ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একই পরিবারে সরকারি তিনটি ঘর নিয়ে হৈ চৈ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর গ্রামে ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের বাড়ি ভেঙে ফ্লাটবাড়ি তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে। ইতঃমেধ্য ঘরে ছাদ দেওয়ার কাজ চলছে। এই প্রকল্পের ঘর ভাঙার কোনো বিধান না থাকলেও ঘরের মালিক সুমি হালদার ঘর ভেঙে ছাদের বাড়ি করছেন। অভিযোগ উঠেছে একই পরিবারের তিন সদস্য পেয়েছেন দুর্যোগ সহনীয় প্রকল্পের ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের বাড়ি। তৎকালীন কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অনেকটা স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে এই ঘর বরাদ্দ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ৫-৬ বছর আগে কোটচাঁপুরের সাফদারপুর গ্রামের শ্রী নারায়ণ হালদার, তার ছোট ছেলে বাসুদেব হালদার ও বড় ছেলে প্রহল্লাদ হালদারের স্ত্রী সুমি হালদারের নামে ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়। নারায়ণ হালদারের বড় ছেলে প্রহল্লাদ হালদার কোটচাঁদপুর ডিজিটাল সেন্টারে কর্মরত থাকায় প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে নিজের পরিবারের তিন সদস্যের নামে তিনটি ঘর বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন বলে এলাকাবাসী মনে করেন। এখন অনুমতি ব্যতীত সেই বাড়ি ভেঙে নিজের ইচ্ছামতো ছাদের বাড়ি তৈরি করছেন। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, একই পরিবারে এই প্রকল্পের ঘর দেওয়ার বিধান নেই। যদি কেউ বরাদ্দ দিয়ে থাকেন, তবে অনিয়মের মাধ্যমে করেছেন।
কোটচাঁদপুর ডিজিটাল সেন্টারে কর্মরত প্রহল্লাদ হালদার জানান, ‘আমার পরিবারের তিন সদস্য ঘর পেয়েছে এটা সত্য। তবে ঘরগুলো ছিল কাঠের, তাই ঘুন পোকা লেগে নষ্ট হয়ে গেছিল। আমার স্ত্রীর নামে বরাদ্দকৃত ঘরটি ভেঙে তাই ছাদ দিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, এই ঘর ভেঙে যে নতুন করে করা যাবে না, তা নীতিমালায় নেই।’

বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ওয়ালীউল্লাহ জানান, ‘এই প্রকল্পের সঙ্গে আমার অফিসের সংশ্লিষ্টতা নেই। কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) দপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে, তারাই ভালো বলতে পারবেন।’

সাফদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর মান্নান বলেন, ‘আমার আগের চেয়ারম্যানের সময় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আইন মোতাবেক ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের বাড়ি একই পরিবারের তিন সদস্য পেতে পারে না।’
কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খান মাসুম বিল্লাহ গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। আগের কর্মকর্তা কী করেছেন আমার জানা নেই। তবে একই পরিবারের তিন সদস্যকে ঘর দেওয়ার বিধান আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, প্রকল্পের ফাইল তলব করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

একই পরিবারে সরকারি তিনটি ঘর নিয়ে হৈ চৈ

আপলোড টাইম : ০৮:৫৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর গ্রামে ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের বাড়ি ভেঙে ফ্লাটবাড়ি তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে। ইতঃমেধ্য ঘরে ছাদ দেওয়ার কাজ চলছে। এই প্রকল্পের ঘর ভাঙার কোনো বিধান না থাকলেও ঘরের মালিক সুমি হালদার ঘর ভেঙে ছাদের বাড়ি করছেন। অভিযোগ উঠেছে একই পরিবারের তিন সদস্য পেয়েছেন দুর্যোগ সহনীয় প্রকল্পের ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের বাড়ি। তৎকালীন কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অনেকটা স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে এই ঘর বরাদ্দ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ৫-৬ বছর আগে কোটচাঁপুরের সাফদারপুর গ্রামের শ্রী নারায়ণ হালদার, তার ছোট ছেলে বাসুদেব হালদার ও বড় ছেলে প্রহল্লাদ হালদারের স্ত্রী সুমি হালদারের নামে ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়। নারায়ণ হালদারের বড় ছেলে প্রহল্লাদ হালদার কোটচাঁদপুর ডিজিটাল সেন্টারে কর্মরত থাকায় প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে নিজের পরিবারের তিন সদস্যের নামে তিনটি ঘর বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন বলে এলাকাবাসী মনে করেন। এখন অনুমতি ব্যতীত সেই বাড়ি ভেঙে নিজের ইচ্ছামতো ছাদের বাড়ি তৈরি করছেন। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, একই পরিবারে এই প্রকল্পের ঘর দেওয়ার বিধান নেই। যদি কেউ বরাদ্দ দিয়ে থাকেন, তবে অনিয়মের মাধ্যমে করেছেন।
কোটচাঁদপুর ডিজিটাল সেন্টারে কর্মরত প্রহল্লাদ হালদার জানান, ‘আমার পরিবারের তিন সদস্য ঘর পেয়েছে এটা সত্য। তবে ঘরগুলো ছিল কাঠের, তাই ঘুন পোকা লেগে নষ্ট হয়ে গেছিল। আমার স্ত্রীর নামে বরাদ্দকৃত ঘরটি ভেঙে তাই ছাদ দিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, এই ঘর ভেঙে যে নতুন করে করা যাবে না, তা নীতিমালায় নেই।’

বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ওয়ালীউল্লাহ জানান, ‘এই প্রকল্পের সঙ্গে আমার অফিসের সংশ্লিষ্টতা নেই। কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) দপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে, তারাই ভালো বলতে পারবেন।’

সাফদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর মান্নান বলেন, ‘আমার আগের চেয়ারম্যানের সময় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আইন মোতাবেক ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের বাড়ি একই পরিবারের তিন সদস্য পেতে পারে না।’
কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খান মাসুম বিল্লাহ গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। আগের কর্মকর্তা কী করেছেন আমার জানা নেই। তবে একই পরিবারের তিন সদস্যকে ঘর দেওয়ার বিধান আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, প্রকল্পের ফাইল তলব করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।