প্রতিবেদক, গাংনী:
মেহেরপুরের গাংনীতে সুমি আক্তার বন্যা (২৫) নামের এক প্রবাসীর স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের আলম বাজারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত বন্যা ওই গ্রামের আব্দুল হান্নানের মেয়ে ও সাহেবনগর গ্রামের প্রবাসী খাইরুল ইসলামের স্ত্রী। বন্যার ছয় বছরের একটি শিশু পুত্র রয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

নিহত বন্যার মা সুফিয়া খাতুন জানান, ‘স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে আনিছুর রহমান নামের এক ডিস ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে বন্যা। স্বামীর বাড়িতে সপ্তাহ খানেক আগে ওই পরকীয়া প্রেমিককে গোপনে ঘরে লুকিয়ে রাখায় বাড়ির লোকজন বিষয়টি দেখে ফেলে তাকে মারধর করে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হলে বন্যা আনিছুরকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু আনিসুর বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করে। বিয়ের বিষয়টি নিয়ে বন্যা ও আনিছুরের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। একপর্যায়ে রাগে ক্ষোভে টিনের ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে আমার মেয়ে।’

এদিকে, পরিবারের সদস্যরা প্রথমে বন্যার আত্মহত্যার কারণ আড়াল করে পেটের পিড়ায় সে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করে। পরবর্তীতে পরকিয়ার জেরে আত্মহত্যার বিষয়টি স্বীকার করে নিহত বন্যার মা। বন্যার পরকিয়া প্রেমিকের নামে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এবিষয়ে জানতে চেয়ে বন্যার পরকীয়া প্রেমিক আনিছুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা এসআই জহির রায়হান জানান, ‘প্রাথমিক তদন্ত ও বন্যার মা সুফিয়া খাতুনের জবানবন্দীতে আত্মহত্যার কারণ উঠে এসেছে। পরকীয়ার কারণেই এ আত্মহত্যা বলে নিহতের মা জানিয়েছেন। লাশের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলা যাবে।’
এবিষয়ে গাংনীর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এবিষয়ে কেউ এখনও পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’