পদযাত্রার ছবি তোলার সময় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত হোসেনকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। এছাড়া ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. আলামিন, ঘোড়াশাল ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক তৈয়েবুর রহমান, একই ইউনিয়নের যুবদলের সহসভাপতি উলফাত আলী, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. সোহেল রানা মশা, শৈলকুপা উপজেলা বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মো. নওয়াব আলী নওয়াব, হরিণাকুণ্ডুুর ভায়না ইউনিয়ন যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মওয়া বিশ্বাস, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. জহিরুল বিশ্বাস, কালীগঞ্জ পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম তোতা, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব মো. মিলনের বাড়ি ভাংচুর করা হয়। আর নলডাঙ্গা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম তিলামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়েছে। আর মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির পদযাত্রায় রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ৭ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

হামলা ও বাঁধার মধ্যেই চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করল বিএনপি

আপলোড টাইম : ০৮:০২:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদক:
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার সব ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। গতকাল শনিবার বিভিন্ন জায়গায় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়।
চুয়াডাঙ্গা:
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশের ন্যায় বিএনপির ১০ দফা দাবিতে চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা, জীবননগর, দামুড়হুদা, দর্শনা উপজেলার সকল ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। গতকাল শনিবার জেলার সকল ইউনিয়ন পর্যায়ে এ কর্মসূচি পালন করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এদিকে, আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নে কর্মসূচি চলাকালে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের’ হামলায় পাঁচজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চুয়াডাঙ্গার সকল ইউনিয়নে এই পদযাত্রা করা হয়। বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীরা পুলিশের বাঁধায় পদযাত্রা থামিয়ে সড়কে সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর জব্বার বাবলুর নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা এবং ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারে ১০ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম নজুর নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। দামুড়হুদা উপজেলার সকল ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ ইউনিয়নে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জীবননগর উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাজাহানের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়।
আলমডাঙ্গা উপজেলার গাংনী ইউনিয়নের জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক আবুর নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সদর থানা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপ্টনের নেতৃত্বে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলুর নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। হারদী ইউনিয়ন চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টুর নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়।


জীবননগর:
জীবননগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে গতকাল বেলা তিনটার দিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে জড় হয় নেতা-কর্মীরা। তবে পুলিশের বাঁধায় সীমান্ত ইউনিয়ন বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি পণ্ড হয়। পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। সীমান্ত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুল গনি বলেন, ‘আমরা নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে সীমান্ত ইউনিয়নের পিচমোড়ে শান্তিপূর্ণভাবে পদযাত্রা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের বাঁধায় কর্মসূচি পালন করা যায়নি।’
এদিকে শান্তিপূর্ণভাবে রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে। রায়পুর ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচিতে জীবননগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন ময়েন, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, রায়পুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান স্বপন, সীমান্ত ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল খালেক পদযাত্রা কর্মসূচিতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশ কোনো বাঁধা দেয়নি। তারা যে অভিযোগ করেছে, সেটা সঠিক না।
আন্দুলবাড়ীয়া:
কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে পদযাত্রা ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল চারটায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-কোষাধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাহমুদ হাসান খান বাবুর বাসভবনের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান খোকন, আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আতিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আজিম খানের নেতৃত্বে নিয়ে পদযাত্রাটি বের হয়। খাপাড়ার মোড়ে পৌঁছালে পদযাত্রাটি পুলিশি বাঁধার মুখে পড়ে। এসময় নেতা-কর্মীরা প্রধান সড়কে দাঁড়িয়ে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা করে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান খোকন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি মেম্বার আতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক আজিম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি মেম্বার শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, সিনিয়র সহসভাপতি বজলুর রহমান, রফু উদ্দীন, খন্দকার নাসির উদ্দীন সোহাগ মেম্বার, জহিরুল ইসলাম মেম্বার, সাবেক ইউপি মেম্বার মফিজ উদ্দীন, সানোয়ার হোসেন, নূর উদ্দীন, হোসেন আলী, আবু জাফর, রিপন খান, বাঁকা ইউপি মেম্বার আবুল বাসার, নজরুল, আজিজুল, আন্দুলবাড়ীয়া ইউনয়ন বিএনপি নেতা মোজাফফর হোসেন, আব্দুল মালেক, জেলা ছাত্রদল নেতা সাইদুর রহমান বাবু, ইউনিয়ন যুবদল নেতা, স্মরণ, জিয়া, পান্নু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাইদুর রহমান সাইদুল, পল্লব খানসহ সকল সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতা-কর্মী। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
মুজিবনগর:
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১০ দফা দাবিতে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর ও মোনাখালী ইউনিয়ন বিএনপি পদযাত্রা করেছে। গতকাল শনিবার বিকেল চারটার দিকে মোনাখালী ইউনিয়নের মোনাখালী বাজার থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুনের নেতৃত্বে পদযাত্রা বের করা হয়। পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবুল হাসান, সদস্যসচিব আনোয়ারুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আশরাফুল আলম, সদস্যসচিব জুলফিকার, ছাত্রদল সভাপতি আকিব জাভেদ সেঞ্জিরসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
ঝিনাইদহ:
বেগম খালেদা জিয়া ও কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে ঝিনাইদহে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপি। সাধুহাটি ও সাগান্না ইউনিয়ন বিএনপির পদযাত্রা ডাকবাংলা বাজার থেকে বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আব্দুর রওফ ডিগ্রি কলেজে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. এম এ মজিদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ^াস প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সরকার আজ ব্যর্থ। ফলে কোনো দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সরকার ও দলের নেতা-কর্মীরা সিন্ডিকেট বানিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। ইটভায় পোড়ানো কয়লাসহ ছোট ছোট ব্যবসায়ী খাত রাঘব বোয়ালদের হাতে ছেড়ে দিয়ে সরকার মাসোহারা নিচ্ছে। তাই আগামীতে গণতন্ত্র ও মানুষের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে সকলকে রাজপথে নেমে আসতে হবে। এদিকে, মহারাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির পদযাত্রা তেঁতুলতলা বাজার থেকে শুরু হয়ে বিষয়খালী বাজারে গিয়ে শেষ হয়। এছাড়াও জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এদিকে, ঝিনাইদহের বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলা ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ। এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, শনিবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আড়পাড়া গ্রামে আওয়ামী লীগ হামলা চালিয়ে যুবদল নেতা সাইদ হাসান হিরোন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা তাকিউল ইসলাম সাদ্দামের পা ভেঙে দেয়। শৈলকুপার কাঁচেরকোল গ্রামে বিএনপির পদযাত্রার ছবি তোলার সময় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত হোসেনকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। এছাড়া ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. আলামিন, ঘোড়াশাল ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক তৈয়েবুর রহমান, একই ইউনিয়নের যুবদলের সহসভাপতি উলফাত আলী, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. সোহেল রানা মশা, শৈলকুপা উপজেলা বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মো. নওয়াব আলী নওয়াব, হরিণাকুণ্ডুুর ভায়না ইউনিয়ন যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মওয়া বিশ্বাস, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. জহিরুল বিশ্বাস, কালীগঞ্জ পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম তোতা, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব মো. মিলনের বাড়ি ভাংচুর করা হয়। আর নলডাঙ্গা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম তিলামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়েছে। আর মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির পদযাত্রায় রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ৭ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।