ইপেপার । আজ সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

সারাদেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে সংসারের সমৃদ্ধি কামনায় হিন্দু নারীদের সিঁদুর খেলা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর ২০২২
  • / ১৮ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন: ভক্তদের কাঁদিয়ে কৈলাসে ফিরে গেলেন দেবী দুর্গা। গতকাল বুধবার বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এর আগে ১ই অক্টোবর ষষ্ঠী বিহিত পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছিল পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গাপূজা। এবার দেবীর আগমন ঘটেছিল গজে (হাতি) চড়ে। কৈলাসে দেবালয়ে ফিরেছেন নৌকায় চেপে। গতকাল সকালে বিজয়া দশমীর ‘বিহিত পূজায়’ ষোড়শপ্রচার পূজার পাশাপাশি দেবী প্রতিমার হাতে জরা, পান, শাপলার ডালা দিয়ে আরাধনা করা হয়। সবশেষে দর্পণ বিসর্জনের সময় প্রতিমার সামনে একটি আয়না রেখে তাতে দেবীকে দেখে তার কাছ থেকে সাময়িক সময়ের জন্য বিদায় নেন ভক্তরা। এদিকে সকালে দেবীর অর্চনা শেষে হিন্দু সধবা নারীরা দেবীপ্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে দেন। তারপর নিজেরা একে অন্যকে সিঁদুর পরান। আয়োজনের অংশ হিসেবে একইসঙ্গে চলে মিষ্টিমুখ করানো ও ঢাকের তালে তালে নাচ-গান।
চুয়াডাঙ্গা:
চোখের জল আর ভক্তদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার মিছিলে সিক্ত হয়ে বিদায় নিলেন দেবী দুর্গা। এক বছর পর আবারও ফিরে আসবেন সুখ সমৃদ্ধি আর প্রশান্তির বার্তা নিয়ে। গতকাল বুধবার ঢাকের বাদ্যের তালে তালে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সমাপ্তি ঘটল হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ শারদীয় দুর্গোৎসবের। এবছর দেবী পূজা গজে (হাতি) করে আগমন করেছিলেন। আর বিদায় বেলায় চড়লেন নৌকায়। অশুভ শক্তির বিনাশে সমৃদ্ধ হোক দেশের অগ্রযাত্রা-এই কামনায় শুভ বিজয়াতে মেতে উঠেছিলেন সারা দেশের মতো চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলও।
এর আগে গতকাল বুধবার সকাল ৯টার মধ্যে দশমী বিহিত পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন দেওয়া হয়। পরে বেলা সাড়ে তিনটায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় শুভ বিজয়ার বর্ণাঢ্য র‌্যালি শহরের প্রদক্ষিণ করে। দশমীর সকালে বিসর্জনের আগে দেবী দুর্গার সিঁথিতে সিঁদুর পরান এবং মিষ্টি মুখ করান। এসময় মন্দিরে আগত নারীরা একে অপরের সিঁথিতে সিঁদুর বিনিময় করেন। সন্ধ্যায় বিসর্জন শেষে ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করেন। এবার জেলার চারটি উপজেলায় ১২৩টি মণ্ডপের দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৩টি, আলমডাঙ্গায় ৪২টি, দামুড়হুদায় ১৪টি, দর্শনায় ১৮টি ও জীবননগরে ২৬টি। এসব মণ্ডপগুলো বেশ আকর্ষণীয় আলোকসজ্জায় সাজানো হয়।
আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার পাঁচদিনের অনুষ্ঠানমালা শেষ হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের মধ দিয়ে। মর্ত্যলোক ছেড়ে এবার বিদায় নিয়েছেন দেবী দুর্গা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় শুরু হয় প্রতিমা নিরঞ্জন। দুর্গাপুজা ষষ্ঠী থেকে নবমী অবধি ছিল জমকালো আলোকসজ্জা, ঢাক-কাঁসরের বাদ্যি, ধূপ-ধুনোয় আরতি ও ভক্তদের পুজো-অর্চনা আর সকল ধর্মের মানুষের দর্শন। মহানবমী রাতেই ভক্তদের চোখে-মুখে ছিল দেবী বিদায়ের বিষণ্ন সুর। অশ্রুসজল চোখে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সন্ধ্যায় ক্যানেল পাড়ায় কুমার নদীতে পৌর এলাকার ১৫টি পূজামণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেয়।
বিসর্জনের সময় উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা পৌর মেয়র আলহাজ্ব হাসান কাদির গনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মুসা, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার, প্রেসক্লাবের সভাপতি খন্দকার শাহ আলম মণ্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পূজা উদ্যাপন কমিটির সহসভাপতি প্রশান্ত অধিকারী, আলমডাঙ্গা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি ডা. অমল কুমার, সাংগঠনিক সম্পাদক নয়ন সরকার, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনীন্দ্রনাথ দত্ত, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সহসভাপতি বাবু শুশীল কুমার ভৌতিকা, পৌর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি পরিমল কুমার কালু ঘোষ, পৌর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পলাশ, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিনিধি অসীম কুমার সাহা, বিদ্যুত সাহা, উজ্জল কুমার বিশ্বাস, নির্মল গোসাই, দেবেন্দ্রনাথ দত্ত, দীপ্তি বাবুসহ হিন্দু ধর্মের নারী-পুরুষ। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে ছিলেন ওসি (তদন্ত) আব্দুল আলিম, ওসি (অপারেশন) একরামুল ইসলাম, এসআই ইকবাল হোসেনসহ পুলিশ ফোর্স।
দামুড়হুদা:
দামুড়হুদায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গোৎসব। গতকাল বিজয়া দশমীর দিনে দামুড়হুদা উপজেলার মন্দিরে মন্দিরে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দশমীর বিহিত পূজা এবং পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জন করা হয়। পরে বিকেল চারটায় বিজয়া শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এসময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অন্যরকম আবেগ ও মন খারাপ করা এক অনুভূতির সৃষ্টি হয়। কারণ দশমী মানেই দুর্গা মায়ের ফিরে যাওয়া। অপেক্ষায় থাকতে হবে আরও একটি বছর।
সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী এবার দেবীদুর্গা জগতের মঙ্গল কামনায় গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড়, বৃষ্টি হবে এবং শস্য ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে স্বর্গে বিদায় নেবেন নৌকায় চড়ে। যার ফলে জগতের কল্যাণ সাধিত হবে। দামুড়হুদা পূজা উদ্যাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় ২২টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব উদ্যাপন করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদ্যাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদ্যাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। যথাসময়ে সরকারি নির্দেশনা মেনে সন্ধ্যার আগেই প্রতিমা বিসর্জন দেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।
দর্শনা:
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব বিসর্জন। গতকাল বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে শারদীয় দুর্গা বিসর্জনকে ঘিরে দর্শনা মেমনগর মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে অসংখ্য মানুষের সমাগম ঘটে। ঢাকের তালে, তালে মুখরিত হয়ে ওঠে নদীর দু’কুল। শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়ায় বিকেল গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে দর্শনা মেমনগর মাথাভাঙ্গা নদীতে দর্শনা কেরুজ মন্দির, আমতলা হরিজন সম্প্রদায়, দর্শনা পুরাতন বাজার, রামনগর দাসপাড়া, সর্দারপাড়া ও পার্শ্ববর্তী পারকৃষ্ণপুর হালদারপাড়া মুন্দিরের প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হয় সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচাইতে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব।
আন্দুলবাড়ীয়া:
সারা দেশের ন্যায় জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ও কেডিকে ইউনিয়নের প্রতিটি পূজামণ্ডপে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়ায় প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু সুন্দরভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী তথা হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে রং মেখে হোলি খেলে ঢাক-ঢোল ও কাঁসার বাদ্য বাজনার তালে-তালে নেঁচে-গেয়ে পৃথকভাবে ভৈরব নদী ও জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

সারাদেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে সংসারের সমৃদ্ধি কামনায় হিন্দু নারীদের সিঁদুর খেলা

আপলোড টাইম : ০৮:১৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন: ভক্তদের কাঁদিয়ে কৈলাসে ফিরে গেলেন দেবী দুর্গা। গতকাল বুধবার বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এর আগে ১ই অক্টোবর ষষ্ঠী বিহিত পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছিল পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গাপূজা। এবার দেবীর আগমন ঘটেছিল গজে (হাতি) চড়ে। কৈলাসে দেবালয়ে ফিরেছেন নৌকায় চেপে। গতকাল সকালে বিজয়া দশমীর ‘বিহিত পূজায়’ ষোড়শপ্রচার পূজার পাশাপাশি দেবী প্রতিমার হাতে জরা, পান, শাপলার ডালা দিয়ে আরাধনা করা হয়। সবশেষে দর্পণ বিসর্জনের সময় প্রতিমার সামনে একটি আয়না রেখে তাতে দেবীকে দেখে তার কাছ থেকে সাময়িক সময়ের জন্য বিদায় নেন ভক্তরা। এদিকে সকালে দেবীর অর্চনা শেষে হিন্দু সধবা নারীরা দেবীপ্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে দেন। তারপর নিজেরা একে অন্যকে সিঁদুর পরান। আয়োজনের অংশ হিসেবে একইসঙ্গে চলে মিষ্টিমুখ করানো ও ঢাকের তালে তালে নাচ-গান।
চুয়াডাঙ্গা:
চোখের জল আর ভক্তদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার মিছিলে সিক্ত হয়ে বিদায় নিলেন দেবী দুর্গা। এক বছর পর আবারও ফিরে আসবেন সুখ সমৃদ্ধি আর প্রশান্তির বার্তা নিয়ে। গতকাল বুধবার ঢাকের বাদ্যের তালে তালে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সমাপ্তি ঘটল হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ শারদীয় দুর্গোৎসবের। এবছর দেবী পূজা গজে (হাতি) করে আগমন করেছিলেন। আর বিদায় বেলায় চড়লেন নৌকায়। অশুভ শক্তির বিনাশে সমৃদ্ধ হোক দেশের অগ্রযাত্রা-এই কামনায় শুভ বিজয়াতে মেতে উঠেছিলেন সারা দেশের মতো চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলও।
এর আগে গতকাল বুধবার সকাল ৯টার মধ্যে দশমী বিহিত পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন দেওয়া হয়। পরে বেলা সাড়ে তিনটায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় শুভ বিজয়ার বর্ণাঢ্য র‌্যালি শহরের প্রদক্ষিণ করে। দশমীর সকালে বিসর্জনের আগে দেবী দুর্গার সিঁথিতে সিঁদুর পরান এবং মিষ্টি মুখ করান। এসময় মন্দিরে আগত নারীরা একে অপরের সিঁথিতে সিঁদুর বিনিময় করেন। সন্ধ্যায় বিসর্জন শেষে ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করেন। এবার জেলার চারটি উপজেলায় ১২৩টি মণ্ডপের দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৩টি, আলমডাঙ্গায় ৪২টি, দামুড়হুদায় ১৪টি, দর্শনায় ১৮টি ও জীবননগরে ২৬টি। এসব মণ্ডপগুলো বেশ আকর্ষণীয় আলোকসজ্জায় সাজানো হয়।
আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার পাঁচদিনের অনুষ্ঠানমালা শেষ হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের মধ দিয়ে। মর্ত্যলোক ছেড়ে এবার বিদায় নিয়েছেন দেবী দুর্গা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় শুরু হয় প্রতিমা নিরঞ্জন। দুর্গাপুজা ষষ্ঠী থেকে নবমী অবধি ছিল জমকালো আলোকসজ্জা, ঢাক-কাঁসরের বাদ্যি, ধূপ-ধুনোয় আরতি ও ভক্তদের পুজো-অর্চনা আর সকল ধর্মের মানুষের দর্শন। মহানবমী রাতেই ভক্তদের চোখে-মুখে ছিল দেবী বিদায়ের বিষণ্ন সুর। অশ্রুসজল চোখে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সন্ধ্যায় ক্যানেল পাড়ায় কুমার নদীতে পৌর এলাকার ১৫টি পূজামণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেয়।
বিসর্জনের সময় উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা পৌর মেয়র আলহাজ্ব হাসান কাদির গনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মুসা, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার, প্রেসক্লাবের সভাপতি খন্দকার শাহ আলম মণ্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পূজা উদ্যাপন কমিটির সহসভাপতি প্রশান্ত অধিকারী, আলমডাঙ্গা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি ডা. অমল কুমার, সাংগঠনিক সম্পাদক নয়ন সরকার, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনীন্দ্রনাথ দত্ত, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সহসভাপতি বাবু শুশীল কুমার ভৌতিকা, পৌর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি পরিমল কুমার কালু ঘোষ, পৌর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পলাশ, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিনিধি অসীম কুমার সাহা, বিদ্যুত সাহা, উজ্জল কুমার বিশ্বাস, নির্মল গোসাই, দেবেন্দ্রনাথ দত্ত, দীপ্তি বাবুসহ হিন্দু ধর্মের নারী-পুরুষ। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে ছিলেন ওসি (তদন্ত) আব্দুল আলিম, ওসি (অপারেশন) একরামুল ইসলাম, এসআই ইকবাল হোসেনসহ পুলিশ ফোর্স।
দামুড়হুদা:
দামুড়হুদায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গোৎসব। গতকাল বিজয়া দশমীর দিনে দামুড়হুদা উপজেলার মন্দিরে মন্দিরে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দশমীর বিহিত পূজা এবং পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জন করা হয়। পরে বিকেল চারটায় বিজয়া শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এসময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অন্যরকম আবেগ ও মন খারাপ করা এক অনুভূতির সৃষ্টি হয়। কারণ দশমী মানেই দুর্গা মায়ের ফিরে যাওয়া। অপেক্ষায় থাকতে হবে আরও একটি বছর।
সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী এবার দেবীদুর্গা জগতের মঙ্গল কামনায় গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড়, বৃষ্টি হবে এবং শস্য ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে স্বর্গে বিদায় নেবেন নৌকায় চড়ে। যার ফলে জগতের কল্যাণ সাধিত হবে। দামুড়হুদা পূজা উদ্যাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় ২২টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব উদ্যাপন করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদ্যাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদ্যাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। যথাসময়ে সরকারি নির্দেশনা মেনে সন্ধ্যার আগেই প্রতিমা বিসর্জন দেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।
দর্শনা:
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব বিসর্জন। গতকাল বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে শারদীয় দুর্গা বিসর্জনকে ঘিরে দর্শনা মেমনগর মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে অসংখ্য মানুষের সমাগম ঘটে। ঢাকের তালে, তালে মুখরিত হয়ে ওঠে নদীর দু’কুল। শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়ায় বিকেল গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে দর্শনা মেমনগর মাথাভাঙ্গা নদীতে দর্শনা কেরুজ মন্দির, আমতলা হরিজন সম্প্রদায়, দর্শনা পুরাতন বাজার, রামনগর দাসপাড়া, সর্দারপাড়া ও পার্শ্ববর্তী পারকৃষ্ণপুর হালদারপাড়া মুন্দিরের প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হয় সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচাইতে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব।
আন্দুলবাড়ীয়া:
সারা দেশের ন্যায় জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ও কেডিকে ইউনিয়নের প্রতিটি পূজামণ্ডপে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়ায় প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু সুন্দরভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী তথা হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে রং মেখে হোলি খেলে ঢাক-ঢোল ও কাঁসার বাদ্য বাজনার তালে-তালে নেঁচে-গেয়ে পৃথকভাবে ভৈরব নদী ও জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।