ঝিনাইদহ অফিস: জীবন–মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা বোন জাহানারা খাতুনকে (৫৫) নছিমনে আনা হয়েছে সাব–রেজিস্ট্রি অফিসে। দলিল লেখা সম্পন্ন। বাকি আছে টিপসহি নেওয়ার। দলিল লেখকসহ রেজিস্ট্রি অফিসের লোকজন টিপসহি গ্রহণের জন্য নছিমন গাড়ির কাছে এলেন। অমানবিকভাবে শারীরিক অসুস্থ বোনের টিপসই গ্রহণের সময় চিৎকার–চেঁচামেচি করতে লাগলেন। কে বা কারা এই অমানবিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে গত (২৬ জুলাই) মঙ্গলবার ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলা সাব–রেজিস্ট্রি অফিসে।

অভিযোগ উঠেছে, জোড়াদহ গ্রামের লোকমান শাহের ছেলে রইচ উদ্দীন তার মুমূর্ষু বোন জাহানারা খাতুনকে জোরপূর্বক ধরে এনে জমি লিখে নেওয়ার চেষ্টা চালান। দলিলে টিপসই নেওয়া মুহূর্তে বোন জাহানারা নছিমন ভ্যানে শুয়ে চিৎকার করতে থাকলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক গণমাধ্যমকর্মী ভিডিও ধারণকালে স্বার্থপর ও লোভী ভাই রউচ উদ্দীন পালিয়ে যান। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হলে অভিযুক্ত ভাই ও দলিল লেখকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা সাব–রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক নওশের আলী বলেন, জোড়াদহ গ্রামের রউচ উদ্দীন এসেছিলেন তাঁর বোন তাকে জমি দান করবে বলে একটি হেবা দলিল (দানপত্র) করার জন্য। সে অনুযায়ী দলিলটি লেখা হয়েছিল। কিন্তু দলিলে টিপসই দেওয়ার সময় যখন তার বোন চিৎকার শুরু করেন, তখন আমরা তাদেরকে ফিরিয়ে দিই।

অভিযুক্ত রইচ উদ্দিন জোর করে দলিলে টিপসই নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বোন আমাকে ৯ শতাংশ জমি দান করতে চেয়েছিলেন। সেই কারণে তাকে রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে আসি। সে মানসিক ভারসাম্যহীন। অফিসে আসার পর তার শরীর বেশি খারাপ হওয়ায় সে চিৎকার করে। পরে রেজিস্ট্রি না করে ফিরে যায়।’

সাব–রেজিস্ট্রার মেহেদী আল হাসান বলেন, ঘটনাটি সাংবাদিকদের কাছ থেকেই শুনেছি। এমন কিছু করা হলে তা চরম অমানবিক। তিনি বলেন, ‘আমার অফিসে জবরদস্তি করে দলিল রেজিস্ট্রির কোনো সুযোগ নেই।