ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুলছাত্রীর মৃত্যু যন্ত্রণা দেখল স্বজনরা!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০১:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০২২
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলা নতুন কিছু নয়। তাদের চরম গাফিলতি ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে প্রতিনিয়ত মানুষ মারা গেলেও কোনো জবাবদিহিতা নেই। রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী কোনো রোগী আসলেই চাপ কমানোর জন্য অহরহ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ফরিদপুর ও ঢাকায়। ফলে অনেক হতদরদ্রি রোগী ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে মারা যাচ্ছে। সর্বশেষ হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কাচারীতোলা গ্রামের ইউনুস আলীর একমাত্র মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী লিলি খাতুন সাপে কেটে গত শনিবার দিনগত রাতে। রাতেই তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জরুরি বিভাগ থেকে তাকে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।

রোস্টার ডিউটির তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার দিন রাতে ডিউটিতে ছিলেন ডা. রাজিব। ব্যবস্থাপত্রে অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন দেওয়ার কোনো নির্দেশনা না থাকায় ডিউটি নার্স অ্যান্টিভেনাম দিতে পারেনি। ফলে মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে কুষ্টিয়া হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। লিলির ভাই আব্দুল আজিজ অভিযোগ করেন, বারবার অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও নার্স-ডাক্তারের অনুমতি না থাকায় দেননি। ফলে কুষ্টিয়া হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই মারা যায় লিলি। চোখের সামনে বোনের মৃত্যু যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। এ ঘটনায় তার স্বজনরা ক্ষুদ্ধ হন। বিষয়টি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে জানানো হলেও কোনো কর্ণপাত করেননি বলে রোগীর স্বজনরা জানান।

ঘটনার দিন রাতে মেডিসিন ওয়ার্ডে ডিউটিরত একাধিক নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডিউটি ডাক্তার ব্যবস্থাপত্রে অ্যান্টিভেনাম উল্লেখ করেনি। যে কারণে লিলিকে ইনজেকশন পুশ করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জাকির হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম রিপন তাদের বকাঝকা করেছেন বলেও ওই নার্সরা উল্লেখ করেন। অ্যান্টিভেনাম মজুদ থাকার পরও কেন সাপে কাটা রোগীকে দেওয়া হলো না বিষয়টি জানতে ঘটনার দিন রাতে ডিউটিরত চিকিৎসক ডা. রাজিবের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে গতকাল সোমবার বিকেলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ফোন ধরেননি তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলামও।

অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালে যোগদানকৃত চিকিৎসকরা বেশির ভাগই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ছেড়াকাটা রোগী ছাড়া তাদের ভারি চিকিৎসা দেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। তাছাড়া রাতে একজন মুমূর্ষু রোগীর জন্য কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওয়া দুস্কর বলেও ভুক্তভোগী রোগীরা অভিযোগ করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

স্কুলছাত্রীর মৃত্যু যন্ত্রণা দেখল স্বজনরা!

আপলোড টাইম : ১০:০১:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০২২

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলা নতুন কিছু নয়। তাদের চরম গাফিলতি ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে প্রতিনিয়ত মানুষ মারা গেলেও কোনো জবাবদিহিতা নেই। রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী কোনো রোগী আসলেই চাপ কমানোর জন্য অহরহ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ফরিদপুর ও ঢাকায়। ফলে অনেক হতদরদ্রি রোগী ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে মারা যাচ্ছে। সর্বশেষ হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কাচারীতোলা গ্রামের ইউনুস আলীর একমাত্র মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী লিলি খাতুন সাপে কেটে গত শনিবার দিনগত রাতে। রাতেই তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জরুরি বিভাগ থেকে তাকে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।

রোস্টার ডিউটির তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার দিন রাতে ডিউটিতে ছিলেন ডা. রাজিব। ব্যবস্থাপত্রে অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন দেওয়ার কোনো নির্দেশনা না থাকায় ডিউটি নার্স অ্যান্টিভেনাম দিতে পারেনি। ফলে মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে কুষ্টিয়া হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। লিলির ভাই আব্দুল আজিজ অভিযোগ করেন, বারবার অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও নার্স-ডাক্তারের অনুমতি না থাকায় দেননি। ফলে কুষ্টিয়া হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই মারা যায় লিলি। চোখের সামনে বোনের মৃত্যু যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। এ ঘটনায় তার স্বজনরা ক্ষুদ্ধ হন। বিষয়টি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে জানানো হলেও কোনো কর্ণপাত করেননি বলে রোগীর স্বজনরা জানান।

ঘটনার দিন রাতে মেডিসিন ওয়ার্ডে ডিউটিরত একাধিক নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডিউটি ডাক্তার ব্যবস্থাপত্রে অ্যান্টিভেনাম উল্লেখ করেনি। যে কারণে লিলিকে ইনজেকশন পুশ করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জাকির হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম রিপন তাদের বকাঝকা করেছেন বলেও ওই নার্সরা উল্লেখ করেন। অ্যান্টিভেনাম মজুদ থাকার পরও কেন সাপে কাটা রোগীকে দেওয়া হলো না বিষয়টি জানতে ঘটনার দিন রাতে ডিউটিরত চিকিৎসক ডা. রাজিবের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে গতকাল সোমবার বিকেলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ফোন ধরেননি তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলামও।

অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালে যোগদানকৃত চিকিৎসকরা বেশির ভাগই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ছেড়াকাটা রোগী ছাড়া তাদের ভারি চিকিৎসা দেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। তাছাড়া রাতে একজন মুমূর্ষু রোগীর জন্য কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওয়া দুস্কর বলেও ভুক্তভোগী রোগীরা অভিযোগ করেন।