ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শোক দিবসের অনুষ্ঠানে মাংস-ইলিশ ও দই!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:৪১:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০২২
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের মহেশপুরে নোটিশ করে স্কুল ছুটি দিয়ে স্কুল মাঠে শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করা হয়েছে। গতকাল শনিবার মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদ। শোক দিবসের অনুষ্ঠান করা হলেও বিদ্যালয়ে টানানো হয়নি জাতীয় পতাকা। শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামিরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহেশপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ময়জদ্দীন হামীদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী, মহেশপুর থানার ওসি সেলিম মিয়া, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক আজা।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানায়, শুক্রবার সারাদিন ধরে স্কুলের ভবনের সামনে স্টেজ করা হয়। শনিবার সকাল থেকেই ৪/৫ টা মাইক লাগিয়ে আলোচনা শুরু করে। স্কুলে শিক্ষকরা এলেও কোন ক্লাস নেওয়া হয়নি। ৭ম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, গত বৃহস্পতিবার ক্লাসে এসে স্যাররা নোটিশ করে বলে দিয়েছেন যে শনিবার স্কুল বন্ধ। আমরা আজ ক্লাস করতে পারিনি। ১০ম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, আগে থেকেই স্কুল ছুটি দিয়েছে। আজ শোক দিবসের অনুষ্ঠান তাই এসেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা করা হচ্ছে। তাই বলে স্কুল ছুটি দিয়ে কেন? ওই দিন কি ঘটেছিলো তা সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মকে জানাতে হবে। শিক্ষার্থীদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে এ আলোচনা করে কি লাভ হবে? আলোচনা সভা বিকেলে করলে ভালো হতো। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষক মিলনায়তনে গণভোজের নামে ভুড়িভোজের আয়োজন করা হয়। সভায় আগতদের খিচুড়ি দেওয়া হলেও অতিথিরা ইলিশ মাছ, মাংস, দই, মিষ্টি দিয়ে গণভোজে অংশ নেয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, আজ আবহাওয়া খারাপের কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কম ছিলো। স্কুল ছুটির কথা তিনি অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে আয়োজক শ্যামকুড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিরুল হককে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, আমি বিকালে গিয়েছিলাম। ক্লাস হলো কি না আপনি ওই স্কুলের হেডমাস্টারকে জিজ্ঞাসা করেন। শোক দিবসের আলোচনায় গিয়ে, খাসির গোস্ত, ইলিশ মাছসহ ভুড়িভোজ হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যারা আযোজন করেছে তাদের জিজ্ঞাসা করেন।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, স্কুল ছুটি দিয়ে আলোচনা সভা করতে হবে এমন কোনো নির্দেশনা নেই। যদি নোটিশ দিয়ে স্কুল বন্ধ করে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

শোক দিবসের অনুষ্ঠানে মাংস-ইলিশ ও দই!

আপলোড টাইম : ০২:৪১:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০২২

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের মহেশপুরে নোটিশ করে স্কুল ছুটি দিয়ে স্কুল মাঠে শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করা হয়েছে। গতকাল শনিবার মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদ। শোক দিবসের অনুষ্ঠান করা হলেও বিদ্যালয়ে টানানো হয়নি জাতীয় পতাকা। শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামিরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহেশপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ময়জদ্দীন হামীদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী, মহেশপুর থানার ওসি সেলিম মিয়া, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক আজা।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানায়, শুক্রবার সারাদিন ধরে স্কুলের ভবনের সামনে স্টেজ করা হয়। শনিবার সকাল থেকেই ৪/৫ টা মাইক লাগিয়ে আলোচনা শুরু করে। স্কুলে শিক্ষকরা এলেও কোন ক্লাস নেওয়া হয়নি। ৭ম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, গত বৃহস্পতিবার ক্লাসে এসে স্যাররা নোটিশ করে বলে দিয়েছেন যে শনিবার স্কুল বন্ধ। আমরা আজ ক্লাস করতে পারিনি। ১০ম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, আগে থেকেই স্কুল ছুটি দিয়েছে। আজ শোক দিবসের অনুষ্ঠান তাই এসেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা করা হচ্ছে। তাই বলে স্কুল ছুটি দিয়ে কেন? ওই দিন কি ঘটেছিলো তা সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মকে জানাতে হবে। শিক্ষার্থীদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে এ আলোচনা করে কি লাভ হবে? আলোচনা সভা বিকেলে করলে ভালো হতো। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষক মিলনায়তনে গণভোজের নামে ভুড়িভোজের আয়োজন করা হয়। সভায় আগতদের খিচুড়ি দেওয়া হলেও অতিথিরা ইলিশ মাছ, মাংস, দই, মিষ্টি দিয়ে গণভোজে অংশ নেয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, আজ আবহাওয়া খারাপের কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কম ছিলো। স্কুল ছুটির কথা তিনি অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে আয়োজক শ্যামকুড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিরুল হককে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, আমি বিকালে গিয়েছিলাম। ক্লাস হলো কি না আপনি ওই স্কুলের হেডমাস্টারকে জিজ্ঞাসা করেন। শোক দিবসের আলোচনায় গিয়ে, খাসির গোস্ত, ইলিশ মাছসহ ভুড়িভোজ হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যারা আযোজন করেছে তাদের জিজ্ঞাসা করেন।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, স্কুল ছুটি দিয়ে আলোচনা সভা করতে হবে এমন কোনো নির্দেশনা নেই। যদি নোটিশ দিয়ে স্কুল বন্ধ করে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।