ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

মেহেরপুরের গাংনীতে মেম্বার প্রার্থী দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ

গাংনী অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ নভেম্বর ২০২১
  • / ৪৪ বার পড়া হয়েছে

দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১২ জন আটক, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ-র‌্যাব মোতায়েন

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের লক্ষিনারায়ণপুর ধলা গ্রামে মেম্বার পদপ্রার্থী আজমাইন হোসেন টুটুল ও আতিয়ার রহমানের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষে টুটুল পক্ষের আপন দুই সহোদর নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই গ্রুপের আহত হয়েছেন নারীসহ অন্তত ২০ জন। নিহতরা হচ্ছেন ধলা গ্রামের সুলতান হোসেনের ছেলে সাহাদুল ইসলাম (৫৫) ও জাহারুল ইসলাম (৫৭)। আহতদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত সাহাদুলের মেয়ে সুবর্ণা জানান, বর্তমান মেম্বার টুটুল সকালে ভোট চাইতে গেলে আতিয়ার রহমানের লোকজন টুটুলকে ধরে একটি বাঁশ বাগানে নিয়ে মারধর করতে থাকে। খবর পেয়ে সাহাদুল, জাহারুলসহ অন্যান্যরা এগিয়ে গেলে দেশীয় অস্ত্র ও বাঁশের লাঠি নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় আতিয়ার রহমানের লোকজন। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন দুই ভাই সাহাদুল ও জাহারুল। নিহতদের বাড়ি ঘরেও হামলা চালানো হয়। এতে নারীসহ আহত হয় অন্তত ২০ জন।

ঘটনার পরপরই গাংনী র‌্যাব ক্যাম্প কমাণ্ডার এএসপি তারেক আমান বান্নার নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আতিয়ার রহমানের বাড়ি থেকে সংঘর্ষে ব্যবহৃত ১১টি ধারালো অস্ত্র, ২টি টেটা, একটি বল্লম ও তিনটি মাথাল উদ্ধার করেন। ক্যাম্প কমান্ডার বলেন, হত্যাকারীদের আটকের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাইলমারী ও লক্ষীনারায়ণপুর ধলা গ্রামটি এখন পুরুষ শূন্য। আতিয়ার গ্রুপের কোনো নারী-পুরুষ ঘরে নেই। যার যা ছিল, তা নিয়েই পালিয়েছে। শুধু নিহতের পরিবারের লোকজন বিলাপ করছেন। গৃহবধূ বিলকিছ জানান, টুটুল মেম্বার ও আতিয়ারের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এ কারণে ২০১০ সালে টুটুলের ভাই সেণ্টু এবং ২০১৭ সালে আরেক ভাই এনামুল হক খুন হয়।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান জানান, লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১২ জনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদেরকে আটক দেখানো হবে।

মেহেরপুরের পুলিশ সুপার রাফিউল আলম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এলাকায় পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মেহেরপুরের গাংনীতে মেম্বার প্রার্থী দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ

আপলোড টাইম : ০৯:২৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ নভেম্বর ২০২১

দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১২ জন আটক, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ-র‌্যাব মোতায়েন

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের লক্ষিনারায়ণপুর ধলা গ্রামে মেম্বার পদপ্রার্থী আজমাইন হোসেন টুটুল ও আতিয়ার রহমানের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষে টুটুল পক্ষের আপন দুই সহোদর নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই গ্রুপের আহত হয়েছেন নারীসহ অন্তত ২০ জন। নিহতরা হচ্ছেন ধলা গ্রামের সুলতান হোসেনের ছেলে সাহাদুল ইসলাম (৫৫) ও জাহারুল ইসলাম (৫৭)। আহতদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত সাহাদুলের মেয়ে সুবর্ণা জানান, বর্তমান মেম্বার টুটুল সকালে ভোট চাইতে গেলে আতিয়ার রহমানের লোকজন টুটুলকে ধরে একটি বাঁশ বাগানে নিয়ে মারধর করতে থাকে। খবর পেয়ে সাহাদুল, জাহারুলসহ অন্যান্যরা এগিয়ে গেলে দেশীয় অস্ত্র ও বাঁশের লাঠি নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় আতিয়ার রহমানের লোকজন। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন দুই ভাই সাহাদুল ও জাহারুল। নিহতদের বাড়ি ঘরেও হামলা চালানো হয়। এতে নারীসহ আহত হয় অন্তত ২০ জন।

ঘটনার পরপরই গাংনী র‌্যাব ক্যাম্প কমাণ্ডার এএসপি তারেক আমান বান্নার নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আতিয়ার রহমানের বাড়ি থেকে সংঘর্ষে ব্যবহৃত ১১টি ধারালো অস্ত্র, ২টি টেটা, একটি বল্লম ও তিনটি মাথাল উদ্ধার করেন। ক্যাম্প কমান্ডার বলেন, হত্যাকারীদের আটকের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাইলমারী ও লক্ষীনারায়ণপুর ধলা গ্রামটি এখন পুরুষ শূন্য। আতিয়ার গ্রুপের কোনো নারী-পুরুষ ঘরে নেই। যার যা ছিল, তা নিয়েই পালিয়েছে। শুধু নিহতের পরিবারের লোকজন বিলাপ করছেন। গৃহবধূ বিলকিছ জানান, টুটুল মেম্বার ও আতিয়ারের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এ কারণে ২০১০ সালে টুটুলের ভাই সেণ্টু এবং ২০১৭ সালে আরেক ভাই এনামুল হক খুন হয়।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান জানান, লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১২ জনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদেরকে আটক দেখানো হবে।

মেহেরপুরের পুলিশ সুপার রাফিউল আলম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এলাকায় পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।