ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাত পোহালেই ঝিনাইদহের ১৫টি ইউনিয়নে ভোট

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

রাত পোহালেই ভোটের মহারণ। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ভোট যুদ্ধ। নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভোট কেন্দ্রে কোনো রকম হঠকারিতা ও অনিয়ম বরদাস্ত করবে না এমন নির্দেশনা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের সিরিজ বৈঠকে হুশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে। গোয়েন্দা দিয়ে জরিপের মাধ্যমে ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করে সেখানে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একমাত্র আওয়ামী লীগের প্রার্থী অংশ নিলেও একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে প্রচার-প্রচারণায় গ্রাম ও বাজার মুখরিত হয়ে উঠেছে। ইউনিয়নে ইউনিয়নে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ, সরব হয়ে উঠেছে ভোটের রাজনীত। ইতঃমধ্যে সকল প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ করেছেন প্রার্থীরা। ঘাম ঝরানো প্রচারণা শেষে প্রার্থীরা এখন ভোট গ্রহণের কৌশল ঠিক করছেন মুঠোফোনে। কোনো কোনো ইউনিয়নে বিএনপির মাঠ পর্যায়ের কতিপয় নেতা স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও প্রকাশ্যে পাশে নেই জেলা ও উপজেলার নেতারা। ফলে তৃণমূলে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকরা নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে যে যেরকম পাচ্ছেন, কাজ করছেন।

আগামীকাল রোববার ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি, মধুহাটি, সাগান্না, গান্না, কুমড়াবাড়িয়া, হলিধানী, মহারাজপুর, পোড়াহাটি, হরিশংকরপুর, পদ্মাকর, দোগাচী, ফুরসন্দি, ঘোরশাল, কালীচরণপুর ও নলডাঙ্গা ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মামলা জটিলতায় চতুর্থ ধাপে পাগলাকানাই ও সুরাট ইউনিয়নের নির্বাচন হচ্ছে না।

ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিসার মোহা. আ. ছালেক গতকাল শুক্রবার বিকেলে জানান, ১৫টি ইউনিয়নে মোট ভোটকেন্দ্র হচ্ছে ১৪৮টি। স্থায়ী ও অস্থায়ী ভোট কক্ষ থাকছে ৮১০টি। ১৫টি ইউনিয়নে মোট ভোটার হচ্ছে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৫ শ জন। এর মেধ্য পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৮৮ ও নারী ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ৮১২ জন। ভোট গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদের ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহের কমতি নেই। কোন প্রার্থীর অবস্থান কেমন, তা জানতে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ফোন করা হচ্ছে। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের অবস্থান নিয়ে অসমর্থিত জরিপে উঠে আসছে নানা রকম তথ্য। সূত্র মতে, সাধুহাটি ইউনিয়নে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ মুহূর্তে বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন, সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও নৌকার প্রার্থী মিণ্টুর যে কেউ জয় তুলে আনতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাধুহাটি ইউনিয়নে জামায়াত ও বিএনপির ভোট প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে ফ্যাক্টর হতে পারে।

মধুহাটি ইউনিয়নে দ্বিমুখী লড়াই হতে পারে। স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ জুয়েল ও আলতাপ হোসেনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। হলিধানী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হক নিলুর সঙ্গে অন্য প্রার্থীর লড়াই হতে পারে বলে সেখানকার ভোটাররা মনে করেন। সাগান্না ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মোজাম্মেলের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আল মামুনের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠেছে। গান্না ইউনিয়নে ত্রিমুখী লড়াই হবে। নৌকার প্রার্থী আতিকুল হাসান মাসুম, স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী আজম ও বর্তমান চেয়ারম্যান নাসিরের মধ্যে এই সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নে শেষ পর্যন্ত সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফুলের চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠতে পারে। এছাড়া মহারাজপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী খুরশিদ বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছেন।

পোড়াহাটি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী শহীদুল ইসলাম হিরণ রয়েছেন অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে। হরিশংকরপুরে নৌকার মাসুমের সঙ্গে ফারুকুজ্জামান ফরিদের, পদ্মাকর ইউনিয়নে নৌকার সৈয়দ নিজামুল গণি লিটুর সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী বিকাশ বিশ্বাসের, দোগাছী ইউনিয়নে ফয়েজ ও কাজলের সঙ্গে নৌকার প্রার্থী ইসাহাক আলী জোয়ারদারের, ফুরসন্দি ইউনিয়নে মামা নৌকার শহীদ শিকদারের সঙ্গে ভাগ্নে বিদ্রোহী প্রার্থী আবু সাইদের, ঘোড়শাল ইউনিয়নে মাসুদ পারভেজ লিণ্টনের সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী জাহিদ হোসেনের, কালীচরণপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী কৃষ্ণপদ দত্তের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীরের এবং নলডাঙ্গা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান কবীর বিশ্বাসের সঙ্গে সাইফুল আলম খান রিপন ও নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম রেজার ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। তবে এবারের ভোটের মাঠের হিসাব-নিকেশ খুবই পরিবর্তনশীল। ফলে ফল গণনা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে প্রকৃত জয়ের মালা কার গলায় উঠবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

রাত পোহালেই ঝিনাইদহের ১৫টি ইউনিয়নে ভোট

আপলোড টাইম : ০৯:৪৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

রাত পোহালেই ভোটের মহারণ। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ভোট যুদ্ধ। নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভোট কেন্দ্রে কোনো রকম হঠকারিতা ও অনিয়ম বরদাস্ত করবে না এমন নির্দেশনা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের সিরিজ বৈঠকে হুশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে। গোয়েন্দা দিয়ে জরিপের মাধ্যমে ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করে সেখানে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একমাত্র আওয়ামী লীগের প্রার্থী অংশ নিলেও একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে প্রচার-প্রচারণায় গ্রাম ও বাজার মুখরিত হয়ে উঠেছে। ইউনিয়নে ইউনিয়নে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ, সরব হয়ে উঠেছে ভোটের রাজনীত। ইতঃমধ্যে সকল প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ করেছেন প্রার্থীরা। ঘাম ঝরানো প্রচারণা শেষে প্রার্থীরা এখন ভোট গ্রহণের কৌশল ঠিক করছেন মুঠোফোনে। কোনো কোনো ইউনিয়নে বিএনপির মাঠ পর্যায়ের কতিপয় নেতা স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও প্রকাশ্যে পাশে নেই জেলা ও উপজেলার নেতারা। ফলে তৃণমূলে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকরা নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে যে যেরকম পাচ্ছেন, কাজ করছেন।

আগামীকাল রোববার ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি, মধুহাটি, সাগান্না, গান্না, কুমড়াবাড়িয়া, হলিধানী, মহারাজপুর, পোড়াহাটি, হরিশংকরপুর, পদ্মাকর, দোগাচী, ফুরসন্দি, ঘোরশাল, কালীচরণপুর ও নলডাঙ্গা ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মামলা জটিলতায় চতুর্থ ধাপে পাগলাকানাই ও সুরাট ইউনিয়নের নির্বাচন হচ্ছে না।

ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিসার মোহা. আ. ছালেক গতকাল শুক্রবার বিকেলে জানান, ১৫টি ইউনিয়নে মোট ভোটকেন্দ্র হচ্ছে ১৪৮টি। স্থায়ী ও অস্থায়ী ভোট কক্ষ থাকছে ৮১০টি। ১৫টি ইউনিয়নে মোট ভোটার হচ্ছে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৫ শ জন। এর মেধ্য পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৮৮ ও নারী ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ৮১২ জন। ভোট গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদের ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহের কমতি নেই। কোন প্রার্থীর অবস্থান কেমন, তা জানতে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ফোন করা হচ্ছে। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের অবস্থান নিয়ে অসমর্থিত জরিপে উঠে আসছে নানা রকম তথ্য। সূত্র মতে, সাধুহাটি ইউনিয়নে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ মুহূর্তে বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন, সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও নৌকার প্রার্থী মিণ্টুর যে কেউ জয় তুলে আনতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাধুহাটি ইউনিয়নে জামায়াত ও বিএনপির ভোট প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে ফ্যাক্টর হতে পারে।

মধুহাটি ইউনিয়নে দ্বিমুখী লড়াই হতে পারে। স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ জুয়েল ও আলতাপ হোসেনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। হলিধানী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হক নিলুর সঙ্গে অন্য প্রার্থীর লড়াই হতে পারে বলে সেখানকার ভোটাররা মনে করেন। সাগান্না ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মোজাম্মেলের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আল মামুনের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠেছে। গান্না ইউনিয়নে ত্রিমুখী লড়াই হবে। নৌকার প্রার্থী আতিকুল হাসান মাসুম, স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী আজম ও বর্তমান চেয়ারম্যান নাসিরের মধ্যে এই সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নে শেষ পর্যন্ত সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফুলের চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠতে পারে। এছাড়া মহারাজপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী খুরশিদ বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছেন।

পোড়াহাটি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী শহীদুল ইসলাম হিরণ রয়েছেন অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে। হরিশংকরপুরে নৌকার মাসুমের সঙ্গে ফারুকুজ্জামান ফরিদের, পদ্মাকর ইউনিয়নে নৌকার সৈয়দ নিজামুল গণি লিটুর সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী বিকাশ বিশ্বাসের, দোগাছী ইউনিয়নে ফয়েজ ও কাজলের সঙ্গে নৌকার প্রার্থী ইসাহাক আলী জোয়ারদারের, ফুরসন্দি ইউনিয়নে মামা নৌকার শহীদ শিকদারের সঙ্গে ভাগ্নে বিদ্রোহী প্রার্থী আবু সাইদের, ঘোড়শাল ইউনিয়নে মাসুদ পারভেজ লিণ্টনের সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী জাহিদ হোসেনের, কালীচরণপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী কৃষ্ণপদ দত্তের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীরের এবং নলডাঙ্গা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান কবীর বিশ্বাসের সঙ্গে সাইফুল আলম খান রিপন ও নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম রেজার ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। তবে এবারের ভোটের মাঠের হিসাব-নিকেশ খুবই পরিবর্তনশীল। ফলে ফল গণনা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে প্রকৃত জয়ের মালা কার গলায় উঠবে।