ইপেপার । আজ বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে রেজাউল হত্যায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ জানুয়ারী ২০২২
  • / ৩০ বার পড়া হয়েছে

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভিটাপাড়া গ্রামের রেজাউল হত্যা মামলায় ছয়জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন। রায়ে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাস কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, গাংনী থানাপাড়ার আব্দুল মজিদের ছেলে রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদ সেন্টার পাড়ার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মাহমুদ হাসান ওরফে রিপন ওরফে রবিনহুড, গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া মাইলমারি গ্রামের নয়মুদ্দিনের ছেলে আব্দুল জব্বার, হিজলবাড়িয়া গ্রামের বারিকের ছেলে বিল্লাল, মালসাদহ গ্রামের অহিল উদ্দিনের ছেলে হোসেন আলী ওরফে বোমা হোসেন এবং গাংনী বাজার পাড়ার আজগর কসাইয়ের ছেলে আব্দুল কাদের ওরফে সুমন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে গাংনী উপজেলার ভিটাপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রেজাউল হক তার নতুন ইটভাটার কাজ শুরু করতে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু রাতে বাড়ি ফিরতে দেরি দেখে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এক পর্যায়ে তৎকালীন কমিশনার আলী আজগরের ইটভাটা থেকে ৩০০ গজ দূরে একটি মেহগনি গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে গাংনী থানা পুলিশ রেজাউল হকের লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি মেহেরপুরে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় রেজাউল হকের স্ত্রী হাসিনা বানু গাংনী থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় উপরোক্ত ছয়জন ছাড়াও আড়পাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আখতারুজ্জামান ওরফে বাবু, জালশুকা গ্রামের তাহার উদ্দিনের ছেলে জিয়ারুল, আড়পাড়া গ্রামের লাল চাঁদের ছেলে মজনু, মালসাদহ গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে আবুল কালাম, হাড়িয়াদহ গ্রামের নুর ফকিরের ছেলে খাজা এবং সানঘাট গ্রামের ওয়াদুদ আলীর ছেলে আবুল কালামকে আসামি করা হয়। ১২ আসামির চারজন আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনীর র‌্যাব-৬-এর এসআই বাবুল মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে আসামি রফিকুল ইসলাম, মাহমুদ হাসান ওরফে রিপন ওরফে রবিনহুড, আব্দুল জব্বার, বিল্লাল, হোসেন আলী ওরফে বোমা হোসেন ও আব্দুল কাদের ওরফে সুমনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্ত হোসেন আলী পলাতক থাকায় আটকের দিন থেকে তার সাজা শুরু হবে। মামলার অন্যান্য আসামি- আখতারুজ্জামান ওরফে বাবু, জিয়ারুল ইসলাম, মজনু, আবুল কালাম, খাজা ও আবুল কালাম ওরফে শান্তর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

গাংনীতে রেজাউল হত্যায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

আপলোড টাইম : ১০:৫৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ জানুয়ারী ২০২২

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভিটাপাড়া গ্রামের রেজাউল হত্যা মামলায় ছয়জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন। রায়ে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাস কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, গাংনী থানাপাড়ার আব্দুল মজিদের ছেলে রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদ সেন্টার পাড়ার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মাহমুদ হাসান ওরফে রিপন ওরফে রবিনহুড, গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া মাইলমারি গ্রামের নয়মুদ্দিনের ছেলে আব্দুল জব্বার, হিজলবাড়িয়া গ্রামের বারিকের ছেলে বিল্লাল, মালসাদহ গ্রামের অহিল উদ্দিনের ছেলে হোসেন আলী ওরফে বোমা হোসেন এবং গাংনী বাজার পাড়ার আজগর কসাইয়ের ছেলে আব্দুল কাদের ওরফে সুমন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে গাংনী উপজেলার ভিটাপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রেজাউল হক তার নতুন ইটভাটার কাজ শুরু করতে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু রাতে বাড়ি ফিরতে দেরি দেখে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এক পর্যায়ে তৎকালীন কমিশনার আলী আজগরের ইটভাটা থেকে ৩০০ গজ দূরে একটি মেহগনি গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে গাংনী থানা পুলিশ রেজাউল হকের লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি মেহেরপুরে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় রেজাউল হকের স্ত্রী হাসিনা বানু গাংনী থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় উপরোক্ত ছয়জন ছাড়াও আড়পাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আখতারুজ্জামান ওরফে বাবু, জালশুকা গ্রামের তাহার উদ্দিনের ছেলে জিয়ারুল, আড়পাড়া গ্রামের লাল চাঁদের ছেলে মজনু, মালসাদহ গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে আবুল কালাম, হাড়িয়াদহ গ্রামের নুর ফকিরের ছেলে খাজা এবং সানঘাট গ্রামের ওয়াদুদ আলীর ছেলে আবুল কালামকে আসামি করা হয়। ১২ আসামির চারজন আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনীর র‌্যাব-৬-এর এসআই বাবুল মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে আসামি রফিকুল ইসলাম, মাহমুদ হাসান ওরফে রিপন ওরফে রবিনহুড, আব্দুল জব্বার, বিল্লাল, হোসেন আলী ওরফে বোমা হোসেন ও আব্দুল কাদের ওরফে সুমনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্ত হোসেন আলী পলাতক থাকায় আটকের দিন থেকে তার সাজা শুরু হবে। মামলার অন্যান্য আসামি- আখতারুজ্জামান ওরফে বাবু, জিয়ারুল ইসলাম, মজনু, আবুল কালাম, খাজা ও আবুল কালাম ওরফে শান্তর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।