ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুজিবনগরে মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়ম!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:১৯:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ জুলাই ২০২২
  • / ৪০ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন: মেহেরপুরের মুজিবনগরে মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে নামমাত্র অভয়াশ্রম তৈরির অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগীরা। চলতি বছরের ১৫ জুলাই দ্বিতীয় দফার কাজের মেয়াদ শেষ হলেও সেভাবেই পড়ে আছে অভয়াশ্রমটি।

মেহেরপুর জেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ-২ (এনএটিপি-২) প্রকল্পের আওতায় ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মাছের অবাধ প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য মুজিবনগর উপজেলার দাদপুর বিলের টুপলার অংশে প্রায় ১ হেক্টর জলাশয়ের উপর মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী কোটেশনের মাধ্যমে কুষ্টিয়া জেলার রেজাউল হক নামের এক ঠিকাদারকে অভয়াশ্রম তৈরির কাজ দেওয়া হয়। সেই সাথে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয় মুজিবনগর উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নাজমুস শাকিবকে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করতে পারেননি ঠিকাদার। পরে নামমাত্র অভয়াশ্রম তৈরি করে কাজ শেষ বলে দাবি করে ঠিকাদার।

দাদপুর বিলের টুপলার অংশের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরির জন্য ২৫ বর্গ ইঞ্চি মোটা ও ১৫ ফিট উচ্চতার ১২টি উন্নতমানের আরসিসি পিলার দেওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত পরিমাপের চেয়ে কম ও নিম্নমানের অর্ডিনারী আরসিসি পিলার। এছাড়াও ১৯ফিট সাইজের ১ হাজার ৯০ পিস বাঁশ ও তেতুল, বরই, আম ও জাম গাছের সাইজ ডালপালা ব্যবহার করার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে কম উচ্চতার বাঁশ ও বিলের আশেপাশের ঝোপঝাড়। ৩০০ বাই ৪৫০ মিলিমিটার ১শ পিস লাল ফ্লাগ দেওয়াার কথা কিন্তু দেওয়া হয়েছে ছোট ছোট ৪ পিস। উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তদারকির পরও কেন এমন অনিয়ম হলো তার তদন্ত হওয়া উচিৎ।’

এবিলের উপকারভোগী শ্রী আনন্দ হালদার বলেন, ‘অভয়াশ্রম তৈরিতে নির্ধারিত ইষ্টিমেটের চার ভাগের একভাগ কাজ হয়েছে। আমরা বার বার বলার পরও সঠিকভাবে কাজ করেননি ঠিকাদার।’ সেই সাথে উপজেলা মৎস্য অফিসেরও কাজের ব্যাপারেও তেমন কোনো তদারকি ছিলনা বলে দাবি করেন তিনি।

অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়মের কথা স্বীকার করে মুজিবনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে উর্ধতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসেন। পুনরায় সঠিকভাবে অভয়াশ্রমটি তৈরির নির্দেশ দেন। কিন্তু ঠিকাদার অসুস্থ থাকায় এখনো কাজ শেষ হয়নি।’

ঠিকাদার রেজাউল হক মোবাইল ফোনে জানান, ‘আমার যখন সময় হবে, তখন আমি কাজ করবো।’
মেহেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রোকোনুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ঠিকাদারের কাজের বিল দেওয়া বন্ধ রেখেছি। সঠিকভাবে কাজ না হওয়া পর্যন্ত ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হবে না।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মুজিবনগরে মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়ম!

আপলোড টাইম : ০৩:১৯:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ জুলাই ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন: মেহেরপুরের মুজিবনগরে মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে নামমাত্র অভয়াশ্রম তৈরির অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগীরা। চলতি বছরের ১৫ জুলাই দ্বিতীয় দফার কাজের মেয়াদ শেষ হলেও সেভাবেই পড়ে আছে অভয়াশ্রমটি।

মেহেরপুর জেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ-২ (এনএটিপি-২) প্রকল্পের আওতায় ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মাছের অবাধ প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য মুজিবনগর উপজেলার দাদপুর বিলের টুপলার অংশে প্রায় ১ হেক্টর জলাশয়ের উপর মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী কোটেশনের মাধ্যমে কুষ্টিয়া জেলার রেজাউল হক নামের এক ঠিকাদারকে অভয়াশ্রম তৈরির কাজ দেওয়া হয়। সেই সাথে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয় মুজিবনগর উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নাজমুস শাকিবকে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করতে পারেননি ঠিকাদার। পরে নামমাত্র অভয়াশ্রম তৈরি করে কাজ শেষ বলে দাবি করে ঠিকাদার।

দাদপুর বিলের টুপলার অংশের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরির জন্য ২৫ বর্গ ইঞ্চি মোটা ও ১৫ ফিট উচ্চতার ১২টি উন্নতমানের আরসিসি পিলার দেওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত পরিমাপের চেয়ে কম ও নিম্নমানের অর্ডিনারী আরসিসি পিলার। এছাড়াও ১৯ফিট সাইজের ১ হাজার ৯০ পিস বাঁশ ও তেতুল, বরই, আম ও জাম গাছের সাইজ ডালপালা ব্যবহার করার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে কম উচ্চতার বাঁশ ও বিলের আশেপাশের ঝোপঝাড়। ৩০০ বাই ৪৫০ মিলিমিটার ১শ পিস লাল ফ্লাগ দেওয়াার কথা কিন্তু দেওয়া হয়েছে ছোট ছোট ৪ পিস। উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তদারকির পরও কেন এমন অনিয়ম হলো তার তদন্ত হওয়া উচিৎ।’

এবিলের উপকারভোগী শ্রী আনন্দ হালদার বলেন, ‘অভয়াশ্রম তৈরিতে নির্ধারিত ইষ্টিমেটের চার ভাগের একভাগ কাজ হয়েছে। আমরা বার বার বলার পরও সঠিকভাবে কাজ করেননি ঠিকাদার।’ সেই সাথে উপজেলা মৎস্য অফিসেরও কাজের ব্যাপারেও তেমন কোনো তদারকি ছিলনা বলে দাবি করেন তিনি।

অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়মের কথা স্বীকার করে মুজিবনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে উর্ধতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসেন। পুনরায় সঠিকভাবে অভয়াশ্রমটি তৈরির নির্দেশ দেন। কিন্তু ঠিকাদার অসুস্থ থাকায় এখনো কাজ শেষ হয়নি।’

ঠিকাদার রেজাউল হক মোবাইল ফোনে জানান, ‘আমার যখন সময় হবে, তখন আমি কাজ করবো।’
মেহেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রোকোনুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ঠিকাদারের কাজের বিল দেওয়া বন্ধ রেখেছি। সঠিকভাবে কাজ না হওয়া পর্যন্ত ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হবে না।’