ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

হাসপাতালে আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিট থাকলেও সেবা বন্ধ দীর্ঘদিন!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:০০:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই ২০২২
  • / ৩৪ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় করোনার জন্য ডেডিকেটেড দুটি ইউনিট ৯ মাস তালাবদ্ধ, পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হতে পারে মূল্যবান যন্ত্রপাতি

রুদ্র রাসেল: দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর দীর্ঘ দৌঁড়ঝাপের পর করোনার ২য় ঢেউ মোকবিলায় সাজেদা ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে ৪৪ জনের জনবল নিয়ে ৬ শয্যার আইসিইউ ও ৮ শয্যার এইচডিইউ ইউনিট স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করে ২০২১ সালের মার্চ মাসে। আইসিইউ ইউনিটটির সেবা কার্যক্রম শুরুর দুই মাস পর চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা সম্পূর্ণ সেটআপ রেখে জনবল নিয়ে চলে যায়। এরপর থেকেই সম্পূর্ণরুপে বন্ধ রয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ৬ শয্যার আইসিইউ ও ৮ শয্যার এইচডিইউ ইউনিটটি। তবে দীর্ঘ সময় ধরে রক্ষণাবেক্ষন ও পরিচর্যার অভাবে ইউনিটের মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যন্ত্রপাতি থাকলেও জনবল সংকটের কারণে আইসিইউ ও এইচডিইউ বিভাগের সেবাটি চালু করা যাচ্ছে না। এদিকে, সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশে নতুন করে আবারও করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এসময় সদর হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিট বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।

জানা যায়, ২০২০ সালের মার্চে চুয়াডাঙ্গায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসী বিভিন্নভাবে আইসিইউ স্থাপনের দাবি জানায়। সে সময় চুয়াডাঙ্গার বেশ কয়েকটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রধানমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের কাছে আইসিইউ-এর দাবি জানায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে এ দাবি বারবার তোলা হয়। সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ না থাকলেও সাজেদা ফাউন্ডেশন গত বছর জুলাই মাসের ২৬ তারিখ ৬ শয্যাবিশিষ্ট আইসিইউ ও ৮ শয্যাবিশিষ্ট হাই ডিফেন্ডেন্স ইউনিট (এইচডিইউ) পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ১০ জন চিকিৎসক, ১৪ জন আইসিইউ স্টাফ নার্স, ৭ জন ওয়ার্ডবয়, একজন ল্যাব টেকনোলজিস্ট, একজন এক্স-রে টেকনোলজিস্ট, ৬ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ৩ জন সিকিউরিটি গার্ড, তিনজন অ্যাডমিন/অ্যাকাউন্টস স্টাফসহ মোট ৪৪ জন নিয়ে আইসিইউ স্থাপন কাজ শুরু করে। আগস্টের ৭ তারিখে আইসিইউ ইউনিট সেটআপ সম্পূর্ণ হওয়ায় ওইদিন থেকেই তাঁরা আউসিইউ ইউনিটে রোগীদের সেবাদান শুরু করে। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন এর উদ্বোধন করেন। তবে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২৫ সেপ্টেম্বর সাজেদা ফাউন্ডেশনের আইসিইউ ইউনিটের সকল জনবল নিয়ে চলে যায়। কিন্তু তারা জেলাবাসীর সেবাই রেখে যায় আইসিইউ ইউনিট পরিচালনার সকল সরঞ্জাম। তারপর থেকে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসিইউ ইউনিটর পরিচালনার কথা থাকলেও জনবলের অভাবে দীর্ঘ ৯ মাস যাবত তা সম্পূর্ণরুপে বন্ধই রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সকল যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক থাকলেও জনবল সংকটের কারণে আইসিইউ বিভাগের সেবাটি চালু করা যাচ্ছে না। হাসপাতালের সম্প্রসারিত নতুন ভবনের চতুর্থ তলায় গত বছর সাজেদা ফাউণ্ডেশনের উদ্যোগে আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিট চালু করা হয়। সাজেদা ফাউণ্ডেশন তাদের নিজস্ব যন্ত্রপাতি ও জনবল দিয়ে করোনা মোকাবিলায় এই ইউনিট চালু করে। তবে করোনা মহামারির প্রকোপ কমে যাওয়ায় ও দুই মাসের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা তাদের পূর্ণ সেটআপ রেখে জনবল নিয়ে চলে যায়।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা আমিনুল ইসলাম ও আব্দুল কাদেরসহ কয়েকজন জানান, ‘গত বছর হাসপাতালে আইসিইউ বিভাগ চালু হওয়ায় জেলাবাসী খুবই খুশি হয়েছিল। কারণ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ জেলার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে কোনো আইসিইউ ব্যবস্থা নেই। জেলার বাইরের হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ সেবা নিতে অনেক খরচ করতে হয় এবং অনেক সময় শয্যাও মিলে না। কিন্তু মাত্র দুই মাস চালু থাকার পর সদর হাসপাতালে আইসিইউ বিভাগটি বন্ধ হয়ে যাওয়া দুঃখজনক। এর থেকেও বেশি দুঃখজনক আইসিইউ বিভাগটি বন্ধ হওয়ার পর ৯ মাস পার হলেও এই বিভাগটি আর চালু হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমরা আইসিইউ ইউনিটটি স্থায়ীভাবে চালুর দাবি জানাচ্ছি।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের তৎকালীণ আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. নাফিজ উল্লাহ সানি বলেন, ‘করোনা মহামারি সময়ে সাজেদা ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, যশোর ও পাবনাসহ মোট চার জেলায় আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিট চালু করে। এসময় সাজেদা ফাউন্ডেশন সম্পূর্ণ নিজস্ব সেটআপ ও জনবল দিয়ে এই চার জেলায় দুই মাসের চুক্তিতে আইসিইউ ইউনিট চালু করে। তবে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় সাজেদা ফাউন্ডেশন চার জেলার আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিটটির সম্পূর্ণ সেটআপ হাসপাতালগুলোকে ডোনেট করে দেয়। কিছুদিন পূর্বে আমরা সাজেদা ফাউন্ডেশনের ডোনেটকৃত চার জেলার আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিটের সার্ভে করি। এসময় দেখা যায় যশোর আইসিইউ ইউনিটটি আরও সমৃদ্ধ করেছে, মেহেরপুর ইউনিটটি চলমান রেখেছে কিন্তু চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটটির কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এই ইউনিটের যন্ত্রপাতির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন, রক্ষণাবেক্ষন ও পরিচর্যার অভাবে ইউনিটের মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চুয়াডাঙ্গা ইউনিটের জন্য দুটি ভেন্টিলেটর মেশিন ছিল, ভেন্টিলেটর মেশিনগুলো একটি নির্ধারিত তাপমাত্র ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষন ও পরিচর্যার মধ্যে রাখতে হয়। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত ও অপরিচর্যায় থাকলে মেশিন দুটির বিভিন্ন আইসি বিকল হতে পারে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান বলেন, এই হাসপাতালে সাজেদা ফাউন্ডেশন যখন আইসিইউ বিভাগ চালু করে তখন তিনি দায়িত্বে ছিলেন না। তবে জেনেছেন দুই মাস পর সাজেদা ফাউন্ডেশন তাদের আইসিইউ সেটআপ হাসপাতালকে ডোনেট করে জনবল নিয়ে চলে যায়। এরপর থেকেই আইসিইউ বিভাগটি বন্ধ রয়েছে। সরকার কর্তৃক দেশের সকল হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট চালুর কথা কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এর কোনো কার্যক্রম চালু হয়নি। কার্যকরী জনবল নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না হওয়ায় আইসিইউ বিভাগ থাকলেও তা চালানো সম্ভব নয়। তাই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, জেলা সদর হাসপাতাল ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনো ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ জনবল ছাড়ায় হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

হাসপাতালে আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিট থাকলেও সেবা বন্ধ দীর্ঘদিন!

আপলোড টাইম : ০৪:০০:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই ২০২২

চুয়াডাঙ্গায় করোনার জন্য ডেডিকেটেড দুটি ইউনিট ৯ মাস তালাবদ্ধ, পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হতে পারে মূল্যবান যন্ত্রপাতি

রুদ্র রাসেল: দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর দীর্ঘ দৌঁড়ঝাপের পর করোনার ২য় ঢেউ মোকবিলায় সাজেদা ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে ৪৪ জনের জনবল নিয়ে ৬ শয্যার আইসিইউ ও ৮ শয্যার এইচডিইউ ইউনিট স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করে ২০২১ সালের মার্চ মাসে। আইসিইউ ইউনিটটির সেবা কার্যক্রম শুরুর দুই মাস পর চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা সম্পূর্ণ সেটআপ রেখে জনবল নিয়ে চলে যায়। এরপর থেকেই সম্পূর্ণরুপে বন্ধ রয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ৬ শয্যার আইসিইউ ও ৮ শয্যার এইচডিইউ ইউনিটটি। তবে দীর্ঘ সময় ধরে রক্ষণাবেক্ষন ও পরিচর্যার অভাবে ইউনিটের মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যন্ত্রপাতি থাকলেও জনবল সংকটের কারণে আইসিইউ ও এইচডিইউ বিভাগের সেবাটি চালু করা যাচ্ছে না। এদিকে, সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশে নতুন করে আবারও করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এসময় সদর হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিট বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।

জানা যায়, ২০২০ সালের মার্চে চুয়াডাঙ্গায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসী বিভিন্নভাবে আইসিইউ স্থাপনের দাবি জানায়। সে সময় চুয়াডাঙ্গার বেশ কয়েকটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রধানমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের কাছে আইসিইউ-এর দাবি জানায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে এ দাবি বারবার তোলা হয়। সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ না থাকলেও সাজেদা ফাউন্ডেশন গত বছর জুলাই মাসের ২৬ তারিখ ৬ শয্যাবিশিষ্ট আইসিইউ ও ৮ শয্যাবিশিষ্ট হাই ডিফেন্ডেন্স ইউনিট (এইচডিইউ) পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ১০ জন চিকিৎসক, ১৪ জন আইসিইউ স্টাফ নার্স, ৭ জন ওয়ার্ডবয়, একজন ল্যাব টেকনোলজিস্ট, একজন এক্স-রে টেকনোলজিস্ট, ৬ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ৩ জন সিকিউরিটি গার্ড, তিনজন অ্যাডমিন/অ্যাকাউন্টস স্টাফসহ মোট ৪৪ জন নিয়ে আইসিইউ স্থাপন কাজ শুরু করে। আগস্টের ৭ তারিখে আইসিইউ ইউনিট সেটআপ সম্পূর্ণ হওয়ায় ওইদিন থেকেই তাঁরা আউসিইউ ইউনিটে রোগীদের সেবাদান শুরু করে। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন এর উদ্বোধন করেন। তবে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২৫ সেপ্টেম্বর সাজেদা ফাউন্ডেশনের আইসিইউ ইউনিটের সকল জনবল নিয়ে চলে যায়। কিন্তু তারা জেলাবাসীর সেবাই রেখে যায় আইসিইউ ইউনিট পরিচালনার সকল সরঞ্জাম। তারপর থেকে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসিইউ ইউনিটর পরিচালনার কথা থাকলেও জনবলের অভাবে দীর্ঘ ৯ মাস যাবত তা সম্পূর্ণরুপে বন্ধই রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সকল যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক থাকলেও জনবল সংকটের কারণে আইসিইউ বিভাগের সেবাটি চালু করা যাচ্ছে না। হাসপাতালের সম্প্রসারিত নতুন ভবনের চতুর্থ তলায় গত বছর সাজেদা ফাউণ্ডেশনের উদ্যোগে আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিট চালু করা হয়। সাজেদা ফাউণ্ডেশন তাদের নিজস্ব যন্ত্রপাতি ও জনবল দিয়ে করোনা মোকাবিলায় এই ইউনিট চালু করে। তবে করোনা মহামারির প্রকোপ কমে যাওয়ায় ও দুই মাসের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা তাদের পূর্ণ সেটআপ রেখে জনবল নিয়ে চলে যায়।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা আমিনুল ইসলাম ও আব্দুল কাদেরসহ কয়েকজন জানান, ‘গত বছর হাসপাতালে আইসিইউ বিভাগ চালু হওয়ায় জেলাবাসী খুবই খুশি হয়েছিল। কারণ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ জেলার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে কোনো আইসিইউ ব্যবস্থা নেই। জেলার বাইরের হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ সেবা নিতে অনেক খরচ করতে হয় এবং অনেক সময় শয্যাও মিলে না। কিন্তু মাত্র দুই মাস চালু থাকার পর সদর হাসপাতালে আইসিইউ বিভাগটি বন্ধ হয়ে যাওয়া দুঃখজনক। এর থেকেও বেশি দুঃখজনক আইসিইউ বিভাগটি বন্ধ হওয়ার পর ৯ মাস পার হলেও এই বিভাগটি আর চালু হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমরা আইসিইউ ইউনিটটি স্থায়ীভাবে চালুর দাবি জানাচ্ছি।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের তৎকালীণ আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. নাফিজ উল্লাহ সানি বলেন, ‘করোনা মহামারি সময়ে সাজেদা ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, যশোর ও পাবনাসহ মোট চার জেলায় আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিট চালু করে। এসময় সাজেদা ফাউন্ডেশন সম্পূর্ণ নিজস্ব সেটআপ ও জনবল দিয়ে এই চার জেলায় দুই মাসের চুক্তিতে আইসিইউ ইউনিট চালু করে। তবে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় সাজেদা ফাউন্ডেশন চার জেলার আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিটটির সম্পূর্ণ সেটআপ হাসপাতালগুলোকে ডোনেট করে দেয়। কিছুদিন পূর্বে আমরা সাজেদা ফাউন্ডেশনের ডোনেটকৃত চার জেলার আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিটের সার্ভে করি। এসময় দেখা যায় যশোর আইসিইউ ইউনিটটি আরও সমৃদ্ধ করেছে, মেহেরপুর ইউনিটটি চলমান রেখেছে কিন্তু চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটটির কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এই ইউনিটের যন্ত্রপাতির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন, রক্ষণাবেক্ষন ও পরিচর্যার অভাবে ইউনিটের মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চুয়াডাঙ্গা ইউনিটের জন্য দুটি ভেন্টিলেটর মেশিন ছিল, ভেন্টিলেটর মেশিনগুলো একটি নির্ধারিত তাপমাত্র ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষন ও পরিচর্যার মধ্যে রাখতে হয়। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত ও অপরিচর্যায় থাকলে মেশিন দুটির বিভিন্ন আইসি বিকল হতে পারে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান বলেন, এই হাসপাতালে সাজেদা ফাউন্ডেশন যখন আইসিইউ বিভাগ চালু করে তখন তিনি দায়িত্বে ছিলেন না। তবে জেনেছেন দুই মাস পর সাজেদা ফাউন্ডেশন তাদের আইসিইউ সেটআপ হাসপাতালকে ডোনেট করে জনবল নিয়ে চলে যায়। এরপর থেকেই আইসিইউ বিভাগটি বন্ধ রয়েছে। সরকার কর্তৃক দেশের সকল হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট চালুর কথা কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এর কোনো কার্যক্রম চালু হয়নি। কার্যকরী জনবল নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না হওয়ায় আইসিইউ বিভাগ থাকলেও তা চালানো সম্ভব নয়। তাই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, জেলা সদর হাসপাতাল ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনো ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ জনবল ছাড়ায় হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।