ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোগীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাই, চিকিৎসক কারাগারে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ১৫ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন: বাঁচেনা খাতুন নামের এক রোগীর পেটে কাঁচি রাখার অভিযোগে আনিত মামলায় মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তারিক হাসান ডা. রাজার জামিন না মঞ্জুর করেন।

জানা গেছে, ২০০২ সালে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের গৃহবধূ বাঁচেনা খাতুন পিত্তথলির অপারেশন করেন গাংনীর রাজা ক্লিনিকে। বাঁচেনা খাতুনের অপারেশন করেন চিকিৎসক মিজানুর রহমান। তাঁর সহকারী হিসেবে ছিলেন ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা ও অ্যানেস্থেসিয়া করেন ডা. তাপস কুমার। অপারেশনের এক সপ্তাহ পর বাঁচেনা খাতুনকে প্রেসক্রিপশন দিয়ে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু পেটে ব্যথা ভালো না হওয়ায় ২০ বছর যাবত ঘুরেছেন বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। অবশেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে করানোর সময় তাঁর পেটে সন্ধান পাওয়া যায় অপারেশনকালে ডাক্তারের রেখে দেওয়া কাঁচির। বিষয়টি জানাজানি হলে ডা. রাজা বাঁচেনাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে অপারেশন করান। বের করা হয় ২০ বছর আগের রেখে যাওয়া কাঁচি।

এদিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তারিক হাসান সপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা করেন ও মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) অপু সারোয়ারকে ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দেন। সেই সাথে ঘটনা তদন্তে সিভিল সার্জন ডা. জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকীকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বলা হয়।

অপরদিকে, মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে গত ৫ জানুয়ারি গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান লিটনকে প্রধান ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারি মো. ফজলুর রহমান, মেহেরপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক ফয়সাল হারুনকে সদস্য করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটি চিকিৎসক মিজানুর রহমানকে প্রধান আসামি করে প্রতিবেদন জমা দেন। অন্যান্য আসামিরা হচ্ছেন- অ্যানেস্থেসিয়া ডা. তাপস কুমার ও ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা। গতকাল রোববার দুপুরে অভিযুক্তরা আদালতে জামিন নিতে গেলে আদালত ডা. মিজানুর রহমান ও ডা. তাপস কুমারকে জামিন প্রদান করলেও ডা. রাজার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

রোগীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাই, চিকিৎসক কারাগারে

আপলোড টাইম : ০৯:০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন: বাঁচেনা খাতুন নামের এক রোগীর পেটে কাঁচি রাখার অভিযোগে আনিত মামলায় মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তারিক হাসান ডা. রাজার জামিন না মঞ্জুর করেন।

জানা গেছে, ২০০২ সালে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের গৃহবধূ বাঁচেনা খাতুন পিত্তথলির অপারেশন করেন গাংনীর রাজা ক্লিনিকে। বাঁচেনা খাতুনের অপারেশন করেন চিকিৎসক মিজানুর রহমান। তাঁর সহকারী হিসেবে ছিলেন ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা ও অ্যানেস্থেসিয়া করেন ডা. তাপস কুমার। অপারেশনের এক সপ্তাহ পর বাঁচেনা খাতুনকে প্রেসক্রিপশন দিয়ে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু পেটে ব্যথা ভালো না হওয়ায় ২০ বছর যাবত ঘুরেছেন বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। অবশেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে করানোর সময় তাঁর পেটে সন্ধান পাওয়া যায় অপারেশনকালে ডাক্তারের রেখে দেওয়া কাঁচির। বিষয়টি জানাজানি হলে ডা. রাজা বাঁচেনাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে অপারেশন করান। বের করা হয় ২০ বছর আগের রেখে যাওয়া কাঁচি।

এদিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তারিক হাসান সপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা করেন ও মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) অপু সারোয়ারকে ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দেন। সেই সাথে ঘটনা তদন্তে সিভিল সার্জন ডা. জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকীকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বলা হয়।

অপরদিকে, মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে গত ৫ জানুয়ারি গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান লিটনকে প্রধান ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারি মো. ফজলুর রহমান, মেহেরপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক ফয়সাল হারুনকে সদস্য করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটি চিকিৎসক মিজানুর রহমানকে প্রধান আসামি করে প্রতিবেদন জমা দেন। অন্যান্য আসামিরা হচ্ছেন- অ্যানেস্থেসিয়া ডা. তাপস কুমার ও ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা। গতকাল রোববার দুপুরে অভিযুক্তরা আদালতে জামিন নিতে গেলে আদালত ডা. মিজানুর রহমান ও ডা. তাপস কুমারকে জামিন প্রদান করলেও ডা. রাজার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।