ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে গরুর গাড়ির দৌঁড় প্রতিযোগিতা

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ১০:৩৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২
  • / ৫৩ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেতাই গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম-বাংলার ঐহিত্যবাহী গরুর গাড়ির দৌঁড় প্রতিযোগিতা। যা দেখতে ভিড় করেছিল হাজার হাজার দর্শক। প্রতিযোগিতাকে ঘিরে বেতাই গ্রাম যেন পরিণত হয়েছিল উৎসবের নগরীতে। ২৫টি দল এ খেলায় অংশগ্রহণ করে।

গতকাল রোববার সকালে বেতাই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কনকনে শীত আর বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই সকাল থেকে বেতাই গ্রামের মাঠে হাজির হয় ঝিনাইদসহ আশপাশের জেলার হাজার হাজার মানুষ। ভ্যান, রিকশা মোটরসাইকেলসহ নানা বাহনে সেখানে জড়ো হয় নারী-শিশু বয়োবৃদ্ধরা। মঞ্চ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে গরু ও গাড়ি নিয়ে ৬টি সারিতে চলে দৌঁড়ের প্রস্তুতি। বাঁশিতে ফুৎকার দেওয়ার সাথে সাথে গাড়োয়ানের হাতের ছোঁয়ায় যেন মুহূর্তে পাল্টে যায় চরিত্র। একে অপরকে পেছনে ফেলতে ছুটতে থাকে বিদ্যুৎ গতিতে। যা দেখে উচ্ছ্বসিত হাজার হাজার দর্শক।

ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা অন্তর মাহমুদ নামে এক যুবক বলেন, ‘এ অঞ্চলের ঐহিত্য গরুর গাড়ির দৌঁড় প্রতিযোগিতা আমরা অনেক আগে থেকে শুনে আসছি, এখানে এই আয়োজন করা হয়। আমরা বন্ধুরা মিলে দেখতে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে খেলা দেখতে। গ্রামের মানুষের মাঝে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। খেলাটি সত্যিই উপভোগ্য। এ জন্য আয়োজকদের আমরা ধন্যবাদ জানায়।’

খেলায় অংশ নেওয়া ঝিনাইদহ সদর উপজেলার জিয়ালা গ্রামে কবির হোসেন বলেন, ‘আমরা সারা বছর চাষাবাদ করি। বছরের এই সময়টা অপেক্ষায় থাকি এই খেলায় অংশ নেওয়ার জন্য। মানুষ আমাদের খেলা দেখে আনন্দ পায়, তা দেখে আমরাও আনন্দ পায়। আনন্দ পাওয়ার জন্যই আমরা দৌঁড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিই।’

এ ব্যাপারে আয়োজক গান্না ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আতিকুল হাসান মাসুম বলেন, ‘গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষকে আনন্দ দেওয়া আর গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতেই আমরা প্রতিবছর এই ধরণের আয়োজন করে থাকি। শীত আর বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ খেলা দেখতে এখানে এসেছেন, তাতেই প্রমাণ হয় এটি মানুষকে কতটা আনন্দ দেয়। আমরা আশা করি, আগামীতে আরও বড় পরিসরে এই আয়োজন করতে পারব।’

দিনভর প্রতিযোগিতা শেষে সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম হয় যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নজরুল মুন্সি। পুরস্কার হিসেবে তাঁকে দেওয়া হয় টেলিভিশন। ২য় হয় মহেশপুর উপজেলার দোলন হোসেন। তাঁকে দেওয়া হয় একটি বাইসাইকেল ও ৩য় হয়ে ফ্যান পুরস্কার পান যশোরের রহমত আলী।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহে গরুর গাড়ির দৌঁড় প্রতিযোগিতা

আপলোড টাইম : ১০:৩৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেতাই গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম-বাংলার ঐহিত্যবাহী গরুর গাড়ির দৌঁড় প্রতিযোগিতা। যা দেখতে ভিড় করেছিল হাজার হাজার দর্শক। প্রতিযোগিতাকে ঘিরে বেতাই গ্রাম যেন পরিণত হয়েছিল উৎসবের নগরীতে। ২৫টি দল এ খেলায় অংশগ্রহণ করে।

গতকাল রোববার সকালে বেতাই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কনকনে শীত আর বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই সকাল থেকে বেতাই গ্রামের মাঠে হাজির হয় ঝিনাইদসহ আশপাশের জেলার হাজার হাজার মানুষ। ভ্যান, রিকশা মোটরসাইকেলসহ নানা বাহনে সেখানে জড়ো হয় নারী-শিশু বয়োবৃদ্ধরা। মঞ্চ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে গরু ও গাড়ি নিয়ে ৬টি সারিতে চলে দৌঁড়ের প্রস্তুতি। বাঁশিতে ফুৎকার দেওয়ার সাথে সাথে গাড়োয়ানের হাতের ছোঁয়ায় যেন মুহূর্তে পাল্টে যায় চরিত্র। একে অপরকে পেছনে ফেলতে ছুটতে থাকে বিদ্যুৎ গতিতে। যা দেখে উচ্ছ্বসিত হাজার হাজার দর্শক।

ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা অন্তর মাহমুদ নামে এক যুবক বলেন, ‘এ অঞ্চলের ঐহিত্য গরুর গাড়ির দৌঁড় প্রতিযোগিতা আমরা অনেক আগে থেকে শুনে আসছি, এখানে এই আয়োজন করা হয়। আমরা বন্ধুরা মিলে দেখতে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে খেলা দেখতে। গ্রামের মানুষের মাঝে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। খেলাটি সত্যিই উপভোগ্য। এ জন্য আয়োজকদের আমরা ধন্যবাদ জানায়।’

খেলায় অংশ নেওয়া ঝিনাইদহ সদর উপজেলার জিয়ালা গ্রামে কবির হোসেন বলেন, ‘আমরা সারা বছর চাষাবাদ করি। বছরের এই সময়টা অপেক্ষায় থাকি এই খেলায় অংশ নেওয়ার জন্য। মানুষ আমাদের খেলা দেখে আনন্দ পায়, তা দেখে আমরাও আনন্দ পায়। আনন্দ পাওয়ার জন্যই আমরা দৌঁড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিই।’

এ ব্যাপারে আয়োজক গান্না ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আতিকুল হাসান মাসুম বলেন, ‘গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষকে আনন্দ দেওয়া আর গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতেই আমরা প্রতিবছর এই ধরণের আয়োজন করে থাকি। শীত আর বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ খেলা দেখতে এখানে এসেছেন, তাতেই প্রমাণ হয় এটি মানুষকে কতটা আনন্দ দেয়। আমরা আশা করি, আগামীতে আরও বড় পরিসরে এই আয়োজন করতে পারব।’

দিনভর প্রতিযোগিতা শেষে সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম হয় যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নজরুল মুন্সি। পুরস্কার হিসেবে তাঁকে দেওয়া হয় টেলিভিশন। ২য় হয় মহেশপুর উপজেলার দোলন হোসেন। তাঁকে দেওয়া হয় একটি বাইসাইকেল ও ৩য় হয়ে ফ্যান পুরস্কার পান যশোরের রহমত আলী।