ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক ওড়নায় নবদম্পতির আত্মহত্যা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:৫৫:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস: নববধূর হাতে মেহেদীর আল্পনা। নতুন বিয়ের স্পষ্ট চিহ্ন বহমান। লাভ চিহ্ন দিয়ে তার মধ্যে লেখা ‘এম+আর’। এরপর লিখেছেন ‘আমি মুক্তা+রুজিব, আমরা চলে যাচ্ছি, বাড়ির দোষ’। নববধূর হাতে এভাবে ক্ষোভ ও অভিমানের কথা লিখে এক ওড়নায় আত্মহত্যা করেছে নবদম্পতি। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের হাটবাকুয়া গ্রামের মাঠে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে হাটবাকুয়া গ্রামের রাজমিস্ত্রি সাইফুল ইসলাম ধানের জমিতে পানি দিতে গিয়ে দেখেন খ্যাড়ের দাইড় নামক স্থানে দুটি লাশ। স্বামী রুজিব শেখের লাশ গাছে ঝুললেও স্ক্রী মুক্তা খাতুনের লাশ ওড়না ছিড়ে মাটিতে পড়ে আছে। পেশায় গ্যারেজ মিস্ত্রি রুজিব শেখ (১৯) ঝিনাইদহ সদর উপজেলার তালতলা হরিপুর গ্রামের তনু শেখের ছেলে। তার স্ত্রী মুক্তা খাতুন (১৭) হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের গোলাম হোসেনের মেয়ে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রিনা খাতুন জানান, ‘দুই মাস আগে প্রেম করে বিয়ে করেন মুক্তা ও রুজিব শেখ। এই বিয়ে উভয় পরিবার প্রথমে মেনে নিলেও মুক্তা খাতুন বাপের বাড়ি গেলে তাকে আর স্বামীর বাড়িতে পাঠাতে চান না তার মা। রুজিব দরিদ্র ও ঘরবাড়ি জীর্ণদশা বলে মেয়ের মা এমন কাণ্ড করেন বলে শুনেছি।’ প্রতিবেশী রিমন হোসেন জানান, ‘ভালোবেসে বিয়ে করে মুক্তা ও রুবিজ শেখ আজীবন এক সঙ্গে থাকতে চেয়েছিল, কিন্তু তা আর হলো না। তাদের ইস্পাত কঠিন ভালোবাসার মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মেয়ের পরিবার। তাদেরকে আলাদা করতে চেয়েছিল।’

রুজিব শেখের বড় ভাই রবিউল ইসলাম রুবেল জানান, ‘বুধবার রাতে আমরা এক সঙ্গে খাবার খেয়ে অনেকক্ষণ গল্প করেছি। তখন তারা যে এক সঙ্গে আত্মহত্যা করবে মনে হয়নি।’ তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার মুক্তা খাতুন বাপের বাড়ি যাওয়ার কথা শুনে হয়ত তারা এক সঙ্গে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। সকালে শুনি একটি মেহগনি বাগানে তাদের লাশ ঝুলছে।

নবদম্পতির মৃত্যুর বিষয় নিয়ে ঝিনাইদহের নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বিল্লাল হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা আত্মহত্যা করেছে। মেয়ে ও ছেলের শরীরে লেখা কথাগুলো ক্ষোভ ও অভিমানে লিখেছে বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

এক ওড়নায় নবদম্পতির আত্মহত্যা

আপলোড টাইম : ০৩:৫৫:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২

ঝিনাইদহ অফিস: নববধূর হাতে মেহেদীর আল্পনা। নতুন বিয়ের স্পষ্ট চিহ্ন বহমান। লাভ চিহ্ন দিয়ে তার মধ্যে লেখা ‘এম+আর’। এরপর লিখেছেন ‘আমি মুক্তা+রুজিব, আমরা চলে যাচ্ছি, বাড়ির দোষ’। নববধূর হাতে এভাবে ক্ষোভ ও অভিমানের কথা লিখে এক ওড়নায় আত্মহত্যা করেছে নবদম্পতি। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের হাটবাকুয়া গ্রামের মাঠে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে হাটবাকুয়া গ্রামের রাজমিস্ত্রি সাইফুল ইসলাম ধানের জমিতে পানি দিতে গিয়ে দেখেন খ্যাড়ের দাইড় নামক স্থানে দুটি লাশ। স্বামী রুজিব শেখের লাশ গাছে ঝুললেও স্ক্রী মুক্তা খাতুনের লাশ ওড়না ছিড়ে মাটিতে পড়ে আছে। পেশায় গ্যারেজ মিস্ত্রি রুজিব শেখ (১৯) ঝিনাইদহ সদর উপজেলার তালতলা হরিপুর গ্রামের তনু শেখের ছেলে। তার স্ত্রী মুক্তা খাতুন (১৭) হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের গোলাম হোসেনের মেয়ে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রিনা খাতুন জানান, ‘দুই মাস আগে প্রেম করে বিয়ে করেন মুক্তা ও রুজিব শেখ। এই বিয়ে উভয় পরিবার প্রথমে মেনে নিলেও মুক্তা খাতুন বাপের বাড়ি গেলে তাকে আর স্বামীর বাড়িতে পাঠাতে চান না তার মা। রুজিব দরিদ্র ও ঘরবাড়ি জীর্ণদশা বলে মেয়ের মা এমন কাণ্ড করেন বলে শুনেছি।’ প্রতিবেশী রিমন হোসেন জানান, ‘ভালোবেসে বিয়ে করে মুক্তা ও রুবিজ শেখ আজীবন এক সঙ্গে থাকতে চেয়েছিল, কিন্তু তা আর হলো না। তাদের ইস্পাত কঠিন ভালোবাসার মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মেয়ের পরিবার। তাদেরকে আলাদা করতে চেয়েছিল।’

রুজিব শেখের বড় ভাই রবিউল ইসলাম রুবেল জানান, ‘বুধবার রাতে আমরা এক সঙ্গে খাবার খেয়ে অনেকক্ষণ গল্প করেছি। তখন তারা যে এক সঙ্গে আত্মহত্যা করবে মনে হয়নি।’ তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার মুক্তা খাতুন বাপের বাড়ি যাওয়ার কথা শুনে হয়ত তারা এক সঙ্গে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। সকালে শুনি একটি মেহগনি বাগানে তাদের লাশ ঝুলছে।

নবদম্পতির মৃত্যুর বিষয় নিয়ে ঝিনাইদহের নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বিল্লাল হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা আত্মহত্যা করেছে। মেয়ে ও ছেলের শরীরে লেখা কথাগুলো ক্ষোভ ও অভিমানে লিখেছে বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।