ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের মহামায়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের মান খারাপ এবং নির্মাণকাজেও করা হয়েছে অনিয়ম, এমন অভিযোগ সচেতন এলাকাবাসীর। নিয়মানুযায়ী কার্যস্থলে নির্মাণকাজের বিবরণ সম্বলিত সাইন বোর্ড দৃশ্যমান থাকার কথা থাকলেও তা টাঙানো হয়নি। ফলে এই কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, নিম্নমানের ইট, খোয়া ও মরিচা ধরা রড দিয়ে নির্মাণকাজ চলছে। স্কুলের অভ্যন্তরীণ ওয়াল নির্মাণ এবং ছাদ ঢালাই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে দুই-তিন নম্বর ও নম্বরবিহীন নিম্নমানের ইট এবং ইটের খোয়া। পা দিয়ে একটু জোরে চাপ দিলেই গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে ইটগুলো। গত সোমবার বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীরা উপজেলা ইঞ্জিয়ারকে জানালে তিনি কাজ বন্ধ করে দেন। তবে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে থেকে চলে গেলে আবারও কাজ শুরু করে ছাদ ঢালাই সম্পন্ন করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল মালেক।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা আর নীরব ভূমিকার কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নোংরা, নিম্নমান ও নম্বরবিহীন এসব ইট ব্যবহার করে তাদের ইচ্ছামতো কাজ করে যাচ্ছেন। নির্মাণকাজ তদারকির জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-প্রকৌশলীকে সেখানে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, সিডিউলে উন্নতমানের ইট, পাথর ও রড, সিমেন্ট দিয়ে কাজ করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষা অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির সাথে আঁতাত করে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিম্নমানের ইট, পাথর, সমদূরত্বের রড না দেয়া এবং পরিমাণে কম সিমেন্ট ও অতিরিক্ত পরিমাণে বালি ব্যবহার করে নামমাত্র নির্মাণকাজ করছে। কাজে অনিয়ম হলেও দেখার কেউ নেই।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা আব্দুল মালেক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম জানাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। কাজের শিডিউল দেখতে চাইলে তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, সন্ধ্যায় অফিসে দেখা করেন। মহামায়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আশরাফ রিপনের কাছে স্কুল ভবন নির্মাণকাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজের গুণগত মান তেমন খারাপ ছিল না, মনে করেন যে খোয়াটার মান একটু খারাপ ছিল। পরে ইঞ্জিয়ারের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, ১ কোটি ৩ লাখের বরাদ্দ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মুগ্ধ বিল্ডার্স’ কাজটি করছেন। কাজের মান ভালো, তবে প্রথমে কিছুটা অনিয়ম ছিল। তাছাড়া তেমন কোনো অমিয়ম হয়নি। ওখানে দুটি গ্রুপ আছে, যার কারণেই সমস্যা। গণমাধ্যমকর্মীরা কাজের অনিয়মের ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশল অফিসে ফোন করলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের ফোন পেয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পরে মেটেরিয়ালস-এর কোয়ালিটি দেখে বিভিন্ন শর্তে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৮:৫৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২

প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের মহামায়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের মান খারাপ এবং নির্মাণকাজেও করা হয়েছে অনিয়ম, এমন অভিযোগ সচেতন এলাকাবাসীর। নিয়মানুযায়ী কার্যস্থলে নির্মাণকাজের বিবরণ সম্বলিত সাইন বোর্ড দৃশ্যমান থাকার কথা থাকলেও তা টাঙানো হয়নি। ফলে এই কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, নিম্নমানের ইট, খোয়া ও মরিচা ধরা রড দিয়ে নির্মাণকাজ চলছে। স্কুলের অভ্যন্তরীণ ওয়াল নির্মাণ এবং ছাদ ঢালাই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে দুই-তিন নম্বর ও নম্বরবিহীন নিম্নমানের ইট এবং ইটের খোয়া। পা দিয়ে একটু জোরে চাপ দিলেই গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে ইটগুলো। গত সোমবার বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীরা উপজেলা ইঞ্জিয়ারকে জানালে তিনি কাজ বন্ধ করে দেন। তবে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে থেকে চলে গেলে আবারও কাজ শুরু করে ছাদ ঢালাই সম্পন্ন করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল মালেক।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা আর নীরব ভূমিকার কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নোংরা, নিম্নমান ও নম্বরবিহীন এসব ইট ব্যবহার করে তাদের ইচ্ছামতো কাজ করে যাচ্ছেন। নির্মাণকাজ তদারকির জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-প্রকৌশলীকে সেখানে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, সিডিউলে উন্নতমানের ইট, পাথর ও রড, সিমেন্ট দিয়ে কাজ করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষা অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির সাথে আঁতাত করে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিম্নমানের ইট, পাথর, সমদূরত্বের রড না দেয়া এবং পরিমাণে কম সিমেন্ট ও অতিরিক্ত পরিমাণে বালি ব্যবহার করে নামমাত্র নির্মাণকাজ করছে। কাজে অনিয়ম হলেও দেখার কেউ নেই।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা আব্দুল মালেক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম জানাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। কাজের শিডিউল দেখতে চাইলে তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, সন্ধ্যায় অফিসে দেখা করেন। মহামায়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আশরাফ রিপনের কাছে স্কুল ভবন নির্মাণকাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজের গুণগত মান তেমন খারাপ ছিল না, মনে করেন যে খোয়াটার মান একটু খারাপ ছিল। পরে ইঞ্জিয়ারের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, ১ কোটি ৩ লাখের বরাদ্দ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মুগ্ধ বিল্ডার্স’ কাজটি করছেন। কাজের মান ভালো, তবে প্রথমে কিছুটা অনিয়ম ছিল। তাছাড়া তেমন কোনো অমিয়ম হয়নি। ওখানে দুটি গ্রুপ আছে, যার কারণেই সমস্যা। গণমাধ্যমকর্মীরা কাজের অনিয়মের ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশল অফিসে ফোন করলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের ফোন পেয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পরে মেটেরিয়ালস-এর কোয়ালিটি দেখে বিভিন্ন শর্তে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়।