ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে কাঁটা তারে বন্দী অর্ধশত পরিবার!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫০:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০২২
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন: শতবছর ধরে যে রাস্তা দিয়ে চলাচল করেছে অর্ধশত পরিবার, যে রাস্তাটি সরকারিভাবে ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, এবার সেই রাস্তায় দেওয়া হয়েছে কাঁটা তারের বেড়া। রাস্তার পাশের জমির মালিক কাঁটা তারের বেড়া দেওয়ায় গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন তারা। তবে উভয়পক্ষের সাথে দেন-দরবার করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান। ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চেংগাড়া বাজারের পশ্চিম পাশে ঠিক রাস্তার কোল ঘেষে দেওয়া আছে কাঁটা তারের বেড়া। বেড়াটি এমনভাবে দেওয়া আছে যেখান দিয়ে কারো বের হওয়া দুষ্কর। বেড়ার ওপারে বসত করছেন অন্তত ৫০টি পরিবার। যাদের অধিকাংশই কৃষিকাজে জড়িত। আলাপকালে ভুক্তভোগীরা জানালেন তাঁদের দুর্ভোগের কথা।

কাঁটা তারের বেড়ায় আটকে পড়া শহিদুল ইসলাম জানান, জন্মের পর থেকে তিনি দেখেছেন তাঁর পূর্বপুরুষরা ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতেন। জমির ফসল আনা-নেওয়া ছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্য সবই করা হত ওই রাস্তা দিয়ে। বামন্দী গ্রামের হাফিজুল ক্রয়সূত্রে জমির মালিক দাবি করে রাস্তাসহ কাঁটা তারের বেড়া দেন। ফলে ওখানকার অর্ধশত পরিবারের যাতায়াতসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস জানান, জমিতে বেড়া দেওয়ার সময় হাফিজুলকে অনেক অনুনয়-বিনয় করে বাড়ি থেকে বের হবার জন্য পথ চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি শোনেননি। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি কাঁটা তারের বেড়া দেন। এতে করে লোকজন বাড়ির পোষা গবাদিপশু আনা-নেওয়া করতে পারছেন না। আবার ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজেও যেতে পারছেন না। একরকম অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি ও প্রতিবেশীরা।

শহিদুলের স্ত্রী আলেয়া খাতুন জানান, বাড়ি থেকে বের হবার জন্য এক ফুট জায়গাও রাখেনি হাফিজুল। অন্যের বাড়ির ওপর দিয়েও কোথাও যাবার জায়গা নেই। অবরুদ্ধ পরিবারের লোকজন স্থানীয় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পাশার শরণাপন্ন হলে তিনি আসেন ও সমাধানের চেষ্টা করেন। সর্বশেষ কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন, তা জানানো হয়নি। জমির মালিক হাফিজুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।

ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পাশা জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে বিষয়টি অবগত হয়েছেন। ইতঃমধ্যে জমির মালিকের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি।

 

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মেহেরপুরে কাঁটা তারে বন্দী অর্ধশত পরিবার!

আপলোড টাইম : ০৯:৫০:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন: শতবছর ধরে যে রাস্তা দিয়ে চলাচল করেছে অর্ধশত পরিবার, যে রাস্তাটি সরকারিভাবে ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, এবার সেই রাস্তায় দেওয়া হয়েছে কাঁটা তারের বেড়া। রাস্তার পাশের জমির মালিক কাঁটা তারের বেড়া দেওয়ায় গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন তারা। তবে উভয়পক্ষের সাথে দেন-দরবার করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান। ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চেংগাড়া বাজারের পশ্চিম পাশে ঠিক রাস্তার কোল ঘেষে দেওয়া আছে কাঁটা তারের বেড়া। বেড়াটি এমনভাবে দেওয়া আছে যেখান দিয়ে কারো বের হওয়া দুষ্কর। বেড়ার ওপারে বসত করছেন অন্তত ৫০টি পরিবার। যাদের অধিকাংশই কৃষিকাজে জড়িত। আলাপকালে ভুক্তভোগীরা জানালেন তাঁদের দুর্ভোগের কথা।

কাঁটা তারের বেড়ায় আটকে পড়া শহিদুল ইসলাম জানান, জন্মের পর থেকে তিনি দেখেছেন তাঁর পূর্বপুরুষরা ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতেন। জমির ফসল আনা-নেওয়া ছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্য সবই করা হত ওই রাস্তা দিয়ে। বামন্দী গ্রামের হাফিজুল ক্রয়সূত্রে জমির মালিক দাবি করে রাস্তাসহ কাঁটা তারের বেড়া দেন। ফলে ওখানকার অর্ধশত পরিবারের যাতায়াতসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস জানান, জমিতে বেড়া দেওয়ার সময় হাফিজুলকে অনেক অনুনয়-বিনয় করে বাড়ি থেকে বের হবার জন্য পথ চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি শোনেননি। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি কাঁটা তারের বেড়া দেন। এতে করে লোকজন বাড়ির পোষা গবাদিপশু আনা-নেওয়া করতে পারছেন না। আবার ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজেও যেতে পারছেন না। একরকম অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি ও প্রতিবেশীরা।

শহিদুলের স্ত্রী আলেয়া খাতুন জানান, বাড়ি থেকে বের হবার জন্য এক ফুট জায়গাও রাখেনি হাফিজুল। অন্যের বাড়ির ওপর দিয়েও কোথাও যাবার জায়গা নেই। অবরুদ্ধ পরিবারের লোকজন স্থানীয় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পাশার শরণাপন্ন হলে তিনি আসেন ও সমাধানের চেষ্টা করেন। সর্বশেষ কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন, তা জানানো হয়নি। জমির মালিক হাফিজুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।

ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পাশা জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে বিষয়টি অবগত হয়েছেন। ইতঃমধ্যে জমির মালিকের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি।