ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মনোনয়ন পাচ্ছেন না চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ ১১ জেলা পরিষদের প্রশাসক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:২১:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ২১ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
আসন্ন জেলা পরিষদের নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ ১১ প্রশাসক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন না। তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালে নির্বাচিত জেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হলে নির্বাচন না করে গত এপ্রিলে চেয়ারম্যান পদগুলোতে সরকার প্রশাসক বসায়। সব জেলায় বিদায়ী চেয়ারম্যানদেরই আবার প্রশাসক পদে বসানো হয়। তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন, যারা আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে দলের আনুষ্ঠানিক প্রার্থীদের হারিয়ে দিয়েছিলেন। তিন পার্বত্য জেলা-রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান ছাড়া ৬১ জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৭ অক্টোবর। মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। এর আগেই আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। এ বৈঠকের দিনক্ষণ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। তবে সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে এই বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা জানিয়েছেন, ৬১টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের জন্য দলের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। এই তালিকাটি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার হাতে রয়েছে। মূলত এই তালিকা থেকেই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হবে। ওই তালিকায় জেলা পরিষদের গত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন, তাদের নাম রাখা হয়নি বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে যে কোনো নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন না দেয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দলের কোনো সাংগঠনিক কাঠামোতে না রাখারও সিদ্ধান্ত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হয়নি। বিদ্রোহী প্রার্থীরা দলের পদ-পদবিও পাচ্ছেন না। এ কারণে জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নাম প্রস্তাবিত তালিকায় রাখা হয়নি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও দলের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের অন্যতম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ জানিয়েছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত সবার জন্যই এক রকম। সুতরাং পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচনেও দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল। এই দলে বিদ্রোহের কোনো সুযোগ নেই। এ জন্যই দলের আটটি বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের সদস্যরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের জন্য সম্ভাব্য তালিকায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের নাম রাখেননি বলে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের দায়িত্বে থাকা দলের সংশ্লিষ্ট সভাপতিম-লীর সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা জেলা পর্যায় থেকে নামের তালিকা সংগ্রহ করে প্রতিটি জেলার জন্য কমপক্ষে দুজন নেতার নাম জমা দিয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গার প্রশাসক ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা শেখ শামসুল আবেদিন খোকনের নামও নেই সম্ভাব্য তালিকায়। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে তিনি দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান মঞ্জুর বিরুদ্ধে জয় পান। মেহেরপুরের প্রশাসক ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রসূলের নাম প্রস্তাবিত তালিকায় নেই। তিনি গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে দলীয় প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলীকে পরাজিত করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মনোনয়ন পাচ্ছেন না চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ ১১ জেলা পরিষদের প্রশাসক

আপলোড টাইম : ০৮:২১:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন:
আসন্ন জেলা পরিষদের নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ ১১ প্রশাসক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন না। তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালে নির্বাচিত জেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হলে নির্বাচন না করে গত এপ্রিলে চেয়ারম্যান পদগুলোতে সরকার প্রশাসক বসায়। সব জেলায় বিদায়ী চেয়ারম্যানদেরই আবার প্রশাসক পদে বসানো হয়। তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন, যারা আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে দলের আনুষ্ঠানিক প্রার্থীদের হারিয়ে দিয়েছিলেন। তিন পার্বত্য জেলা-রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান ছাড়া ৬১ জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৭ অক্টোবর। মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। এর আগেই আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। এ বৈঠকের দিনক্ষণ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। তবে সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে এই বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা জানিয়েছেন, ৬১টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের জন্য দলের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। এই তালিকাটি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার হাতে রয়েছে। মূলত এই তালিকা থেকেই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হবে। ওই তালিকায় জেলা পরিষদের গত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন, তাদের নাম রাখা হয়নি বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে যে কোনো নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন না দেয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দলের কোনো সাংগঠনিক কাঠামোতে না রাখারও সিদ্ধান্ত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হয়নি। বিদ্রোহী প্রার্থীরা দলের পদ-পদবিও পাচ্ছেন না। এ কারণে জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নাম প্রস্তাবিত তালিকায় রাখা হয়নি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও দলের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের অন্যতম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ জানিয়েছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত সবার জন্যই এক রকম। সুতরাং পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচনেও দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল। এই দলে বিদ্রোহের কোনো সুযোগ নেই। এ জন্যই দলের আটটি বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের সদস্যরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের জন্য সম্ভাব্য তালিকায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের নাম রাখেননি বলে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের দায়িত্বে থাকা দলের সংশ্লিষ্ট সভাপতিম-লীর সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা জেলা পর্যায় থেকে নামের তালিকা সংগ্রহ করে প্রতিটি জেলার জন্য কমপক্ষে দুজন নেতার নাম জমা দিয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গার প্রশাসক ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা শেখ শামসুল আবেদিন খোকনের নামও নেই সম্ভাব্য তালিকায়। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে তিনি দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান মঞ্জুর বিরুদ্ধে জয় পান। মেহেরপুরের প্রশাসক ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রসূলের নাম প্রস্তাবিত তালিকায় নেই। তিনি গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে দলীয় প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলীকে পরাজিত করেন।