ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৃষ্টিহীন আষাঢ়-শ্রাবণে বিপাকে কৃষক!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২১:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ জুলাই ২০২২
  • / ১৮ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক: পানির অভাবে পাট পচানো/জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরের কৃষকরা। আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ মাসের শুরুতেও জেলায় কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চাষিদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। আর এদিকে টানা তাপদাহে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরছে। কিছু সময় হালকা কিংবা মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে যা কিনা শুধুমাত্র ফসলের সেচ কাজের উপযোগী। কিন্তু এই বৃষ্টি পাট পচানোর জন্য পর্যাপ্ত নয়। এই দুই জেলার অধিকাংশ খাল-বিল, ডোবা এবং জলাশয়ে যেটুকু পানি রয়েছে তাতে পাট পচানো সম্ভব না হওয়ায় চাষিদের মাথায় উঠেছে। আষাঢ় ও শ্রাবণে খাল-বিলে পানিতে ভরপুর থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ খাল-বিল এখন শুকনা, কোথাও হাটু কিংবা কোমর পানি থাকলেও তা জার্মানি কিংবা শেওলাতে পরিপূর্ণ।

এদিকে, আমন চাষাবাদ নিয়েও বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। অব্যাহত রোদ আর গরমে নাজেহাল হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুবাসীর জনজীবন। সকাল ৯টা বাজার আগেই রোদে মাঠ-ঘাট তেতে উঠছে। আর দুপুর ১২টা মধ্যে পিচঢালা রাস্তা দিয়ে যেন আগুনের হলকা ছুটছে। চোখ-মুখে রোদের তাপ এসে যেন পুড়ে যাওয়ার অবস্থা। তীব্র গরমে মানুষ পড়েছে বেশ বিপাকে। বিশেষ করে খেটে-খাওয়া মানুষগুলো এই রোদ আর গরমে ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়ছেন। তাই তো বৃষ্টির জন্য এই দুই জেলায় চলছে হাহাকার।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৪৩৩ হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে অধিক জমিতে পাটের চাষ করেছেন কৃষকরা। পাটের ফলনও আশানুরূপ হওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন কৃষকরা। কিন্তু আশানুরূপ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে তারা।

চাষিদের অনেকেই বৃষ্টিপাতের আশায় পাট কেটে জমির পাশে, কেউবা রাস্তার পাশে অথবা খাল-বিল বা ডোবার পাশে স্তুপ করে রেখে দিয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকে আবার খাল-বিল বা জলাশয় এর অল্প পানিতেই পাট পচানোর চেষ্টা করছেন। তবে অধিকাংশ চাষিকেই ডোবা কিংবা জলাশয়ে পাট জাগ দিয়ে পচানোর জন্য শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে পানি দিতে দেখা গেছে।

মেহেরপুর জেলার গোভীপুর গ্রামের নাসিরুদ্দিন জানান, ২বিঘা জমিতে পাট রয়েছে। ভৈরব নদীতে জাগ দিতে দেবেনা। অন্য কোথাও পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। পাট নিয়ে মহা মুশকিলে রয়েছি।

কালী গাংনী গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, এলাকায় পাট পচানোর কোনো জায়গায় নেই। খালও শুকনা। এমতবস্থায় কি করবো কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, যেহেতু বৃষ্টিপাত নেই। অনেকেই শ্যালো ইঞ্জিন কিংবা মটরের পানিতে পাট জাগ দিচ্ছেন। সে হিসেবে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়া হলে অল্প জায়গায় বেশি পাট জাগ দেওয়া সম্ভব।

চুয়াডাঙ্গা জেলার বুইচিতলা গ্রামের নওশাদ আলী জানান, প্রতিবারের ন্যায় এবারও কিছু জমিতে পাটের আবাদ করেছি কিন্তু যেখানে পচানো হয় সে জায়গাতে পানি না থাকায় অন্য আবাদের জন্য চাষ করা হয়েছে।

কুড়ুলগাছি মাঠপাড়া গ্রামের অপর এক চাষি জানান, ২বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। দেড় বিঘা জমির পাট কেটে গোবরা বিলের ব্রীজের সামনে ছোট্ট একটি ডোবায় জাগ দেওয়া হয়েছে এবং মেশিন দিয়ে পানির ব্যবস্থা করছি। বাকি জমির পাট বৃষ্টি হলেই কাটবো।

নতুন গ্রামের মমিনুল ইসলাম জানান, দেড় বিঘা জমির পাট কেটে জমিতে স্তুপ করে রেখে দিয়েছি। আশেপাশের খাল-বিলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকায় পচাতে দিতে পারছিনা। অতিবৃষ্টি হলে পাট জাগ দেয়ায় কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু এবছর বৃষ্টিপাত হয়েছে খুবই কম। কোথাও পানি নেই। এ অবস্থায় পাট কাটার সময় হলেও পাট জাগ দেওয়ার অসুবিধার কথা ভেবে পাট কাটতে পারছি না। পাট পচানোর সমস্যার কারণে এবার লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

একই গ্রামের রফিকুল জানান, তিনি ৩বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। পাট ভাল হয়েছে। বিঘা প্রতি ১২ থেকে ১৩ মন পাটের ফলন হবে। তবে এলাকায় পাট জাগ দেওয়ার পানি ও জায়গা সঙ্কট দেখা দেওয়ায় তাকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জাগ দেওয়ার পানি ও জায়গা সঙ্কটের কারণে তিনি জমির পাট কাটা শুরু করেননি। গত বছর পানি সঙ্কট ছিলোনা। গত বছরের মতন এবারো পাটের দাম ভালো পেলে মনে শান্তি পাবো। 

লক্ষীনারায়ণপুর গ্রামের সুমন জানান, অন্যান্যবার পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকায় পাটক্ষেতের পাশে রাস্তার ধারেই পাট পচন দেওয়া হয়। কিন্তু এবছরে বৃষ্টিপাত না থাকায় ধলার মাঠে আবাদকৃত প্রায় সকল কৃষকই পাট নিয়ে বিপদে রয়েছে।

কাষ্টদহ গ্রামের আব্দুল্লাহ বলেন, ১৬ কাঠা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। জাগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি না থাকায় এখনও পাট কাটতে পারিনি।

কল্যাণপুর গ্রামের সোহানুর রহমান জানান, পাট পচানোর জন্য পানির খুব সমস্যা, এখনো বুঝে উঠতে পারছিনা কোথায় জাগ দেওয়া যায়। এ কারণেই পাট কাটার অপেক্ষায় রয়েছি।

মাইলমারী গ্রামের আশাদুল ইসলাম জানান, কোথাও পানি না থাকায় পাট কেটে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। বৃষ্টি হলে পুকুরে জাগ দেবো।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র শাহা বলেন, ‘পাট চাষিরা তাদের জমির পাট কাটতে শুরু করেছে। চুয়াডাঙ্গায় বড় সমস্যা পাট পচানোর পানির অভাব। পানির অভাবে চাষিরা ভালভাবে পাট পচাতে পারেন না। আমরা চাষিদের কম ব্যয়ে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শ দিচ্ছি। এ পদ্ধতিতে পাট পচালে পাটের আঁশের মানও ভালো হয়। ভালো মানের পাট উৎপাদন করতে পারলে দামও ভালো পাওয়া যাবে। এতে তারা লাভবান হবেন। গত মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় পাটের আবাদ হয়েছিল ১৬ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে; এবার ২২ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার পাটের আবাদ ভাল হয়েছে। তবে অতিবৃষ্টি হলে চাষিদের জন্য আরও সুবিধা হতো।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

বৃষ্টিহীন আষাঢ়-শ্রাবণে বিপাকে কৃষক!

আপলোড টাইম : ০৯:২১:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ জুলাই ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদক: পানির অভাবে পাট পচানো/জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরের কৃষকরা। আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ মাসের শুরুতেও জেলায় কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চাষিদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। আর এদিকে টানা তাপদাহে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরছে। কিছু সময় হালকা কিংবা মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে যা কিনা শুধুমাত্র ফসলের সেচ কাজের উপযোগী। কিন্তু এই বৃষ্টি পাট পচানোর জন্য পর্যাপ্ত নয়। এই দুই জেলার অধিকাংশ খাল-বিল, ডোবা এবং জলাশয়ে যেটুকু পানি রয়েছে তাতে পাট পচানো সম্ভব না হওয়ায় চাষিদের মাথায় উঠেছে। আষাঢ় ও শ্রাবণে খাল-বিলে পানিতে ভরপুর থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ খাল-বিল এখন শুকনা, কোথাও হাটু কিংবা কোমর পানি থাকলেও তা জার্মানি কিংবা শেওলাতে পরিপূর্ণ।

এদিকে, আমন চাষাবাদ নিয়েও বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। অব্যাহত রোদ আর গরমে নাজেহাল হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুবাসীর জনজীবন। সকাল ৯টা বাজার আগেই রোদে মাঠ-ঘাট তেতে উঠছে। আর দুপুর ১২টা মধ্যে পিচঢালা রাস্তা দিয়ে যেন আগুনের হলকা ছুটছে। চোখ-মুখে রোদের তাপ এসে যেন পুড়ে যাওয়ার অবস্থা। তীব্র গরমে মানুষ পড়েছে বেশ বিপাকে। বিশেষ করে খেটে-খাওয়া মানুষগুলো এই রোদ আর গরমে ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়ছেন। তাই তো বৃষ্টির জন্য এই দুই জেলায় চলছে হাহাকার।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৪৩৩ হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে অধিক জমিতে পাটের চাষ করেছেন কৃষকরা। পাটের ফলনও আশানুরূপ হওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন কৃষকরা। কিন্তু আশানুরূপ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে তারা।

চাষিদের অনেকেই বৃষ্টিপাতের আশায় পাট কেটে জমির পাশে, কেউবা রাস্তার পাশে অথবা খাল-বিল বা ডোবার পাশে স্তুপ করে রেখে দিয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকে আবার খাল-বিল বা জলাশয় এর অল্প পানিতেই পাট পচানোর চেষ্টা করছেন। তবে অধিকাংশ চাষিকেই ডোবা কিংবা জলাশয়ে পাট জাগ দিয়ে পচানোর জন্য শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে পানি দিতে দেখা গেছে।

মেহেরপুর জেলার গোভীপুর গ্রামের নাসিরুদ্দিন জানান, ২বিঘা জমিতে পাট রয়েছে। ভৈরব নদীতে জাগ দিতে দেবেনা। অন্য কোথাও পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। পাট নিয়ে মহা মুশকিলে রয়েছি।

কালী গাংনী গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, এলাকায় পাট পচানোর কোনো জায়গায় নেই। খালও শুকনা। এমতবস্থায় কি করবো কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, যেহেতু বৃষ্টিপাত নেই। অনেকেই শ্যালো ইঞ্জিন কিংবা মটরের পানিতে পাট জাগ দিচ্ছেন। সে হিসেবে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়া হলে অল্প জায়গায় বেশি পাট জাগ দেওয়া সম্ভব।

চুয়াডাঙ্গা জেলার বুইচিতলা গ্রামের নওশাদ আলী জানান, প্রতিবারের ন্যায় এবারও কিছু জমিতে পাটের আবাদ করেছি কিন্তু যেখানে পচানো হয় সে জায়গাতে পানি না থাকায় অন্য আবাদের জন্য চাষ করা হয়েছে।

কুড়ুলগাছি মাঠপাড়া গ্রামের অপর এক চাষি জানান, ২বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। দেড় বিঘা জমির পাট কেটে গোবরা বিলের ব্রীজের সামনে ছোট্ট একটি ডোবায় জাগ দেওয়া হয়েছে এবং মেশিন দিয়ে পানির ব্যবস্থা করছি। বাকি জমির পাট বৃষ্টি হলেই কাটবো।

নতুন গ্রামের মমিনুল ইসলাম জানান, দেড় বিঘা জমির পাট কেটে জমিতে স্তুপ করে রেখে দিয়েছি। আশেপাশের খাল-বিলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকায় পচাতে দিতে পারছিনা। অতিবৃষ্টি হলে পাট জাগ দেয়ায় কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু এবছর বৃষ্টিপাত হয়েছে খুবই কম। কোথাও পানি নেই। এ অবস্থায় পাট কাটার সময় হলেও পাট জাগ দেওয়ার অসুবিধার কথা ভেবে পাট কাটতে পারছি না। পাট পচানোর সমস্যার কারণে এবার লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

একই গ্রামের রফিকুল জানান, তিনি ৩বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। পাট ভাল হয়েছে। বিঘা প্রতি ১২ থেকে ১৩ মন পাটের ফলন হবে। তবে এলাকায় পাট জাগ দেওয়ার পানি ও জায়গা সঙ্কট দেখা দেওয়ায় তাকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জাগ দেওয়ার পানি ও জায়গা সঙ্কটের কারণে তিনি জমির পাট কাটা শুরু করেননি। গত বছর পানি সঙ্কট ছিলোনা। গত বছরের মতন এবারো পাটের দাম ভালো পেলে মনে শান্তি পাবো। 

লক্ষীনারায়ণপুর গ্রামের সুমন জানান, অন্যান্যবার পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকায় পাটক্ষেতের পাশে রাস্তার ধারেই পাট পচন দেওয়া হয়। কিন্তু এবছরে বৃষ্টিপাত না থাকায় ধলার মাঠে আবাদকৃত প্রায় সকল কৃষকই পাট নিয়ে বিপদে রয়েছে।

কাষ্টদহ গ্রামের আব্দুল্লাহ বলেন, ১৬ কাঠা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। জাগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি না থাকায় এখনও পাট কাটতে পারিনি।

কল্যাণপুর গ্রামের সোহানুর রহমান জানান, পাট পচানোর জন্য পানির খুব সমস্যা, এখনো বুঝে উঠতে পারছিনা কোথায় জাগ দেওয়া যায়। এ কারণেই পাট কাটার অপেক্ষায় রয়েছি।

মাইলমারী গ্রামের আশাদুল ইসলাম জানান, কোথাও পানি না থাকায় পাট কেটে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। বৃষ্টি হলে পুকুরে জাগ দেবো।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র শাহা বলেন, ‘পাট চাষিরা তাদের জমির পাট কাটতে শুরু করেছে। চুয়াডাঙ্গায় বড় সমস্যা পাট পচানোর পানির অভাব। পানির অভাবে চাষিরা ভালভাবে পাট পচাতে পারেন না। আমরা চাষিদের কম ব্যয়ে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শ দিচ্ছি। এ পদ্ধতিতে পাট পচালে পাটের আঁশের মানও ভালো হয়। ভালো মানের পাট উৎপাদন করতে পারলে দামও ভালো পাওয়া যাবে। এতে তারা লাভবান হবেন। গত মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় পাটের আবাদ হয়েছিল ১৬ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে; এবার ২২ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার পাটের আবাদ ভাল হয়েছে। তবে অতিবৃষ্টি হলে চাষিদের জন্য আরও সুবিধা হতো।’