ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জমির ফসল নষ্ট : কৃষকদের স্বপ্ন ভাসছে পানিতে

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৯:০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ২৮ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহের কৃষকদের স্বপ্ন এখনো পানির নিচে ভাসছে। চারদিকে কেবলই যেন হা-হুতাশ। ধানের খেত, সবজি, বীজতলাসহ সবই পানিতে তলিয়ে গেছে। রসুন, মরিচ, পেঁয়াজ, সরিষা, গম ও আলু রোপণের পর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব ফসলের ভবিষ্যৎ নেই। এভাবে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়ার সমর্থও অনেক কৃষকের নেই। ফলে দায়-দেনায় জড়িয়ে এ বছর পথে বসার উপক্রম হবে কৃষকদের।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য রীতিমতো উদ্বেগজনক। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিতে জেলার ৩ লাখ ৫৬ হাজার কৃষক পথে বসেছেন। তাদের চলতি আবাদ মৌসুমে ৪১ হাজার ৫২৭ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। শত শত হেক্টর জমির পেঁয়াজ ও  বোরো ধানের বীজতলা জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে শুরু করার মতো আর্থিক সঙ্গতি অনেকের নেই। এসব কৃষক পরিবারের এখন মাথায় হাত। ফসল না হলে আগামী দিনগুলোতে কীভাবে সংসার চালাবেন, এই চিন্তায় অনেকে বিপর্যস্ত।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবজি খেত। সব ধরণের সবজি মিলিয়ে জেলায় ৭৯০২ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। ফলে এ বছর জেলায় সবজির দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া ৪২০ হেক্টর জমির বোরো বীজতলা, ৪০০৭ হেক্টর জমির গম, ৯৮৬ হেক্টর জমির আলু, ৭৮৩৮ হেক্টর জমির সরিষা, ৮৩৪২ হেক্টর জমির ভুট্টা খেত, ৬৪৫ হেক্টর জমির পেঁয়াজ, ১৭৮৫ হেক্টর জমির রসুন, ৬৭৫৫ হেক্টর জমির মসুর, ৪৫৫ হেক্টর জমির মরিচ ও ২৩৯২ হেক্টর জমির আমন ধান ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিতে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে ভুট্টার খেত ছাড়া বাকি ফসলগুলো বাঁচার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে কৃষিবিদরা মনে করেন।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজগর আলী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা ক্ষতির তালিকা প্রণোয়ন করে ঢাকায় পাঠিয়েছি। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমরা কৃষকদের নানাভাবে সহায়তা করছি। যারা সরকারিভাবে কৃষি উপকরণ পেয়েছিলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে তাদেরও এই মুহূর্তে কী করণীয়, সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ভুট্টার খেতগুলো তেমন ক্ষতি হবে না। এটা ছাড়া প্রায় সব ফসলের খেত কম-বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে।

উপ-পরিচালক আজগর আলী বলেন, এ বছর ঝিনাইদহ জেলায় ১ লাখ ৪ হাজার ৬১২ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছিল। ৯৮% জমির পাকা ধান কাটা শেষ হয়েছিল। কিন্তু যারা গরুর খাবার তৈরির জন্য মাঠে ধান শুকাচ্ছিল, কেবল তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই ক্ষতির পরিমাণ ২৩৯২ হেক্টর বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জমির ফসল নষ্ট : কৃষকদের স্বপ্ন ভাসছে পানিতে

আপলোড টাইম : ০৯:০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২১

ঝিনাইদহের কৃষকদের স্বপ্ন এখনো পানির নিচে ভাসছে। চারদিকে কেবলই যেন হা-হুতাশ। ধানের খেত, সবজি, বীজতলাসহ সবই পানিতে তলিয়ে গেছে। রসুন, মরিচ, পেঁয়াজ, সরিষা, গম ও আলু রোপণের পর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব ফসলের ভবিষ্যৎ নেই। এভাবে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়ার সমর্থও অনেক কৃষকের নেই। ফলে দায়-দেনায় জড়িয়ে এ বছর পথে বসার উপক্রম হবে কৃষকদের।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য রীতিমতো উদ্বেগজনক। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিতে জেলার ৩ লাখ ৫৬ হাজার কৃষক পথে বসেছেন। তাদের চলতি আবাদ মৌসুমে ৪১ হাজার ৫২৭ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। শত শত হেক্টর জমির পেঁয়াজ ও  বোরো ধানের বীজতলা জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে শুরু করার মতো আর্থিক সঙ্গতি অনেকের নেই। এসব কৃষক পরিবারের এখন মাথায় হাত। ফসল না হলে আগামী দিনগুলোতে কীভাবে সংসার চালাবেন, এই চিন্তায় অনেকে বিপর্যস্ত।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবজি খেত। সব ধরণের সবজি মিলিয়ে জেলায় ৭৯০২ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। ফলে এ বছর জেলায় সবজির দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া ৪২০ হেক্টর জমির বোরো বীজতলা, ৪০০৭ হেক্টর জমির গম, ৯৮৬ হেক্টর জমির আলু, ৭৮৩৮ হেক্টর জমির সরিষা, ৮৩৪২ হেক্টর জমির ভুট্টা খেত, ৬৪৫ হেক্টর জমির পেঁয়াজ, ১৭৮৫ হেক্টর জমির রসুন, ৬৭৫৫ হেক্টর জমির মসুর, ৪৫৫ হেক্টর জমির মরিচ ও ২৩৯২ হেক্টর জমির আমন ধান ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিতে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে ভুট্টার খেত ছাড়া বাকি ফসলগুলো বাঁচার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে কৃষিবিদরা মনে করেন।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজগর আলী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা ক্ষতির তালিকা প্রণোয়ন করে ঢাকায় পাঠিয়েছি। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমরা কৃষকদের নানাভাবে সহায়তা করছি। যারা সরকারিভাবে কৃষি উপকরণ পেয়েছিলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে তাদেরও এই মুহূর্তে কী করণীয়, সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ভুট্টার খেতগুলো তেমন ক্ষতি হবে না। এটা ছাড়া প্রায় সব ফসলের খেত কম-বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে।

উপ-পরিচালক আজগর আলী বলেন, এ বছর ঝিনাইদহ জেলায় ১ লাখ ৪ হাজার ৬১২ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছিল। ৯৮% জমির পাকা ধান কাটা শেষ হয়েছিল। কিন্তু যারা গরুর খাবার তৈরির জন্য মাঠে ধান শুকাচ্ছিল, কেবল তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই ক্ষতির পরিমাণ ২৩৯২ হেক্টর বলে তিনি উল্লেখ করেন।