ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সমাজসেবার এডি যখন নিজেই ঠিকাদার!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০২২
  • / ২৮ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসের সহকারী পরিচালক (এডি) আব্দুল্লাহ আল সামী নিজেই ঠিকাদার। অফিসের বিভিন্ন কাজ তিনি অন্য একটি লাইসেন্সে হাতিয়ে নিচ্ছেন। ফলে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারি একজন কর্মকর্তা ঠিকাদারী করতে পারেন কি না এ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের ২০২১-২০২২ অর্থবছরের সরকারি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় মেরামত উপখাতে ৩২ লাখ টাকা থেকে ২৯ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫৫ টাকার ৪টি সংস্থান বিভাজনে বরাদ্দ ও মঞ্জুরী প্রদান করা হয়, যার স্মারক নম্বর ৪১.০১.০০০০.০৬৬.২৬.৪০৬.২০২১.৮২১৩। এর মধ্যে ঝিনাইদহের সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ডরমেটরি ভবন মেরামত কাজ রয়েছে। এই বরাদ্দে প্লাস্টার, ভেতরের প্লাস্টিক পেইন্ট, বাইরে ওয়েদারকোট, দরজা-জানালা ও গ্রীলে এনামেল কোট, পয়-প্রণালী ও পানি সরবরাহ লাইন মেরামত, স্যানিটারি ফিটিংস ফিকচার পরিবর্তন, সেফটিক ট্যাংক ও শোকওয়েল পরিষ্কারের কাজ বাবদ ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭৪ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া অফিস ভবন মেরামতের জন্য ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৪৯০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ওপেন টেন্ডারে স্বচ্ছভাবে এই কাজ না করে রাশেদুর রহমান নামে এক ঠিকাদারের লাইসেন্সে দিয়ে এই কাজ নিজেই করছেন এমআরইসি কমিটি সভাপতি ঝিনাইদহ সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল সামী।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক রাশেদুর রহমান রাসেল জানান, তাঁর লাইসেন্স নিয়ে অনেক আগে থেকেই সমাজসেবার কর্মকর্তারা কাজ করেন।  সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বলে তিনি এই কাজ থেকে কোনো লভ্যাংশ বা কমিশন নেন না। কখন কিসের কাজ আসলো বা কোন কাজে তাঁর লাইসেন্সে সিডিউল ড্রপ হলো, তিনি খোঁজ রাখেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মচারী জানিয়েছেন এই কাজ এডি স্যার নিজে করছেন।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল লতিফ শেখ জানান, ‘ঠিকাদারের মাধ্যমেই এই কাজ করার কথা। এডি সাহেব তো এই কমিটির সভাপতি। তিনি নিজে কীভাবে করেন, তা আমার অজানা।’ এদিকে একজন সরকারি কর্মকর্তা কীভাবে ঠিকাদারি কাজ করতে পারেন এমন প্রশ্ন করলে উপ-পরিচালক কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল সামী জানান, এই কাজ ঠিকাদারের লাইসেন্সেই হচ্ছে। তিনি নিজে কীভাবে এই কাজ করছেন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (সংযুক্ত) মো. তরিকুল ইসলাম জানান, ‘আমি মাত্র ৩ দিন আগে যোগদান করেছি। এ বিষয়ে কিছুই জানি না।’

উল্লেখ্য এর আগে সহকারী পরিচালক সামির বিরুদ্ধে বেদে সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রকল্পে চরম অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বাড়ি ঝিনাইদহে হওয়ায় তিনি প্রভাব খাটিয়ে তিনি একের পর এক অনিয়ম করে গেলেও থাকছেন ধরা ছোয়ার বাইরে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

সমাজসেবার এডি যখন নিজেই ঠিকাদার!

আপলোড টাইম : ০৮:০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০২২

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসের সহকারী পরিচালক (এডি) আব্দুল্লাহ আল সামী নিজেই ঠিকাদার। অফিসের বিভিন্ন কাজ তিনি অন্য একটি লাইসেন্সে হাতিয়ে নিচ্ছেন। ফলে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারি একজন কর্মকর্তা ঠিকাদারী করতে পারেন কি না এ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের ২০২১-২০২২ অর্থবছরের সরকারি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় মেরামত উপখাতে ৩২ লাখ টাকা থেকে ২৯ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫৫ টাকার ৪টি সংস্থান বিভাজনে বরাদ্দ ও মঞ্জুরী প্রদান করা হয়, যার স্মারক নম্বর ৪১.০১.০০০০.০৬৬.২৬.৪০৬.২০২১.৮২১৩। এর মধ্যে ঝিনাইদহের সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ডরমেটরি ভবন মেরামত কাজ রয়েছে। এই বরাদ্দে প্লাস্টার, ভেতরের প্লাস্টিক পেইন্ট, বাইরে ওয়েদারকোট, দরজা-জানালা ও গ্রীলে এনামেল কোট, পয়-প্রণালী ও পানি সরবরাহ লাইন মেরামত, স্যানিটারি ফিটিংস ফিকচার পরিবর্তন, সেফটিক ট্যাংক ও শোকওয়েল পরিষ্কারের কাজ বাবদ ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭৪ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া অফিস ভবন মেরামতের জন্য ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৪৯০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ওপেন টেন্ডারে স্বচ্ছভাবে এই কাজ না করে রাশেদুর রহমান নামে এক ঠিকাদারের লাইসেন্সে দিয়ে এই কাজ নিজেই করছেন এমআরইসি কমিটি সভাপতি ঝিনাইদহ সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল সামী।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক রাশেদুর রহমান রাসেল জানান, তাঁর লাইসেন্স নিয়ে অনেক আগে থেকেই সমাজসেবার কর্মকর্তারা কাজ করেন।  সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বলে তিনি এই কাজ থেকে কোনো লভ্যাংশ বা কমিশন নেন না। কখন কিসের কাজ আসলো বা কোন কাজে তাঁর লাইসেন্সে সিডিউল ড্রপ হলো, তিনি খোঁজ রাখেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মচারী জানিয়েছেন এই কাজ এডি স্যার নিজে করছেন।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল লতিফ শেখ জানান, ‘ঠিকাদারের মাধ্যমেই এই কাজ করার কথা। এডি সাহেব তো এই কমিটির সভাপতি। তিনি নিজে কীভাবে করেন, তা আমার অজানা।’ এদিকে একজন সরকারি কর্মকর্তা কীভাবে ঠিকাদারি কাজ করতে পারেন এমন প্রশ্ন করলে উপ-পরিচালক কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল সামী জানান, এই কাজ ঠিকাদারের লাইসেন্সেই হচ্ছে। তিনি নিজে কীভাবে এই কাজ করছেন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (সংযুক্ত) মো. তরিকুল ইসলাম জানান, ‘আমি মাত্র ৩ দিন আগে যোগদান করেছি। এ বিষয়ে কিছুই জানি না।’

উল্লেখ্য এর আগে সহকারী পরিচালক সামির বিরুদ্ধে বেদে সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রকল্পে চরম অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বাড়ি ঝিনাইদহে হওয়ায় তিনি প্রভাব খাটিয়ে তিনি একের পর এক অনিয়ম করে গেলেও থাকছেন ধরা ছোয়ার বাইরে।