ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে দুই বউয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মোটরসাইকেল আগুন দিলেন স্বামী 

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪২:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুন ২০২২
  • / ১৪ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক: মেহেরপুরের গাংনীতে দুই বউয়ের মধ্যে ঝগড়া ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে প্রকাশ্যে নিজের মোটরসাইলে আগুন দিয়ে মনের কষ্ট দূর করলেন এক ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি। এসমসয় তিনি তাঁর একটি দোকান-ঘরও ভাঙচুর করেন। প্রকাশ্যে জনসম্মুখে মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে আলোচানায় আসা ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রির নাম গোলাম হোসেন (৩৫)। তিনি উপজেলার নবীনপুর গ্রামের মৃত মজিববর রহমানের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নওপাড়া বাজারে এমন ঘটনা ঘটে।

প্রত্যাক্ষদর্শী নওপাড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, বেশ কয়েকদিন গোলাম হোসেন বিমর্ষাবস্থায় দোকানে আসেন। ঠিক মতো কারো সাথে কথাও বলেন না। অনেকে তাঁর এমন বিষণ্নতা নিয়ে প্রশ্ন করলে পারিবারিকভাবে তিনি অশান্তিতে আছেন বলে জানান। তাঁর দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী আল্পনা। তাঁর তিন ছেলে। তাঁকে রেখে বছর দেড়েক আগে ভাটপাড়া আবাসনে সোনালী খাতুন নামের একজনকে বিয়ে করেন গোলাম হোসেন। সেখানেও তাঁর একটি ছেলে রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সংসারে গেলে দ্বিতীয় স্ত্রী ঝগড়া করে, আর দ্বিতীয় স্ত্রীর সংসারে গেলে প্রথম স্ত্রী ঝগড়া করে। এই নিয়ে সংসারে অশান্তি বইছে গোলাম হোসেনের।

নওপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী একলাচ হোসেন জানান, ‘আজ (গতকাল) দুপুরে দোকানে আসে গোলাম হোসেন। বিকেলে দোকান-ঘর ভাঙার শব্দ শুনে গিয়ে দেখি রাস্তায় মোটরসাইকেল ভাঙচুর করছে। আমরা ঠেকাতে গেলে লাঠি নিয়ে আমাদের ধাওয়া করে। পরে নিজের ব্যবহৃত আরকে ১০০ সিসি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।’ বাজারের ব্যবসায়ী মিলন হোসেন জানান, ‘আমরা বাজারেই ছিলাম। হঠাৎ কালো ধোয়া দেখে রাস্তায় গিয়ে দেখি মোটরসাইকেল জ্বলছে। পরে স্থানীয়রা গোলামকে আটকিয়ে রাখে এবং মোটরসাইকেল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।’

গোলাম হোসেনের বড় ছেলে রাজন হোসেন জানায়, ‘কয়েকদিন যাবত আমার দুই মাকে নিয়ে আমার বাবা খুব অশান্তিতে আছে। শুনেছি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে উন্মাদ হয়ে পড়ে। আমার মাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করায় আমার সৎ মা তাকে খুব কষ্ট দেয়। এই নিয়ে বাবার মন খারাপ। কারো সাথে কথাও বলছে না কয়েকদিন। যে মোটরসাইকেলটি আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, সেটি আমি ও আমার বাবা দুজনই ব্যবহার করতাম।’

গোলাম হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী সোনালী খাতুন জানান, ‘আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিয়ে করেছে, তার একটিও রাখেনি গোলাম। ফলে মাঝে মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। তবে নিজের মোটরসাইকেল পুড়িয়েছে এমন ঘটনা কেন ঘটিয়েছে তা জানি না।’

বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির আবুল বাসার জানান, সংসারে যা কিছুই হোক না কেন, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে এবং দোকান-ঘর ভাঙচুর করা ঠিক হয়নি। এতে বাজারের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তবে তিনি মানসিকভাবে সুস্থ আছেন কিনা পরিবারের কাছে খোঁজ নেওয়ার কথা জানান। এদিকে, দুই স্ত্রীর অত্যাচারে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনা এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

গাংনীতে দুই বউয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মোটরসাইকেল আগুন দিলেন স্বামী 

আপলোড টাইম : ০৯:৪২:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুন ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদক: মেহেরপুরের গাংনীতে দুই বউয়ের মধ্যে ঝগড়া ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে প্রকাশ্যে নিজের মোটরসাইলে আগুন দিয়ে মনের কষ্ট দূর করলেন এক ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি। এসমসয় তিনি তাঁর একটি দোকান-ঘরও ভাঙচুর করেন। প্রকাশ্যে জনসম্মুখে মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে আলোচানায় আসা ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রির নাম গোলাম হোসেন (৩৫)। তিনি উপজেলার নবীনপুর গ্রামের মৃত মজিববর রহমানের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নওপাড়া বাজারে এমন ঘটনা ঘটে।

প্রত্যাক্ষদর্শী নওপাড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, বেশ কয়েকদিন গোলাম হোসেন বিমর্ষাবস্থায় দোকানে আসেন। ঠিক মতো কারো সাথে কথাও বলেন না। অনেকে তাঁর এমন বিষণ্নতা নিয়ে প্রশ্ন করলে পারিবারিকভাবে তিনি অশান্তিতে আছেন বলে জানান। তাঁর দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী আল্পনা। তাঁর তিন ছেলে। তাঁকে রেখে বছর দেড়েক আগে ভাটপাড়া আবাসনে সোনালী খাতুন নামের একজনকে বিয়ে করেন গোলাম হোসেন। সেখানেও তাঁর একটি ছেলে রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সংসারে গেলে দ্বিতীয় স্ত্রী ঝগড়া করে, আর দ্বিতীয় স্ত্রীর সংসারে গেলে প্রথম স্ত্রী ঝগড়া করে। এই নিয়ে সংসারে অশান্তি বইছে গোলাম হোসেনের।

নওপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী একলাচ হোসেন জানান, ‘আজ (গতকাল) দুপুরে দোকানে আসে গোলাম হোসেন। বিকেলে দোকান-ঘর ভাঙার শব্দ শুনে গিয়ে দেখি রাস্তায় মোটরসাইকেল ভাঙচুর করছে। আমরা ঠেকাতে গেলে লাঠি নিয়ে আমাদের ধাওয়া করে। পরে নিজের ব্যবহৃত আরকে ১০০ সিসি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।’ বাজারের ব্যবসায়ী মিলন হোসেন জানান, ‘আমরা বাজারেই ছিলাম। হঠাৎ কালো ধোয়া দেখে রাস্তায় গিয়ে দেখি মোটরসাইকেল জ্বলছে। পরে স্থানীয়রা গোলামকে আটকিয়ে রাখে এবং মোটরসাইকেল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।’

গোলাম হোসেনের বড় ছেলে রাজন হোসেন জানায়, ‘কয়েকদিন যাবত আমার দুই মাকে নিয়ে আমার বাবা খুব অশান্তিতে আছে। শুনেছি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে উন্মাদ হয়ে পড়ে। আমার মাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করায় আমার সৎ মা তাকে খুব কষ্ট দেয়। এই নিয়ে বাবার মন খারাপ। কারো সাথে কথাও বলছে না কয়েকদিন। যে মোটরসাইকেলটি আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, সেটি আমি ও আমার বাবা দুজনই ব্যবহার করতাম।’

গোলাম হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী সোনালী খাতুন জানান, ‘আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিয়ে করেছে, তার একটিও রাখেনি গোলাম। ফলে মাঝে মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। তবে নিজের মোটরসাইকেল পুড়িয়েছে এমন ঘটনা কেন ঘটিয়েছে তা জানি না।’

বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির আবুল বাসার জানান, সংসারে যা কিছুই হোক না কেন, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে এবং দোকান-ঘর ভাঙচুর করা ঠিক হয়নি। এতে বাজারের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তবে তিনি মানসিকভাবে সুস্থ আছেন কিনা পরিবারের কাছে খোঁজ নেওয়ার কথা জানান। এদিকে, দুই স্ত্রীর অত্যাচারে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনা এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।