ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে পুকুর লিজ নিয়ে বিপাকে মাছ চাষী!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৫৮:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন: মেহেরপুরের গাংনীতে পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করতে গিয়ে মামলায় পড়েছেন চুয়াডাঙ্গার শালিকা গ্রামের মাছ চাষী ইসমাইল হোসেন। পুকুরের এক সময়ের মালিক বনে যাওয়া গাংনীর চান্দামারী গ্রামের বুলবুল হোসেন রক্ষা পেলেও ফেঁসে গেছেন ইসমাইল হোসেনসহ কয়েকজন মাছচাষী। একটি পক্ষ রাতের আধারে পুকুর থেকে মাছ ধরে নিয়ে গেছে। আর এই দায়ে মাছচাষীরা এখন মামলায় পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইসমাইল হোসেন।
জানা গেছে, গাংনী উপজেলার চান্দামারী গ্রামের পদ্মবিল নামের একটি পুকুরের মালিক ছিল সরকার। এই পুকুরের অবস্থান গাংনী উপজেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী। এসএ এবং সিএস রেকর্ডবলে চাঁন্দামারী গ্রামের বুলবুল হোসেন পুকুরের মালিক দাবি করে। গ্রামের কয়েকজন কুচক্রীর সহায়তায় সরকারি জমি নিজের নামে করে নেয় বুলবুল। রেকর্ডের পর থেকেই বুলবুল বিভিন্নভাবে পুকুর ভোগ দখল করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়ে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার শালিকা গ্রামের ইসমাইল হোসেন ও মহিবুল ইসলাম লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। তবে তার আগেই পুকুরের মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। ওই মামলায় ১৪৫ ধারা জারি করেন বিজ্ঞ আদালত।

ভুক্তভোগী ইসমাইল হোসেন বলেন, গত বুধবার রাতে তারা জেলে নিয়ে পুকুরে মাছ ধরতে যায়। এসময় গাংনী থানা পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করে। দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তখন জানতে পারি যে আদালতের আদেশে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পুকুরের (ওসি) রিসিভার দেওয়া হয়েছে। ফলে পুকুরের মাছ ধরা থেকে আমরা বিরত থাকি। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পুকুরে যাইনি। কিন্তু এর পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গাংনী উপজেলার শানঘাট গ্রামের আব্দুর রহমান, চাঁন্দামারী গ্রামের আলিম, একই গ্রামের সোহরাব হোসেন এবং সাল্টু লোকজন নিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করে দেয়। যার আনুমানিক মূল্য ১৫ লাখ টাকা। আব্দুর রহমানসহ তার লোকজন মাছ ধরলেও এই দায় এখন মাছচাষীদের ওপর দেওয়া হচ্ছে। রিসিভার অনুযায়ী পুলিশের পক্ষ থেকে মাছ বিক্রি করলে তো কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু ওই পক্ষের লোকজন মাছ বিক্রি করেছে যার দায় এখন মাছচাষীদের টানতে হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন মাছচাষীরা।

তবে ইসমাইল হোসেনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার লোকজন পুকুরে যাইনি এবং মাছও ধরেনি। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ইসমাইল হোসেন আমাদেরকে ফাঁসাতে চাচ্ছে। জানা গেছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুকুরে মাছ ধরায় মাছচাষী ইসমাইল হোসেনসহ কয়েকজনের নামে গাংনী থানায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে মাছ ধরার সময় যে দুজনকে পুলিশ আটক করেছিল তাদেরকে এ মামলায় আদালতে সোপর্দ করা করেছে গাংনী থানা পুলিশ।

জানতে চাইলে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আদালত থেকে রিসিভার পাওয়ার পর ইসমাইল হোসেনদের পুকুরে আসতে নিষেধ করেছিলাম। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুকুরে আসা ও মাছ ধরে বিক্রি করার অপরাধে তাদের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

গাংনীতে পুকুর লিজ নিয়ে বিপাকে মাছ চাষী!

আপলোড টাইম : ০৭:৫৮:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন: মেহেরপুরের গাংনীতে পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করতে গিয়ে মামলায় পড়েছেন চুয়াডাঙ্গার শালিকা গ্রামের মাছ চাষী ইসমাইল হোসেন। পুকুরের এক সময়ের মালিক বনে যাওয়া গাংনীর চান্দামারী গ্রামের বুলবুল হোসেন রক্ষা পেলেও ফেঁসে গেছেন ইসমাইল হোসেনসহ কয়েকজন মাছচাষী। একটি পক্ষ রাতের আধারে পুকুর থেকে মাছ ধরে নিয়ে গেছে। আর এই দায়ে মাছচাষীরা এখন মামলায় পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইসমাইল হোসেন।
জানা গেছে, গাংনী উপজেলার চান্দামারী গ্রামের পদ্মবিল নামের একটি পুকুরের মালিক ছিল সরকার। এই পুকুরের অবস্থান গাংনী উপজেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী। এসএ এবং সিএস রেকর্ডবলে চাঁন্দামারী গ্রামের বুলবুল হোসেন পুকুরের মালিক দাবি করে। গ্রামের কয়েকজন কুচক্রীর সহায়তায় সরকারি জমি নিজের নামে করে নেয় বুলবুল। রেকর্ডের পর থেকেই বুলবুল বিভিন্নভাবে পুকুর ভোগ দখল করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়ে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার শালিকা গ্রামের ইসমাইল হোসেন ও মহিবুল ইসলাম লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। তবে তার আগেই পুকুরের মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। ওই মামলায় ১৪৫ ধারা জারি করেন বিজ্ঞ আদালত।

ভুক্তভোগী ইসমাইল হোসেন বলেন, গত বুধবার রাতে তারা জেলে নিয়ে পুকুরে মাছ ধরতে যায়। এসময় গাংনী থানা পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করে। দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তখন জানতে পারি যে আদালতের আদেশে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পুকুরের (ওসি) রিসিভার দেওয়া হয়েছে। ফলে পুকুরের মাছ ধরা থেকে আমরা বিরত থাকি। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পুকুরে যাইনি। কিন্তু এর পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গাংনী উপজেলার শানঘাট গ্রামের আব্দুর রহমান, চাঁন্দামারী গ্রামের আলিম, একই গ্রামের সোহরাব হোসেন এবং সাল্টু লোকজন নিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করে দেয়। যার আনুমানিক মূল্য ১৫ লাখ টাকা। আব্দুর রহমানসহ তার লোকজন মাছ ধরলেও এই দায় এখন মাছচাষীদের ওপর দেওয়া হচ্ছে। রিসিভার অনুযায়ী পুলিশের পক্ষ থেকে মাছ বিক্রি করলে তো কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু ওই পক্ষের লোকজন মাছ বিক্রি করেছে যার দায় এখন মাছচাষীদের টানতে হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন মাছচাষীরা।

তবে ইসমাইল হোসেনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার লোকজন পুকুরে যাইনি এবং মাছও ধরেনি। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ইসমাইল হোসেন আমাদেরকে ফাঁসাতে চাচ্ছে। জানা গেছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুকুরে মাছ ধরায় মাছচাষী ইসমাইল হোসেনসহ কয়েকজনের নামে গাংনী থানায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে মাছ ধরার সময় যে দুজনকে পুলিশ আটক করেছিল তাদেরকে এ মামলায় আদালতে সোপর্দ করা করেছে গাংনী থানা পুলিশ।

জানতে চাইলে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আদালত থেকে রিসিভার পাওয়ার পর ইসমাইল হোসেনদের পুকুরে আসতে নিষেধ করেছিলাম। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুকুরে আসা ও মাছ ধরে বিক্রি করার অপরাধে তাদের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।