সমীকরণ প্রতিবেদক: সরকারের দেওয়া নতুন সময়সূচিতে সকাল আটটায় অফিস শুরুর কথা থাকলেও তা মানছেন না মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার অধিকাংশ সরকারি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। সকাল নয়টার সময়েও কোনো কর্মকর্তার আগমন চোখে পড়েনি। তবে কয়েকটি অফিসের কর্মচারী ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবিকাদের উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল। অপর দিকে, অফিস ছুটির সময় অনেকেই আগেভাগেই অফিস ত্যাগ করেছেন।

গতকাল বুধবার সরেজমিনে সকাল আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থান করে দেখা গেছে বিচিত্র সব চিত্র। সেবিকারা দোতলায় রক্ষিত ডিজিটাল হাজিরাতে আঙুলের ছাপ দিয়ে অফিসে প্রবেশ করছেন। সেই সাথে ডেন্টিস্ট আমিরুল ইসলাম হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করলেন। তবে ঘণ্টাব্যাপী অপেক্ষা করেও কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর দেখা মেলেনি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বড়বাবু, স্টোরকিপার, পরিসংখ্যান অফিস, ইপিআই টেকনিশিয়ান, ল্যাব ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস কক্ষে কেউ আসেনি। তবে একজন অফিস সহায়ক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কক্ষটি খুলেছেন। গোটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে ছিল। অফিস কক্ষের সামনে রয়েছে ছাগলের মলমূত্র। তবে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উপস্থিত না থাকলেও তার অফিসের এসি, ফ্যান ও লাইট যথারীতি চলছিল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন কর্মচারী জানান, ‘শুধু আজকের নয়, এটি নিত্যদিনের চিত্র। কর্মকর্তারা কেউ সঠিক সময়ে অফিস করেন না। স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সেকমো আর সেবিকাদের দ্বারা পরিচালিত হয়।’

এদিকে উপজেলা পরিষদে অবস্থিত অফিসগুলোতে পাওয়া গেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গড়হাজিরা। নির্ধারিত সময়ে অফিসে উপস্থিত হয়েছেস উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী, সমাজসেবা কর্মকর্তা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, নির্বাচন কর্মকর্তা ও খাদ্য কর্মকর্তা। একই সময়ে উপস্থিত হন সাব-রেজিস্টার ও মৎস্য কর্মকর্তা। তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী, কৃষি অফিসার, সমবায় অফিসার, হিসাবরক্ষণ ও পরিসংখ্যান এবং শিক্ষা অফিসেও কোনো কর্মকর্তা আসেননি।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন ও সমবায় কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে রয়েছেন। মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মেহেরপুরে অফিস করেন তাই এখানে আসতে পারেননি। তবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল আলমের বিষয়ে কেউ মুখ খোলেনি।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মৌসুমী খানম জানান, প্রথম অফিস, তাই অনেকেই স্বল্প বিলম্ব করে এসেছেন। পরে আর কোনো সমস্যা হবে না। সবাইকে সে রকম নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।