ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জ অগ্রণী ব্যাংকের সেই ক্যাশ অফিসার সালাম চাকরিচ্যুত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:১৯:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ অগ্রণী ব্যাংকের সাময়িক বরখাস্তকৃত ক্যাশ অফিসার আব্দুস সালামকে চূড়ান্তভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গতকাল রোববার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ অগ্রণী ব্যাংকের হেড অফিস থেকে কালীগঞ্জ শাখায় পৌছেছে। ‘চাকরী হতে বরখাস্ত’ গুরুদণ্ড আরোপ শিরোনামে অগ্রণী ব্যংকের হেড অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক সুস্মিতা মন্ডল সাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জারিকৃত অভিযোগপত্র, অভিযোগপত্রের জবাব, শুনানির বক্তব্য, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন ও তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে কমিটি নিম্নোক্ত সুপারিশ করেন। যা অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও গত ২৫ জানুয়ারি অনুমোদন করেন। ফলে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড কর্মচারী চাকরি প্রবিধানমালা ২০০৮ এর অনুচ্ছেদ ৪৩(১)(খ)(৪) মোতাবেক আপনাকে চাকরি হতে বরখাস্তকরণ গুরুদণ্ড আরোপ করা হয়।
আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- অনিয়ম, ভুয়া, কৃষি ঋণ মঞ্জুরি ও বিতরণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। মৃত ব্যক্তিদের নামে ভুয়া কৃষি ঋণ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ। বিদেশে অবস্থানরত অবস্থায় প্রবাসী ব্যক্তিদের নামে ভুয়া কৃষি সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ। ভুয়া এনআইডি ব্যবহার করে কৃষি ঋণ বিতরণ। ভুয়া ও জাল মাঠ পর্চা/খতিয়ান তৈরি করে চাষযোগ্য জমি দেখিয়ে ভূমিহীনদের কৃষি ঋণ প্রদান। কমান্ডিং এরিয়ার বাইরে কৃষি ঋণ বিতরণ। পল্লী ঋণ বিতরণে সরাসরি জিএল কোড ব্যবহার। স্বল্প মেয়াদী এসএমই ঋণ বিতরণে অনিয়ম। দীর্ঘদিন গ্রামে/এলাকায় বসবাস না করা ব্যক্তিদের নামে ভুয়া কৃষি ঋণ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ। স্বাক্ষর/টিপসহি জাল করে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কৃষি ঋণ সৃষ্টি করে অর্থ আত্মসাৎ। মঞ্জরিকৃত ঋণের চেয়ে গ্রাহককে কম টাকা প্রদান করে অবশিষ্ট অর্থ আত্মসাৎ। আবাদি জমির প্রমাণক গ্রহণ না করে ঋণ বিতরণ ও শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার, নিরীক্ষা কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, অভিযোগসমূহে মোট জড়িত টাকা ২৬.৭৫ লাখ।
জানা যায়, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে কালীগঞ্জ অগ্রণী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির খবর পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হলে সাময়িকভাবে ম্যানেজার শৈলেন কুমার বিশ্বাস ও ক্যাশ অফিসার আব্দুস সালামসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ে থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কালীগঞ্জের কয়েকজন গ্রাহক দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহের আদালতে চারটি মামলা করেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোঠায় ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর কালীগঞ্জ শাখায় অফিসার ক্যাশ পদে যোগ দেন হরিণাকুণ্ডুু উপজেলার ভেড়াখালী গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে আবদুস সালাম। তিনি প্রথম বিদ্যুৎ বিল ও ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঋণ শাখায় যোগদান করেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্রধারী হিসেবে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ রাজশাহী জেলার মতিহার থানায় একটি মামলা বিচারাধীন আছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

কালীগঞ্জ অগ্রণী ব্যাংকের সেই ক্যাশ অফিসার সালাম চাকরিচ্যুত

আপলোড টাইম : ০৭:১৯:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ অগ্রণী ব্যাংকের সাময়িক বরখাস্তকৃত ক্যাশ অফিসার আব্দুস সালামকে চূড়ান্তভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গতকাল রোববার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ অগ্রণী ব্যাংকের হেড অফিস থেকে কালীগঞ্জ শাখায় পৌছেছে। ‘চাকরী হতে বরখাস্ত’ গুরুদণ্ড আরোপ শিরোনামে অগ্রণী ব্যংকের হেড অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক সুস্মিতা মন্ডল সাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জারিকৃত অভিযোগপত্র, অভিযোগপত্রের জবাব, শুনানির বক্তব্য, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন ও তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে কমিটি নিম্নোক্ত সুপারিশ করেন। যা অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও গত ২৫ জানুয়ারি অনুমোদন করেন। ফলে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড কর্মচারী চাকরি প্রবিধানমালা ২০০৮ এর অনুচ্ছেদ ৪৩(১)(খ)(৪) মোতাবেক আপনাকে চাকরি হতে বরখাস্তকরণ গুরুদণ্ড আরোপ করা হয়।
আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- অনিয়ম, ভুয়া, কৃষি ঋণ মঞ্জুরি ও বিতরণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। মৃত ব্যক্তিদের নামে ভুয়া কৃষি ঋণ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ। বিদেশে অবস্থানরত অবস্থায় প্রবাসী ব্যক্তিদের নামে ভুয়া কৃষি সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ। ভুয়া এনআইডি ব্যবহার করে কৃষি ঋণ বিতরণ। ভুয়া ও জাল মাঠ পর্চা/খতিয়ান তৈরি করে চাষযোগ্য জমি দেখিয়ে ভূমিহীনদের কৃষি ঋণ প্রদান। কমান্ডিং এরিয়ার বাইরে কৃষি ঋণ বিতরণ। পল্লী ঋণ বিতরণে সরাসরি জিএল কোড ব্যবহার। স্বল্প মেয়াদী এসএমই ঋণ বিতরণে অনিয়ম। দীর্ঘদিন গ্রামে/এলাকায় বসবাস না করা ব্যক্তিদের নামে ভুয়া কৃষি ঋণ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ। স্বাক্ষর/টিপসহি জাল করে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কৃষি ঋণ সৃষ্টি করে অর্থ আত্মসাৎ। মঞ্জরিকৃত ঋণের চেয়ে গ্রাহককে কম টাকা প্রদান করে অবশিষ্ট অর্থ আত্মসাৎ। আবাদি জমির প্রমাণক গ্রহণ না করে ঋণ বিতরণ ও শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার, নিরীক্ষা কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, অভিযোগসমূহে মোট জড়িত টাকা ২৬.৭৫ লাখ।
জানা যায়, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে কালীগঞ্জ অগ্রণী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির খবর পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হলে সাময়িকভাবে ম্যানেজার শৈলেন কুমার বিশ্বাস ও ক্যাশ অফিসার আব্দুস সালামসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ে থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কালীগঞ্জের কয়েকজন গ্রাহক দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহের আদালতে চারটি মামলা করেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোঠায় ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর কালীগঞ্জ শাখায় অফিসার ক্যাশ পদে যোগ দেন হরিণাকুণ্ডুু উপজেলার ভেড়াখালী গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে আবদুস সালাম। তিনি প্রথম বিদ্যুৎ বিল ও ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঋণ শাখায় যোগদান করেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্রধারী হিসেবে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ রাজশাহী জেলার মতিহার থানায় একটি মামলা বিচারাধীন আছে।