ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিন ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৭:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ মে ২০২২
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, গাংনী: মেহেরপুরের গাংনীতে তিন ফসলী জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করছেন এক ব্যবসায়ী। এতে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। খাদ্য ফসল উৎপাদনের বিরুপ প্রভাবের আশঙ্কায় প্রতিবাদী হয়ে উঠছেন চাষিরা। গতকাল সোমবার অবৈধ ইটভাটা নির্মান বন্ধের দাবিতে গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে প্রতিবাদী অবস্থান ও ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। এসময় চাষিদের এ দাবির সাথে একাত্ত্বতা প্রকাশ করেন গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক ও গাংনী পৌরসভার মেয়র আহম্মেদ আলী। নেতৃবৃন্দ চাষিদের সাথে নিয়ে বিষয়টি সমাধানে উপজেলা নির্বাহী অফিসারে সাথে মতবিনিময় করেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

চাষিরা জানান, থানাপাড়ার পরে বোলালিয়া মাঠে থানাপাড়ার মোমিন নামের এক ব্যক্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজলের সহযোগিতায় ইটভাটা নির্মাণের প্রক্রিয়া করছেন। সেখানে গেল কয়েকদিন ধরে ইট ফেলা হচ্ছে। চাষিরা তাদের নিষেধ করলেও তাতে কর্ণপাত করছেন না ইটভাটা স্থাপনকারীরা।

গাংনী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাফিজুল ইসলাম জানান, গাংনী পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেশিরভাগ মানুষের আবাদ এই বোয়ালিয়া মাঠে। এখানে ইটভাটা নির্মাণ করা হলে ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আবাদ বন্ধ হলে এ অঞ্চলের মানুষের খাদ্যের চাহিদায় বিরাট প্রভাব পড়বে। তাই ইটভাটা নির্মান বন্ধ না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। গাংনীতে তিন ফসলী জমিতে ইটভাটা নির্মাণ বন্ধের দাবিতে চাষীরা তাই ফুঁসে উঠেছেন।

জানা গেছে, গাংনীর বোয়ালিয়া মাঠ এলাকা এ অঞ্চলের মানুষের আবাদের জন্য সবচেয়ে বড় ফসলি মাঠ। এখানে গাংনী থানাপাড়া, বাজারপাড়া, ভিটাপাড়া ও ধানখোলাসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ খাদ্য ফসল আবাদ করেন। তিন ফসলি আবাদি জমি হিসেবে এই মাঠ চাষিদের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে আছে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন বলেন, আমার বরারবর একটি আবেদন দিয়েছেন এলাকাবাসী। আবেদনটি গ্রহণ করেছি এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মৌসুমী খানম জানান, ইটভাটা স্থাপনকারীদের কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এখানে ইটভাটা করবে না মর্মে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর পরেও যদি তারা ইটভাটা স্থাপন করতে চায় তাহলে আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে বন্ধ করা হবে।

গাংনীতে তিন ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মান বন্ধের দাবির বিষয়ে গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী বলেন, ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপন দণ্ডনীয় অপরাধ। চাষিদের দাবির সাথে আমরা একমত পোষণ করেছি। ইট ভাটা বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউএনকে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।

গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক বলেন, জনগণের ক্ষতি করে কেউ ইটভাটা স্থাপন করতে পারবে না। আমরা জনগণের পক্ষে। তাছাড়া ইটভাটার কালো ধোয়ার ফলে পরিবেশ ও পার্শবর্তী জমির ফসল নষ্ট হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। গাংনীতে তিন ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ বন্ধ করা হবেই। এবিষয়ে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারী করেন এম এ খালেক।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

তিন ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ!

আপলোড টাইম : ০৯:২৭:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ মে ২০২২

প্রতিবেদক, গাংনী: মেহেরপুরের গাংনীতে তিন ফসলী জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করছেন এক ব্যবসায়ী। এতে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। খাদ্য ফসল উৎপাদনের বিরুপ প্রভাবের আশঙ্কায় প্রতিবাদী হয়ে উঠছেন চাষিরা। গতকাল সোমবার অবৈধ ইটভাটা নির্মান বন্ধের দাবিতে গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে প্রতিবাদী অবস্থান ও ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। এসময় চাষিদের এ দাবির সাথে একাত্ত্বতা প্রকাশ করেন গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক ও গাংনী পৌরসভার মেয়র আহম্মেদ আলী। নেতৃবৃন্দ চাষিদের সাথে নিয়ে বিষয়টি সমাধানে উপজেলা নির্বাহী অফিসারে সাথে মতবিনিময় করেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

চাষিরা জানান, থানাপাড়ার পরে বোলালিয়া মাঠে থানাপাড়ার মোমিন নামের এক ব্যক্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজলের সহযোগিতায় ইটভাটা নির্মাণের প্রক্রিয়া করছেন। সেখানে গেল কয়েকদিন ধরে ইট ফেলা হচ্ছে। চাষিরা তাদের নিষেধ করলেও তাতে কর্ণপাত করছেন না ইটভাটা স্থাপনকারীরা।

গাংনী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাফিজুল ইসলাম জানান, গাংনী পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেশিরভাগ মানুষের আবাদ এই বোয়ালিয়া মাঠে। এখানে ইটভাটা নির্মাণ করা হলে ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আবাদ বন্ধ হলে এ অঞ্চলের মানুষের খাদ্যের চাহিদায় বিরাট প্রভাব পড়বে। তাই ইটভাটা নির্মান বন্ধ না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। গাংনীতে তিন ফসলী জমিতে ইটভাটা নির্মাণ বন্ধের দাবিতে চাষীরা তাই ফুঁসে উঠেছেন।

জানা গেছে, গাংনীর বোয়ালিয়া মাঠ এলাকা এ অঞ্চলের মানুষের আবাদের জন্য সবচেয়ে বড় ফসলি মাঠ। এখানে গাংনী থানাপাড়া, বাজারপাড়া, ভিটাপাড়া ও ধানখোলাসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ খাদ্য ফসল আবাদ করেন। তিন ফসলি আবাদি জমি হিসেবে এই মাঠ চাষিদের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে আছে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন বলেন, আমার বরারবর একটি আবেদন দিয়েছেন এলাকাবাসী। আবেদনটি গ্রহণ করেছি এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মৌসুমী খানম জানান, ইটভাটা স্থাপনকারীদের কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এখানে ইটভাটা করবে না মর্মে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর পরেও যদি তারা ইটভাটা স্থাপন করতে চায় তাহলে আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে বন্ধ করা হবে।

গাংনীতে তিন ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মান বন্ধের দাবির বিষয়ে গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী বলেন, ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপন দণ্ডনীয় অপরাধ। চাষিদের দাবির সাথে আমরা একমত পোষণ করেছি। ইট ভাটা বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউএনকে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।

গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক বলেন, জনগণের ক্ষতি করে কেউ ইটভাটা স্থাপন করতে পারবে না। আমরা জনগণের পক্ষে। তাছাড়া ইটভাটার কালো ধোয়ার ফলে পরিবেশ ও পার্শবর্তী জমির ফসল নষ্ট হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। গাংনীতে তিন ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ বন্ধ করা হবেই। এবিষয়ে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারী করেন এম এ খালেক।