ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরের ডিসি অফিস যেন বিয়ে বাড়ি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২
  • / ১৭ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক: দেশবাসীকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে রেশনিং পদ্ধতিতে সারা দেশে  এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দেওয়া শুরু হয়েছে। অথচ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারের নির্দেশনার দিকে যেন তোয়াক্কাই নেই মেহেরপুরের জেলা প্রশাসনের। রেশনিংয়ের প্রথম রাতেই লাল-নীল-সবুজ হরেক রঙে ঝলমলে আলোকসজ্জা দেখা গেছে খোদ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। দূর থেকে দেখে মনে হবে যেন কোনো বিয়েবাড়ি। সারা দেশে রেশনিং পদ্ধতিতে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দেওয়ার প্রথম রাতেই মেহেরপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এমন চিত্র জনমনে জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্নের।

মেহেরপুর পৌরসভা এলাকা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) আওতায় থাকার ফলে লোডশেডিং পৌর এলাকায় সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও গ্রামাঞ্চলের চিত্র এর বিপরীত। জেলার সিংহভাগ গ্রাহকই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায়। এসব গ্রাহকরা দেখা পাচ্ছে না বিদ্যুতের। চলছে ২৪ ঘণ্টায় ১২ ঘণ্টার অধিক সময় লোডশেডিং।

জানা গেছে, মেহেরপুর পৌর শহরে ওজোপাডিকোর আওতায় গ্রাহক সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৮৫ জন। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের অংশ হিসেবে এতোদিন অনেকটাই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেয়ে আসছিল মেহেরপুরবাসী। কিন্তু চলমান গ্যাস সঙ্কটে সারা দেশের মতোই হঠাৎ বিদ্যুৎ সঙ্কটে পড়ে যায় এ জেলার মানুষ। সরকারি নির্দেশনা পেয়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও বিদ্যুৎ অপচয় বন্ধ হয়নি সরকারি অফিস ও অফিসারদের বাসভবনে।

সদর উপজেলার বারাদি এলাকার রুহুল আমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজই নির্দেশনা দিয়েছে মিতব্যয়ী হতে অথচ সারারাত লাইট জ্বলে তাহলে আমরা অন্ধকারেই পড়ে থাকব। সরকারি অফিস ও অফিসারদের বাসভবনে যদি এভাবে বিদ্যুৎ অপচয় হয় তা হলে আর মসজিদের এসি বন্ধ করে লাভ কি?

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বসে রাত ১০টার দিকে মুজিবনগর এলাকার সোহাগ মণ্ডল বলেন, সরকারের কথা যদি সরকারি অফিসাররাই না মানে তা হলে সাধারণ মানুষ শুনবে কার কথা। যত কষ্ট সাধারণ মানুষের। সরকারিভাবে একঘণ্টা লোডশেডিং হওয়ার কথা কিন্তু সারাদিনের বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে বিদ্যুৎ। একই কথা জানালেন সদর উপজেলার পাভেল, রাসেলসহ অনেকেই।

এ ব্যাপারে মেহেরপুর ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা মাইকিং অব্যাহত রেখেছি। এছাড়াও রাত ৮টার সময় মার্কেট ও দোকান বন্ধ করা হচ্ছে। চেষ্টা করছি যেন সবাই বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন হয়।’

মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবু রায়হান জানান, ‘বিদ্যুৎ অপচয় রোধে আমরা মোটিভেশন করছি। এখন মানুষ অনেক সচেতন তাই খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে না। অফিসগুলোতে প্রয়োজনের বাইরে বিদ্যুৎ ব্যবহার না করলেই দেশবাসী উপকৃত হবে।’

এবিষয়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান বলেন, ‘পরবর্তীতে বিদ্যুৎ অপচয়ের রোধে আমরা আরও সতর্ক হবো।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মেহেরপুরের ডিসি অফিস যেন বিয়ে বাড়ি

আপলোড টাইম : ০৮:০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদক: দেশবাসীকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে রেশনিং পদ্ধতিতে সারা দেশে  এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দেওয়া শুরু হয়েছে। অথচ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারের নির্দেশনার দিকে যেন তোয়াক্কাই নেই মেহেরপুরের জেলা প্রশাসনের। রেশনিংয়ের প্রথম রাতেই লাল-নীল-সবুজ হরেক রঙে ঝলমলে আলোকসজ্জা দেখা গেছে খোদ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। দূর থেকে দেখে মনে হবে যেন কোনো বিয়েবাড়ি। সারা দেশে রেশনিং পদ্ধতিতে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দেওয়ার প্রথম রাতেই মেহেরপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এমন চিত্র জনমনে জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্নের।

মেহেরপুর পৌরসভা এলাকা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) আওতায় থাকার ফলে লোডশেডিং পৌর এলাকায় সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও গ্রামাঞ্চলের চিত্র এর বিপরীত। জেলার সিংহভাগ গ্রাহকই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায়। এসব গ্রাহকরা দেখা পাচ্ছে না বিদ্যুতের। চলছে ২৪ ঘণ্টায় ১২ ঘণ্টার অধিক সময় লোডশেডিং।

জানা গেছে, মেহেরপুর পৌর শহরে ওজোপাডিকোর আওতায় গ্রাহক সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৮৫ জন। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের অংশ হিসেবে এতোদিন অনেকটাই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেয়ে আসছিল মেহেরপুরবাসী। কিন্তু চলমান গ্যাস সঙ্কটে সারা দেশের মতোই হঠাৎ বিদ্যুৎ সঙ্কটে পড়ে যায় এ জেলার মানুষ। সরকারি নির্দেশনা পেয়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও বিদ্যুৎ অপচয় বন্ধ হয়নি সরকারি অফিস ও অফিসারদের বাসভবনে।

সদর উপজেলার বারাদি এলাকার রুহুল আমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজই নির্দেশনা দিয়েছে মিতব্যয়ী হতে অথচ সারারাত লাইট জ্বলে তাহলে আমরা অন্ধকারেই পড়ে থাকব। সরকারি অফিস ও অফিসারদের বাসভবনে যদি এভাবে বিদ্যুৎ অপচয় হয় তা হলে আর মসজিদের এসি বন্ধ করে লাভ কি?

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বসে রাত ১০টার দিকে মুজিবনগর এলাকার সোহাগ মণ্ডল বলেন, সরকারের কথা যদি সরকারি অফিসাররাই না মানে তা হলে সাধারণ মানুষ শুনবে কার কথা। যত কষ্ট সাধারণ মানুষের। সরকারিভাবে একঘণ্টা লোডশেডিং হওয়ার কথা কিন্তু সারাদিনের বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে বিদ্যুৎ। একই কথা জানালেন সদর উপজেলার পাভেল, রাসেলসহ অনেকেই।

এ ব্যাপারে মেহেরপুর ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা মাইকিং অব্যাহত রেখেছি। এছাড়াও রাত ৮টার সময় মার্কেট ও দোকান বন্ধ করা হচ্ছে। চেষ্টা করছি যেন সবাই বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন হয়।’

মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবু রায়হান জানান, ‘বিদ্যুৎ অপচয় রোধে আমরা মোটিভেশন করছি। এখন মানুষ অনেক সচেতন তাই খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে না। অফিসগুলোতে প্রয়োজনের বাইরে বিদ্যুৎ ব্যবহার না করলেই দেশবাসী উপকৃত হবে।’

এবিষয়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান বলেন, ‘পরবর্তীতে বিদ্যুৎ অপচয়ের রোধে আমরা আরও সতর্ক হবো।’