সমীকরণ প্রতিবেদন:
মেহেরপুরের গাংনীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানরত ১২ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করেছে বখাটেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী-২০২২ এর বিদায় অনুষ্ঠানে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মোস্তাক, সাব্বির, নাহিদ, শিশির, সায়েম, সাজিদ, মাহফুজ, আনোন, ইলমান, তানভীর, ফরহাদ,ও মুন্নি। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি মাসুম আহমেদ।

আহত শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ জানান, ‘আমাদের ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান চলছিল। এমন সময় স্থানীয় বহিরাগত বখাটে ছেলেরা আমাদের বান্ধবীদের উত্ত্যাক্ত করছিল। আমরা বন্ধুরা মিলে তার প্রতিবাদ করি। আমাদের অনুষ্ঠান শেষে হঠাৎ রড, বাঁশের লাঠি, কাঠের বাটাম হাতে করে ২০-২৫ জন বখাটে এসে প্রথমে আমাকে মারধর শুরু করে। পরে আমার আরও বন্ধুরা এগিয়ে আসলে পর্যায়ক্রমে ১২ জনকে মেরে জখম করে। হামলা শেষে তারা মোটরসাইকেলযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসে।’

আহত আরেক শিক্ষার্থী শিশির আহমেদ বলেন, ‘যারা আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। তাদের হাতে রড, স্টিলের পাইপ, কাঠের বাটাম ছিল। তাদের অতর্কিত আক্রমণের ফলে আমাদের বন্ধুদের দুটি মোবাইল ফোন, দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা, মোবাইল স্ট্যান্ড, ১০টি বেঞ্চ, ২০টি চেয়ার ও টেবিল ভাঙচুর করে। আমরা আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠান করছিলাম। অথচ সেখানেই আমাদের ওপর হামলা করা হলো। তাহলে আমরা নিরাপদ কোথায়? আমরা এর বিচার চাই। সুষ্ঠু বিচার না হলে আমরা মানববন্ধন করব।’

আহত আরেক পরীক্ষার্থী মুন্নি আক্তার জানান, ‘আমাদের বিদায় অনুষ্ঠান শেষে বন্ধু-বান্ধবী মিলে আমাদের বিদ্যালয়ের ৪র্থ তালায় হলঘরে মতবিনিময় করছিলাম। এমন সময় ঘরের বাইরে থেকে বেশকিছু ছেলে আমাদের বান্ধবীদের বাজে টোন করছিল। আমাদের বন্ধুরা এর প্রতিবাদ করতে গেলে ২০-২৫ ছেলে এসে আমাদের ওপর হামলা করে।’

এ বিষয়ে বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘আমি এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সাথে কয়েকজন বহিরাগত ছেলেদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। আমি তাদের ডেকে ঠিক করে বাসায় চলে আসার পরে ঘটনাটি ঘটেছে। আমি এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি মাসুম আহমেদ জানান, ‘বিদ্যালয়ের-২০২২ এইচএসসি ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠান শেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি দিয়ে শিক্ষকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ত্যাগ করে চলে যাওয়ার পরে বেশকিছু বহিরাগত বখাটে ছেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা চালিয়ে তাদের জখম করেছে। আমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি হামলাকারী বখাটেদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।