ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

সাহিদুজ্জামান টরিকের মহানুভবতা : মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের ঈদের উপহার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৮:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ এপ্রিল ২০২২
  • / ৫১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গার পাঁচকমলাপুর দারুল উলুম কওমিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার ৪০৩ জন ছাত্র ও শিক্ষককে ঈদের নতুন পোশাক উপহার দিয়েছেন মাদ্রাসাটির পরিচালক আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিক। ঈদে নতুন পোশাক পেয়ে ছাত্রদের চোখে মুখে দেখা দিয়েছে খুশির ঝিলিক। প্রত্যেক ছাত্রই যেন আনন্দে আত্মহারা। পছন্দসই ইসলামী পোশাক পেয়ে তাঁদের মুখের হাসিতে খুশির আভা। এবারই শুধু নয়, প্রতিবছরই মাদ্রাসাটির পরিচালক চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিকের পক্ষ থেকে মাদ্রাসার সকল শিক্ষক ও ছাত্রদের নতুন পোশাক উপহার দেওয়া হয়। প্রত্যেক বছরের মতো এবারেও সেই আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়নি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা।

এবারে মাদ্রাসাটির ৩৫০জন ছাত্র এবং ১৮ জন শিক্ষক ও কর্মচারী, ১১জন ওই এলাকার কবর খননকারী ও মাদ্রাসার মসজিদের আরও ২৪জন মুসল্লিসহ ৪০৩ জনকে নতুন পোশাক ঈদ উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। তবে আজকের এই অবস্থা একদিনে হয়নি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এই মাদ্রাসার এরকম সুদিন ছিল না। অনেক চড়াই উৎড়াই পেরোতে হয়েছে এই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতাকে।

একটি সুন্দর দ্বীনি-শিক্ষার ভাবনা নিয়ে মৃত হাজি শামসুজ্জোহা বিশ্বাস ২০০১ সালে মাত্র ১৩ জন ছাত্র ও একজন শিক্ষক নিয়ে একটি চালা-ঘরে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের পাঁচকমলাপুর গ্রামে ‘পাঁচকমলাপুর দারুল উলুম কওমিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা’ নামে দ্বীনি-শিক্ষার এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় নিজের ভালোবাসা ও পরিশ্রম দিয়ে সর্বদা চেষ্টা করেছেন এ মাদ্রাসাটিকে যতটা সম্ভব পূর্ণতা দেওয়ার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কোনো কিছুর কমতি রাখেননি তিনি। নিজের সাধ্যমত সবকিছুই দিয়েছেন প্রাণপ্রিয় ইসলামী শিক্ষাদানের এই প্রতিষ্ঠানকে।

২০১০ সালে যখন হাজি শামসুজ্জোহা বিশ্বাস মৃত্যুবরণ করেন তখন এই মাদ্রাসাটিতে তখন ছাত্র সংখ্যা ছিল ১৪৫ জন এবং শিক্ষক ছিলেন ৭ জন। হাজি শামসুজ্জোহা বিশ্বাসের মৃত্যুর পর এই মাদ্রাসাটির পরিচালকের দায়িত্ব নেন তাঁর পুত্র, বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুর (বিডিচ্যাম)-এর সাবেক প্রেসিডেন্ট, সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি, সাহিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান, হোটেল সাহিদ প্যালেস অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান ও দানবীর হিসেবে খ্যাত আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিক। একজন সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে পিতার সুস্বপ্নকে আন্তরিকতা, ভালোবাসা, মেধা ও শ্রম দিয়ে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়।

২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে মাদ্রাসাটিতে ছাত্রদের জন্য লিল্লাহ বোর্ডিং-এর ব্যবস্থা করা হয়। যেখানে তিন বেলা মাদ্রাসার সকল ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। বহুল ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিননন্দন পাঁচতলা একাডেমিক ভবন। এই ভবনে একসঙ্গে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান ও আবাসনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। খোলামেলা ও মনোরম পরিবেশে দৃশ্যমান এ মাদ্রাসাটির সুবিশাল খেলার মাঠসহ লাল সিরামিক ইট ও নান্দনিক ব্লকের গাঁথুনী নজর কাড়ছে সবার। কেউই কখনো ভাবেনি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় এই ধরণের একটি দৃষ্টি-নন্দন ও আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকবে। পাঠদান, থাকা ও খাওয়ার সুযোগ সুবিধাসহ আধুনিক এই মাদ্রাসাটি ইতোমধ্যেই সমাদৃত হচ্ছে সারা দেশব্যাপী। এই প্রতিষ্ঠানটির দ্বীনি-শিক্ষার দ্র্যুতি ছড়িয়ে পড়ুক চারিদিকে, এমনটাই প্রত্যাশা মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট সকলের।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

সাহিদুজ্জামান টরিকের মহানুভবতা : মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের ঈদের উপহার

আপলোড টাইম : ১০:০৮:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গার পাঁচকমলাপুর দারুল উলুম কওমিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার ৪০৩ জন ছাত্র ও শিক্ষককে ঈদের নতুন পোশাক উপহার দিয়েছেন মাদ্রাসাটির পরিচালক আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিক। ঈদে নতুন পোশাক পেয়ে ছাত্রদের চোখে মুখে দেখা দিয়েছে খুশির ঝিলিক। প্রত্যেক ছাত্রই যেন আনন্দে আত্মহারা। পছন্দসই ইসলামী পোশাক পেয়ে তাঁদের মুখের হাসিতে খুশির আভা। এবারই শুধু নয়, প্রতিবছরই মাদ্রাসাটির পরিচালক চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিকের পক্ষ থেকে মাদ্রাসার সকল শিক্ষক ও ছাত্রদের নতুন পোশাক উপহার দেওয়া হয়। প্রত্যেক বছরের মতো এবারেও সেই আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়নি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা।

এবারে মাদ্রাসাটির ৩৫০জন ছাত্র এবং ১৮ জন শিক্ষক ও কর্মচারী, ১১জন ওই এলাকার কবর খননকারী ও মাদ্রাসার মসজিদের আরও ২৪জন মুসল্লিসহ ৪০৩ জনকে নতুন পোশাক ঈদ উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। তবে আজকের এই অবস্থা একদিনে হয়নি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এই মাদ্রাসার এরকম সুদিন ছিল না। অনেক চড়াই উৎড়াই পেরোতে হয়েছে এই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতাকে।

একটি সুন্দর দ্বীনি-শিক্ষার ভাবনা নিয়ে মৃত হাজি শামসুজ্জোহা বিশ্বাস ২০০১ সালে মাত্র ১৩ জন ছাত্র ও একজন শিক্ষক নিয়ে একটি চালা-ঘরে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের পাঁচকমলাপুর গ্রামে ‘পাঁচকমলাপুর দারুল উলুম কওমিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা’ নামে দ্বীনি-শিক্ষার এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় নিজের ভালোবাসা ও পরিশ্রম দিয়ে সর্বদা চেষ্টা করেছেন এ মাদ্রাসাটিকে যতটা সম্ভব পূর্ণতা দেওয়ার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কোনো কিছুর কমতি রাখেননি তিনি। নিজের সাধ্যমত সবকিছুই দিয়েছেন প্রাণপ্রিয় ইসলামী শিক্ষাদানের এই প্রতিষ্ঠানকে।

২০১০ সালে যখন হাজি শামসুজ্জোহা বিশ্বাস মৃত্যুবরণ করেন তখন এই মাদ্রাসাটিতে তখন ছাত্র সংখ্যা ছিল ১৪৫ জন এবং শিক্ষক ছিলেন ৭ জন। হাজি শামসুজ্জোহা বিশ্বাসের মৃত্যুর পর এই মাদ্রাসাটির পরিচালকের দায়িত্ব নেন তাঁর পুত্র, বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুর (বিডিচ্যাম)-এর সাবেক প্রেসিডেন্ট, সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি, সাহিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান, হোটেল সাহিদ প্যালেস অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান ও দানবীর হিসেবে খ্যাত আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিক। একজন সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে পিতার সুস্বপ্নকে আন্তরিকতা, ভালোবাসা, মেধা ও শ্রম দিয়ে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়।

২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে মাদ্রাসাটিতে ছাত্রদের জন্য লিল্লাহ বোর্ডিং-এর ব্যবস্থা করা হয়। যেখানে তিন বেলা মাদ্রাসার সকল ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। বহুল ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিননন্দন পাঁচতলা একাডেমিক ভবন। এই ভবনে একসঙ্গে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান ও আবাসনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। খোলামেলা ও মনোরম পরিবেশে দৃশ্যমান এ মাদ্রাসাটির সুবিশাল খেলার মাঠসহ লাল সিরামিক ইট ও নান্দনিক ব্লকের গাঁথুনী নজর কাড়ছে সবার। কেউই কখনো ভাবেনি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় এই ধরণের একটি দৃষ্টি-নন্দন ও আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকবে। পাঠদান, থাকা ও খাওয়ার সুযোগ সুবিধাসহ আধুনিক এই মাদ্রাসাটি ইতোমধ্যেই সমাদৃত হচ্ছে সারা দেশব্যাপী। এই প্রতিষ্ঠানটির দ্বীনি-শিক্ষার দ্র্যুতি ছড়িয়ে পড়ুক চারিদিকে, এমনটাই প্রত্যাশা মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট সকলের।