রক্তমাখা শরীর ও আঘাতের চিহ্ন নিয়ে তড়িঘড়ি করে বৃদ্ধার লাশ দাফন
- আপলোড টাইম : ০৮:৪৭:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ জুলাই ২০২২
- / ৪৮ বার পড়া হয়েছে
প্রতিবেদক, হরিণাকুণ্ডু: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামে রহিমান বেগম (৯০) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু নিয়ে এলাকায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। নির্যাতনে হত্যার পর রক্তমাখা শরীর ও আঘাতের ক্ষত চিহ্ন নিয়ে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রহিমান বেগম লক্ষীপুর গ্রামের মৃত বাহার শাহের স্ত্রী।
আনজেরা খাতুন নামে এক প্রতিবেশী জানান, গত রোববার রাত দুইটার দিকে রহিমানের মৃত্যুর খবর শুনে তারা দেখতে যান। সে সময় তারা দেখতে পান মরদেহের শরীর ছিল রক্তমাখা এবং তার পরনের শাড়িটিও ছিল রক্তে ভেজা। তার মুখ ও কপালে আঘাতের চিহ্ন ছিল। গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে তড়িঘড়ি করে ওই নারীর দাফন করা হয়। মরদেহের গোসল করিয়েছিলেন সুফিয়া বেগম নামে আরেক প্রতিবেশী। তাঁর ভাষ্য, রহিমন বেগমের মুখে একটা ক্ষত ছিল। সেখান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। শাড়িটিও ছিল রক্তে ভেজা। এমন দাবি প্রতিবেশী আসমা খাতুন ও মোহাম্মদ মণ্ডলসহ অনেকেই করেছেন। তাঁদের ধারণা, ছেলের বইয়ের সাথে বনিবনা না হওয়ায় রাতে ঝগড়া-বিবাদের একপর্যায়ে রহিমন বেগমকে হত্যা করা হয়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওই বৃদ্ধার ছেলে আবু বকর শাহ ও তাঁর স্ত্রী ছায়েরা বেগম বলেন, তাঁর মার অনেক বয়স হয়েছিল। রাতের কোনো এক সময় তিনি মারা গেছেন। মুখে রক্তের দাগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ছেলে আবু বকর শাহ বলেন, খাট থেকে পড়ে গিয়ে রক্তাক্ত হতে পারে। লক্ষীপুর গ্রামের গ্রাম পুলিশ মোকাদ্দেস হোসেন ও নিত্য দাশ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যু রেজিস্ট্রারে নাম তুলতে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। মরদেহের মুখের দুই পাশে গর্তের মতো ছিল। সেখান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। এছাড়া কপালেও দাগ ছিল। বিষয়টি আমরা তাৎক্ষণিক স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই মো. আবু হানিফকে জানিয়েছিলাম।
এএসআই আবু হানিফ জানান, মরদেহের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল এমন কথা তাকে কেউ বলেননি। তাছাড়া গতকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। হরিণাকুণ্ডুর ভায়না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা তুষার বলেন, ‘ওই নারী মারা যাওয়ার খবর আমাকে কেউ বলেনি। তবে এখন তাকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে লোকমুখে শুনতে পাচ্ছি।’
হরিণাকুণ্ডু শহরে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এক সদস্য জানান, ‘রহিমান বেগমকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আসছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।’
হরিণাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কেউ এখনো অভিযোগ করেনি। তবে আমরা বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে তদন্ত শুরু করছি।