ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাস্তার ধুলা মানুষের ঘরে, পানি ছিটিয়ে বাঁচার চেষ্টা!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৪৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের ব্যাপারীপাড়া শাপলা চত্বর এলাকার স্কুল শিক্ষক হুমায়ন কবীর প্রতিদিন রাস্তায় পানি ছিটান। রাস্তার ধুলা তাঁর ঘরে ঢুকে জমে থাকে আসবাবপত্রে। ধুলায় নষ্ট হচ্ছে তাঁর বাড়ির সমস্ত কিছু। শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম সড়কে বসবাস করেন স্থানীয় কাউন্সিলর শামসিল আরেফিন কায়সার। গতকাল বুধবার সকালে দেখা গেছে ধুলার যন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য তিনি নিজেই রাস্তার ওপর পানি ছিটাচ্ছেন। শুধু শিক্ষক হুমায়ন কবীর ও বা জনপ্রতিনিধি কায়সার নয়, পৌর এলাকার শত শত পরিবার ধুলার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তারা সকাল-বিকাল দু’বেলা সময় করে বাড়ি কিংবা অফিসের সামনে পানি ছিটিয়ে ধুলার যন্ত্রণা থেকে মুক্তির চেষ্টা করছেন।
মিনার নিশো নামে এক গৃহবধূ জানান, তাঁরা উপ-শহরপাড়ায় বসবাস করেন। ধুলায় তাঁদের বাড়িঘর নষ্ট হচ্ছে। ২-১ দিন পরপর ঘরে থাকা কাপড় কাচতে হয়। ধুলার যন্ত্রণায় তাঁরা অতিষ্ঠ। একই কথা জানালেন হামদহ মোল্লাপাড়ার এক ইতালি প্রবাসী। তিনিও প্রতিদিন ভাঙ্গাচোরা রাস্তার ওপর পানি ছিটিয়ে ধুলাবালির উপদ্রপ থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। ধুলার যন্ত্রণায় ওই পাড়ার বৃদ্ধ ও শিশুরা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত এক যুগেও ঝিনাইদহ পৌরসভার বেশিরভাগ রাস্তা মেরামত করা হয়নি। কোনো কোনো সড়ক মেগাডাম করে ফেলে রাখার কারণে ধুলায় মানুষ অতিষ্ঠ। কালাবাগান পাড়ার বাসিন্দা আমিনুল অভিযোগ করেন, উজির আলী স্কুল থেকে শুরু হওয়া রাস্তাটি মেগাডাম করে ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে ধুলায় ধুসর হচ্ছে ধরণী। সেই সঙ্গে আশপাশের বাড়ি ও গাছপালার রং পাল্টে যাচ্ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা ধুলার কারণে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পবহাটি, ভুটিয়ারগাতি, ব্যাপারিপাড়া, আরাপপুর জামতলাপাড়া থেকে খাজুরা, মুরারীদহ, উপ-শহরপাড়া, গোপীনাথপুর, গোয়ালবাড়িয়া কাষ্টসাগরা, বৃহত্তর আদর্শপাড়া, উপজেলা সড়ক, স্টেডিয়ামপাড়া সড়ক, আব্বাস উদ্দীন (রহ.) সড়ক ব্যাপারীপাড়া, ঢাকালেপট্টি, আবুল হোসেন সড়ক, চাকলাপাড়াসহ বেশিরভাগ সড়কের বাসিন্দা ধুলার যন্ত্রণায় বসবাস করতে কষ্ট হচ্ছে।
এদিকে, ঝিনাইদহ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মাঝেমধ্যে পানি ছিটালেও তা ‘তেলা মাথায় তেল’ দেওয়ার মতো। ভালো রাস্তায় পৌরসভা পানি ছিটালেও পাড়া-মহল্লার মধ্যে পানি ছিটানো হচ্ছে না। ফলে যারা পৌরসভায় নিয়মিত ট্যাক্স বা কর প্রদান করেন, সেই সব নাগরিকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে সচেতন নাগরিক কিমিটি (সানক) ঝিনাইদহ শাখার সভাপতি ও জেলার সিনিয়র সাংবাদিক এম. সাইফুল মাবুদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য সচেতনতায় আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষ বা অ্যাজমা রোগীদের কথা বিবেচনা করে ঝিনাইদহ পৌর কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল উদ্দীন জানান, খুব দ্রুত পৌরসভার নাগিরকরা ধুলার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি বলেন, শহরের প্রায় সব সড়ক পর্যায়ক্রমে টেন্ডার হচ্ছে। রাস্তাগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হলে নাগরিকদের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে তিনি মনে করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

রাস্তার ধুলা মানুষের ঘরে, পানি ছিটিয়ে বাঁচার চেষ্টা!

আপলোড টাইম : ০৭:৪৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের ব্যাপারীপাড়া শাপলা চত্বর এলাকার স্কুল শিক্ষক হুমায়ন কবীর প্রতিদিন রাস্তায় পানি ছিটান। রাস্তার ধুলা তাঁর ঘরে ঢুকে জমে থাকে আসবাবপত্রে। ধুলায় নষ্ট হচ্ছে তাঁর বাড়ির সমস্ত কিছু। শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম সড়কে বসবাস করেন স্থানীয় কাউন্সিলর শামসিল আরেফিন কায়সার। গতকাল বুধবার সকালে দেখা গেছে ধুলার যন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য তিনি নিজেই রাস্তার ওপর পানি ছিটাচ্ছেন। শুধু শিক্ষক হুমায়ন কবীর ও বা জনপ্রতিনিধি কায়সার নয়, পৌর এলাকার শত শত পরিবার ধুলার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তারা সকাল-বিকাল দু’বেলা সময় করে বাড়ি কিংবা অফিসের সামনে পানি ছিটিয়ে ধুলার যন্ত্রণা থেকে মুক্তির চেষ্টা করছেন।
মিনার নিশো নামে এক গৃহবধূ জানান, তাঁরা উপ-শহরপাড়ায় বসবাস করেন। ধুলায় তাঁদের বাড়িঘর নষ্ট হচ্ছে। ২-১ দিন পরপর ঘরে থাকা কাপড় কাচতে হয়। ধুলার যন্ত্রণায় তাঁরা অতিষ্ঠ। একই কথা জানালেন হামদহ মোল্লাপাড়ার এক ইতালি প্রবাসী। তিনিও প্রতিদিন ভাঙ্গাচোরা রাস্তার ওপর পানি ছিটিয়ে ধুলাবালির উপদ্রপ থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। ধুলার যন্ত্রণায় ওই পাড়ার বৃদ্ধ ও শিশুরা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত এক যুগেও ঝিনাইদহ পৌরসভার বেশিরভাগ রাস্তা মেরামত করা হয়নি। কোনো কোনো সড়ক মেগাডাম করে ফেলে রাখার কারণে ধুলায় মানুষ অতিষ্ঠ। কালাবাগান পাড়ার বাসিন্দা আমিনুল অভিযোগ করেন, উজির আলী স্কুল থেকে শুরু হওয়া রাস্তাটি মেগাডাম করে ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে ধুলায় ধুসর হচ্ছে ধরণী। সেই সঙ্গে আশপাশের বাড়ি ও গাছপালার রং পাল্টে যাচ্ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা ধুলার কারণে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পবহাটি, ভুটিয়ারগাতি, ব্যাপারিপাড়া, আরাপপুর জামতলাপাড়া থেকে খাজুরা, মুরারীদহ, উপ-শহরপাড়া, গোপীনাথপুর, গোয়ালবাড়িয়া কাষ্টসাগরা, বৃহত্তর আদর্শপাড়া, উপজেলা সড়ক, স্টেডিয়ামপাড়া সড়ক, আব্বাস উদ্দীন (রহ.) সড়ক ব্যাপারীপাড়া, ঢাকালেপট্টি, আবুল হোসেন সড়ক, চাকলাপাড়াসহ বেশিরভাগ সড়কের বাসিন্দা ধুলার যন্ত্রণায় বসবাস করতে কষ্ট হচ্ছে।
এদিকে, ঝিনাইদহ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মাঝেমধ্যে পানি ছিটালেও তা ‘তেলা মাথায় তেল’ দেওয়ার মতো। ভালো রাস্তায় পৌরসভা পানি ছিটালেও পাড়া-মহল্লার মধ্যে পানি ছিটানো হচ্ছে না। ফলে যারা পৌরসভায় নিয়মিত ট্যাক্স বা কর প্রদান করেন, সেই সব নাগরিকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে সচেতন নাগরিক কিমিটি (সানক) ঝিনাইদহ শাখার সভাপতি ও জেলার সিনিয়র সাংবাদিক এম. সাইফুল মাবুদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য সচেতনতায় আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষ বা অ্যাজমা রোগীদের কথা বিবেচনা করে ঝিনাইদহ পৌর কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল উদ্দীন জানান, খুব দ্রুত পৌরসভার নাগিরকরা ধুলার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি বলেন, শহরের প্রায় সব সড়ক পর্যায়ক্রমে টেন্ডার হচ্ছে। রাস্তাগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হলে নাগরিকদের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে তিনি মনে করেন।