ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেটে ব্যথা নিয়ে ক্লিনিকে ভর্তি, তিনটি ইঞ্জেকশন দেয়ার পরেই শিশুর মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:০২:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহে অপচিকিৎসায় ইসরাত জাহান মাহেরা নামে এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ক্লিনিক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ ক্লিনিক মালিক আবু সাঈদ মুন্সী ও কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আটক করেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারায়নপুর ত্রিমোহনী এলাকায় ইসলামী প্রাইভেট হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু মাহেরা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাদপুকুরিয়া গ্রামের পিণ্টু মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনার পরেই গা-ঢাকা দিয়েছেন ক্লিনিকটির নার্সসহ স্টাফরা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে পেটে ব্যথা নিয়ে ইসরাত জাহান মাহেরা নামের ছয় বছরের এক শিশু ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ভর্তির পরে চিকিৎসকের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র মোতাবেক শিশুটির শরীরে পরপর তিনটি ইঞ্জেকশন পুশ করেন নার্সরা। শিশুটি সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে সন্ধ্যা নাগাদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় শিশুটির মুমূর্ষু অবস্থা দেখে মা শামীমা আক্তার ডিউটিরত কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনের শরণাপণ্ন হন। এসময় ওই চিকিৎসক শিশুটিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। রাত আটটার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয়।

এদিকে, অপচিকিৎসায় শিশু মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা ক্লিনিকে ঢুকে ডাক্তারের চেম্বার, অপারেশন থিয়েটার ও প্যাথলজিক্যাল কক্ষসহ আসবাবপত্র তছনছ করে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ক্লিনিক মালিক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ মুন্সী ও কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, অপচিকিৎসার কারণে ইতঃপূর্বে ওই ক্লিনিকটি একাধিকবার সিলগালা করে দেয় প্রশাসন। ক্লিনিকে সর্বক্ষণ কোনো চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্স ছাড়াই চলে আসছে বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন সুপ্রা রানী দেবনাথ জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

ঝিনাইদহের ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা মোল্লা তৌহিদুর রহমান বলেন, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় অপচিকিৎসার অভিযোগে স্থানীয় একটি ক্লিনিক ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ক্লিনিক মালিক ও কথিত এক চিকিৎসককে থানায় আনা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

পেটে ব্যথা নিয়ে ক্লিনিকে ভর্তি, তিনটি ইঞ্জেকশন দেয়ার পরেই শিশুর মৃত্যু

আপলোড টাইম : ০৪:০২:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহে অপচিকিৎসায় ইসরাত জাহান মাহেরা নামে এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ক্লিনিক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ ক্লিনিক মালিক আবু সাঈদ মুন্সী ও কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আটক করেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারায়নপুর ত্রিমোহনী এলাকায় ইসলামী প্রাইভেট হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু মাহেরা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাদপুকুরিয়া গ্রামের পিণ্টু মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনার পরেই গা-ঢাকা দিয়েছেন ক্লিনিকটির নার্সসহ স্টাফরা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে পেটে ব্যথা নিয়ে ইসরাত জাহান মাহেরা নামের ছয় বছরের এক শিশু ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ভর্তির পরে চিকিৎসকের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র মোতাবেক শিশুটির শরীরে পরপর তিনটি ইঞ্জেকশন পুশ করেন নার্সরা। শিশুটি সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে সন্ধ্যা নাগাদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় শিশুটির মুমূর্ষু অবস্থা দেখে মা শামীমা আক্তার ডিউটিরত কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনের শরণাপণ্ন হন। এসময় ওই চিকিৎসক শিশুটিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। রাত আটটার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয়।

এদিকে, অপচিকিৎসায় শিশু মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা ক্লিনিকে ঢুকে ডাক্তারের চেম্বার, অপারেশন থিয়েটার ও প্যাথলজিক্যাল কক্ষসহ আসবাবপত্র তছনছ করে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ক্লিনিক মালিক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ মুন্সী ও কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, অপচিকিৎসার কারণে ইতঃপূর্বে ওই ক্লিনিকটি একাধিকবার সিলগালা করে দেয় প্রশাসন। ক্লিনিকে সর্বক্ষণ কোনো চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্স ছাড়াই চলে আসছে বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন সুপ্রা রানী দেবনাথ জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

ঝিনাইদহের ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা মোল্লা তৌহিদুর রহমান বলেন, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় অপচিকিৎসার অভিযোগে স্থানীয় একটি ক্লিনিক ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ক্লিনিক মালিক ও কথিত এক চিকিৎসককে থানায় আনা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।