ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুজিবনগরে জমি দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষে আহত ৬

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:২০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৩৪ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, মুজিবনগর:
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস ও জয়পুর গ্রামে জমির দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৬ জন আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে আনন্দবাস গ্রামের আলতাচরা বন্দের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পরে পরিবারের সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়।

আহতরা হলেন- আনন্দবাস গ্রামের মৃত আহমেদ আলীর ছেলে আলাউদ্দীন এবং ত্বক্কেল খাঁর দুই ছেলে মুনতাজ আলী ও হায়দার আলী, জয়পুর গ্রামের মৃত কদম আলীর ছেলে আনছার আলী, একই এলাকার মৃত মিরাজ আলীর ছেলে আক্কাস আলী ও মৃত দিদার বক্সের ছেলে নোয়াজ্জেম।

আনন্দবাস গ্রামের আলাউদ্দিন বলেন, ‘১৯৮২ সালে আবু বক্কর খা, তোয়াক্কেল আলী খা এবং নাজিমুদ্দীন খা জয়পুর গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের নিকট থেকে রেকর্ড মূলে ৪০ শতক জমি ক্রয় করি। সেই থেকে ওই জমিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করে আসছি। মেহেরপুর কোর্টে এ বিষয়ে মামলা আছে। গত কয়েকদিন আগে জয়পুর এবতেদায়ি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ওই জমি মাদ্রাসার বলে দাবি করে তার জোরপূর্বক দখল করে।

এ ঘটনায় আমরা মুজিবনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। রবিবার বিকেলে থানায় এ বিষয়ে দুই পক্ষের মীমাংসার জন্য বসা হয়, কিন্তু সঠিক মীমাংসা না হওয়ায় চলে আসি। এরই মধ্যে আজ (গতকাল সোমবার) আমরা জমিতে ধান রোপনের জন্য চাষ করছিলাম, বিকেলের দিকে মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ ৩০/৪০ জন লোক বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে নিয়ে জমি দখলের জন্য আসে। আমরা জমি দখল দিতে না চাইলে তারা আমাকে মারধর শুরু করে। আমিসহ বেশ কয়েকজন তাদের আঘাতে আহত হয়। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা আমাদের উদ্ধার করে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।

এদিকে, জয়পুর ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুস সামাদ বলেন, জমির কাগজপত্র খাজনা খারিজ সবই মাদ্রাসার নামে কিন্তু জমি চাষ করতে গেলে অপরপক্ষ জোর পূর্বক জমি চাষ করতে বাঁধা দেয়। গত কয়েকদিন আগে জমির দখল নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছিল এত উভয় পক্ষ মুজিবনগর থানায় একটি অভিযোগ করেছি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার বিকেলে উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে মিমংশার চেষ্টা করে থানা পুলিশ। আমরা আমাদের সমস্ত কাগজপত্র দেখায় কিন্তু তারা একটি দলিল ছাড়া কিছুই দেখাতে পারেনি। কাগজপত্র না দেখাতে পারার কারণে সেখানে প্রতীয়মান হয় যে জমিটা আসলেই মাদ্রাসার। তখন থানা পুলিশ ওই জমি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বল্লে তারা মিমাংশা না মেনে চলে যায়। গতকাল বিকেলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষসহ গ্রামবাসী জমিতে ধান লাগানোর জন্য গেলে অপরপক্ষ লাঠি সোটা ও ধারালে অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপরে হামলা করে। এ সময় আমাদের পাঁচ জন আহত হয়।

এ বিষয়ে মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ইনচার্জ) মেহেদী রাসেল জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে এই বিষয়ের উপর থানায় মিমাংশার জন্য বসাও হয়েছিলো কিন্তু উভয় পক্ষ কোন সমঝোতায় না আসায় এবং কোর্টে এ বিষয়ে মামলা চলমান থাকায দুই পক্ষকে মামলার রায় না পর্যন্ত দখলদারী করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য কলা হয়। এর পরেও দখল নিয়ে দুই পক্ষ বিবাদ করেছে বলে জেনেছি। তবে কোনো অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মুজিবনগরে জমি দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষে আহত ৬

আপলোড টাইম : ১২:২০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৩

প্রতিবেদক, মুজিবনগর:
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস ও জয়পুর গ্রামে জমির দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৬ জন আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে আনন্দবাস গ্রামের আলতাচরা বন্দের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পরে পরিবারের সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়।

আহতরা হলেন- আনন্দবাস গ্রামের মৃত আহমেদ আলীর ছেলে আলাউদ্দীন এবং ত্বক্কেল খাঁর দুই ছেলে মুনতাজ আলী ও হায়দার আলী, জয়পুর গ্রামের মৃত কদম আলীর ছেলে আনছার আলী, একই এলাকার মৃত মিরাজ আলীর ছেলে আক্কাস আলী ও মৃত দিদার বক্সের ছেলে নোয়াজ্জেম।

আনন্দবাস গ্রামের আলাউদ্দিন বলেন, ‘১৯৮২ সালে আবু বক্কর খা, তোয়াক্কেল আলী খা এবং নাজিমুদ্দীন খা জয়পুর গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের নিকট থেকে রেকর্ড মূলে ৪০ শতক জমি ক্রয় করি। সেই থেকে ওই জমিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করে আসছি। মেহেরপুর কোর্টে এ বিষয়ে মামলা আছে। গত কয়েকদিন আগে জয়পুর এবতেদায়ি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ওই জমি মাদ্রাসার বলে দাবি করে তার জোরপূর্বক দখল করে।

এ ঘটনায় আমরা মুজিবনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। রবিবার বিকেলে থানায় এ বিষয়ে দুই পক্ষের মীমাংসার জন্য বসা হয়, কিন্তু সঠিক মীমাংসা না হওয়ায় চলে আসি। এরই মধ্যে আজ (গতকাল সোমবার) আমরা জমিতে ধান রোপনের জন্য চাষ করছিলাম, বিকেলের দিকে মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ ৩০/৪০ জন লোক বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে নিয়ে জমি দখলের জন্য আসে। আমরা জমি দখল দিতে না চাইলে তারা আমাকে মারধর শুরু করে। আমিসহ বেশ কয়েকজন তাদের আঘাতে আহত হয়। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা আমাদের উদ্ধার করে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।

এদিকে, জয়পুর ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুস সামাদ বলেন, জমির কাগজপত্র খাজনা খারিজ সবই মাদ্রাসার নামে কিন্তু জমি চাষ করতে গেলে অপরপক্ষ জোর পূর্বক জমি চাষ করতে বাঁধা দেয়। গত কয়েকদিন আগে জমির দখল নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছিল এত উভয় পক্ষ মুজিবনগর থানায় একটি অভিযোগ করেছি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার বিকেলে উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে মিমংশার চেষ্টা করে থানা পুলিশ। আমরা আমাদের সমস্ত কাগজপত্র দেখায় কিন্তু তারা একটি দলিল ছাড়া কিছুই দেখাতে পারেনি। কাগজপত্র না দেখাতে পারার কারণে সেখানে প্রতীয়মান হয় যে জমিটা আসলেই মাদ্রাসার। তখন থানা পুলিশ ওই জমি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বল্লে তারা মিমাংশা না মেনে চলে যায়। গতকাল বিকেলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষসহ গ্রামবাসী জমিতে ধান লাগানোর জন্য গেলে অপরপক্ষ লাঠি সোটা ও ধারালে অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপরে হামলা করে। এ সময় আমাদের পাঁচ জন আহত হয়।

এ বিষয়ে মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ইনচার্জ) মেহেদী রাসেল জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে এই বিষয়ের উপর থানায় মিমাংশার জন্য বসাও হয়েছিলো কিন্তু উভয় পক্ষ কোন সমঝোতায় না আসায় এবং কোর্টে এ বিষয়ে মামলা চলমান থাকায দুই পক্ষকে মামলার রায় না পর্যন্ত দখলদারী করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য কলা হয়। এর পরেও দখল নিয়ে দুই পক্ষ বিবাদ করেছে বলে জেনেছি। তবে কোনো অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।