ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে সেনা সদস্য সাইফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা; ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৮:৩৬:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের সেনা সদস্য সাইফুল ইসলাম সাইফ হত্যা মামলায় ৮ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় তিনজন আসামি পলাতক ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আহাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাইফুলের পিতা হাফিজ উদ্দীন হাবু ও মা বুলবুলি খাতুন। তাঁরা দ্রুত এই রায় কার্যকরের দাবি জানান।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের ফারুক হোসেন ওরফে ফারুনের ছেলে আকিমুল ইসলাম, একই উপজেলার বোড়াই গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে মিজানুর রহমান, আসাননগর গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে ফারুক হোসেন, একই গ্রামের নবীছদ্দিনের ছেলে আব্বাস উদ্দীন, আবুল কাসেম, বংকিরা গ্রামের ইয়াকুব্বার ওরফে ব্যাকার ছেলে মতিয়ার রহমান ফনে (পলাতক), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভুলটিয়া গ্রামের সবোদ আলীর ছেলে ডালিম (পলাতক) ও সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের মোক্তার (পলাতক)। রায় ঘোষণার আগে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতের হাজত খানায় নেওয়া হয়। গত ১২ নভেম্বর আদালতে যুক্তিতর্ক শেষ হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ১৮ আগস্ট রাতে ঝিনাইদহের বংকিরা পশ্চিমপাড়া এলাকার হাফিজ উদ্দীনের দুই ছেলে সাইফুল ইসলাম সাইফ (সেনা সদস্য) ও মনিরুল ইসলাম (নৌ সদস্য) মোটরসাইকেলযোগে স্থানীয় বদরগঞ্জ বাজার থেকে ঈদের রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা হাওনঘানা নামক স্থানে পৌঁছালে রাস্তার ওপর গাছ ফেলে ডাকাতরা ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। তারা মোটরসাইকেল থেকে নেমে চিৎকার করলে ডাকাত দলের একজন সেনা সদস্য সাইফকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার পরদিন নিহতের পিতা হাফিজুর রহমান হাবু অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম উল্লেখ করে ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলা করেন। মামলাটির তদন্তে নেমে পুলিশ আটজন আসামির সম্পৃক্ততার খবর জানতে পারে। এদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতিসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ মামলায় বংকিরা গ্রামের মো. আকিমুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি জড়িতদের নাম প্রকাশ করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে। ২০১৯ সালের ৩০ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদাহ থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মহসীন হোসেন ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিত্বে বিজ্ঞ বিচারক গতকাল বুধবার এই রায় ঘোষণা করেন। নিহত হওয়ার সময় সেনা সদস্য সাইফুল ইসলাম সাইফ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল সেনানিবাসের মেডিকেল কোরের ল্যান্স কর্পোরাল হিসেবে চাকরিরত ছিলেন।

এদিকে, এ হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভুলটিয়া গ্রামের সবেদ আলীর ছেলে ডালিম পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছেন বলে গ্রামবাসী জানিয়েছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহে সেনা সদস্য সাইফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা; ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

আপলোড টাইম : ০৮:৩৬:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২১

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের সেনা সদস্য সাইফুল ইসলাম সাইফ হত্যা মামলায় ৮ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় তিনজন আসামি পলাতক ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আহাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাইফুলের পিতা হাফিজ উদ্দীন হাবু ও মা বুলবুলি খাতুন। তাঁরা দ্রুত এই রায় কার্যকরের দাবি জানান।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের ফারুক হোসেন ওরফে ফারুনের ছেলে আকিমুল ইসলাম, একই উপজেলার বোড়াই গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে মিজানুর রহমান, আসাননগর গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে ফারুক হোসেন, একই গ্রামের নবীছদ্দিনের ছেলে আব্বাস উদ্দীন, আবুল কাসেম, বংকিরা গ্রামের ইয়াকুব্বার ওরফে ব্যাকার ছেলে মতিয়ার রহমান ফনে (পলাতক), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভুলটিয়া গ্রামের সবোদ আলীর ছেলে ডালিম (পলাতক) ও সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের মোক্তার (পলাতক)। রায় ঘোষণার আগে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতের হাজত খানায় নেওয়া হয়। গত ১২ নভেম্বর আদালতে যুক্তিতর্ক শেষ হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ১৮ আগস্ট রাতে ঝিনাইদহের বংকিরা পশ্চিমপাড়া এলাকার হাফিজ উদ্দীনের দুই ছেলে সাইফুল ইসলাম সাইফ (সেনা সদস্য) ও মনিরুল ইসলাম (নৌ সদস্য) মোটরসাইকেলযোগে স্থানীয় বদরগঞ্জ বাজার থেকে ঈদের রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা হাওনঘানা নামক স্থানে পৌঁছালে রাস্তার ওপর গাছ ফেলে ডাকাতরা ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। তারা মোটরসাইকেল থেকে নেমে চিৎকার করলে ডাকাত দলের একজন সেনা সদস্য সাইফকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার পরদিন নিহতের পিতা হাফিজুর রহমান হাবু অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম উল্লেখ করে ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলা করেন। মামলাটির তদন্তে নেমে পুলিশ আটজন আসামির সম্পৃক্ততার খবর জানতে পারে। এদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতিসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ মামলায় বংকিরা গ্রামের মো. আকিমুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি জড়িতদের নাম প্রকাশ করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে। ২০১৯ সালের ৩০ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদাহ থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মহসীন হোসেন ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিত্বে বিজ্ঞ বিচারক গতকাল বুধবার এই রায় ঘোষণা করেন। নিহত হওয়ার সময় সেনা সদস্য সাইফুল ইসলাম সাইফ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল সেনানিবাসের মেডিকেল কোরের ল্যান্স কর্পোরাল হিসেবে চাকরিরত ছিলেন।

এদিকে, এ হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভুলটিয়া গ্রামের সবেদ আলীর ছেলে ডালিম পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছেন বলে গ্রামবাসী জানিয়েছেন।