ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহ ও হরিণাকুণ্ডুতে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৫:৩৩:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৩৬ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বিভিন্ন স্থানে হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ডেফলবাড়িয়া গ্রামে বিজয়ী ও পরাজিত মেম্বর প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। সদর উপজেলার দোগাছি ভোট কেন্দ্রে আরও একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। হরিশংকপুর ইউনিয়নের বাকড়ী গ্রামে একটি কমলা বাগান লুটপাট করা হয়েছে। বাড়ি ছেড়েছে একাধিক পরিবার। নির্বাচনের রাতে ও গতকাল সোমবার এসব ঘটনা ঘটে।

এছাড়াও জেলার হরিণকণ্ডুু উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের হিজলী গ্রামে আব্দুল হাকিম নামে এক মেম্বর প্রার্থীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ডেফলবাড়ীয়া গ্রামে রোববার চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচিন হন জয়নুদ্দিন। সোমবার সকালে জয়নুদ্দিনের সমর্থক আশরাফুল ইসলাম সাহেব বাজারে গেলে পরাজিত মেম্বর প্রার্থী কলিম উদ্দিনের সমর্থকরা তাকে মারধর করে। এ ঘটনার জের ধরে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়।

দোগাছি কমিউনিটি সেন্টারের ভোট কেন্দ্রে ভোট গননা শেষে রেজাল্ট দিতে দেরি হওয়ায় গ্রামবাসি ভোট কেন্দ্রে হামলা চালায়। মোরগ মার্কার সমর্থকরা প্রথমে কেন্দ্রে ইটপাটকেল ও পরে দলবদ্ধভাবে কেন্দ্রের মধ্যে প্রবেশ করতে চাইলে আনসার সদস্যরা ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালায়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

দায়িত্বরত আনসার কমান্ডার আলমগীর হোসেন জানান, ‘হঠাত করেই গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে ষ্ট্রাইকিং ফোর্স এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। হামলার সময় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভীত হয়ে পড়েন।

এদিকে হরিণকুন্ডু উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের হিজলী গ্রামের মেম্বর প্রার্থী আব্দুল হাকিম রোববার রাত ৯টার দিকে পলিয়ানপুর গ্রামে ঝন্টুর চায়ের দোকানে চা পান করছিলেন। এ সময় অপর প্রার্থী আব্দুল আলীম তার সহযোগী রানা ও সোহাগকে সঙ্গে নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। হামলায় তার মুখমন্ডল রক্তাক্ত জখম হয়। তিনি এ বিষয়ে হরিণাকুন্ডুর রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনো কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার (ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, ‘ঝিনাইদহ সদরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আহতদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানূগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

অপরদিকে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণপুর গ্রামে বিজয়ী মেম্বর প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। গত রোববার রাতে একই গ্রামের জাহিদুল মোল্লার বাড়ি ও ফারুক হোসেনের দোকান ভাঙচুর করা হয়।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে গত রোববারের চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচিন হন সোহেল রানা। ওই রাতেই পরাজিত আতিয়ার রহমান মেম্বর প্রার্থীর সমর্থক আলী রশিদের নেতৃত্বে বিজয়ী সোহেল রানার সমর্থক জাহিদুল মোল্লার বাড়ি ও ফারুক হোসেনের দোকান ভাঙচুর করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়।

এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহ ও হরিণাকুণ্ডুতে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা

আপলোড টাইম : ০৫:৩৩:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১

ঝিনাইদহে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বিভিন্ন স্থানে হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ডেফলবাড়িয়া গ্রামে বিজয়ী ও পরাজিত মেম্বর প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। সদর উপজেলার দোগাছি ভোট কেন্দ্রে আরও একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। হরিশংকপুর ইউনিয়নের বাকড়ী গ্রামে একটি কমলা বাগান লুটপাট করা হয়েছে। বাড়ি ছেড়েছে একাধিক পরিবার। নির্বাচনের রাতে ও গতকাল সোমবার এসব ঘটনা ঘটে।

এছাড়াও জেলার হরিণকণ্ডুু উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের হিজলী গ্রামে আব্দুল হাকিম নামে এক মেম্বর প্রার্থীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ডেফলবাড়ীয়া গ্রামে রোববার চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচিন হন জয়নুদ্দিন। সোমবার সকালে জয়নুদ্দিনের সমর্থক আশরাফুল ইসলাম সাহেব বাজারে গেলে পরাজিত মেম্বর প্রার্থী কলিম উদ্দিনের সমর্থকরা তাকে মারধর করে। এ ঘটনার জের ধরে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়।

দোগাছি কমিউনিটি সেন্টারের ভোট কেন্দ্রে ভোট গননা শেষে রেজাল্ট দিতে দেরি হওয়ায় গ্রামবাসি ভোট কেন্দ্রে হামলা চালায়। মোরগ মার্কার সমর্থকরা প্রথমে কেন্দ্রে ইটপাটকেল ও পরে দলবদ্ধভাবে কেন্দ্রের মধ্যে প্রবেশ করতে চাইলে আনসার সদস্যরা ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালায়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

দায়িত্বরত আনসার কমান্ডার আলমগীর হোসেন জানান, ‘হঠাত করেই গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে ষ্ট্রাইকিং ফোর্স এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। হামলার সময় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভীত হয়ে পড়েন।

এদিকে হরিণকুন্ডু উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের হিজলী গ্রামের মেম্বর প্রার্থী আব্দুল হাকিম রোববার রাত ৯টার দিকে পলিয়ানপুর গ্রামে ঝন্টুর চায়ের দোকানে চা পান করছিলেন। এ সময় অপর প্রার্থী আব্দুল আলীম তার সহযোগী রানা ও সোহাগকে সঙ্গে নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। হামলায় তার মুখমন্ডল রক্তাক্ত জখম হয়। তিনি এ বিষয়ে হরিণাকুন্ডুর রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনো কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার (ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, ‘ঝিনাইদহ সদরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আহতদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানূগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

অপরদিকে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণপুর গ্রামে বিজয়ী মেম্বর প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। গত রোববার রাতে একই গ্রামের জাহিদুল মোল্লার বাড়ি ও ফারুক হোসেনের দোকান ভাঙচুর করা হয়।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে গত রোববারের চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচিন হন সোহেল রানা। ওই রাতেই পরাজিত আতিয়ার রহমান মেম্বর প্রার্থীর সমর্থক আলী রশিদের নেতৃত্বে বিজয়ী সোহেল রানার সমর্থক জাহিদুল মোল্লার বাড়ি ও ফারুক হোসেনের দোকান ভাঙচুর করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়।

এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’