ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

মাঘের শীতে কাঁপছে দেশ, জনজীবন বিপর্যস্ত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২
  • / ৩৫ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:

দেশের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গাসহ সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। ঘনকুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে কনকনে হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দেশের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু ও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। গতকাল দেশের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা কম থাকায় সেখানে তীব্র শীত পড়েছে। চুয়াডাঙ্গায় গতকাল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রোববার আবহাওয়া অফিস থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাঙামাটি, ফেনী, মৌলভীবাজার, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, ভোলা, সীতাকুন্ডসহ রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সেটা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এদিন সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘনকুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। এদিন তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা কম থাকায় সেখানে তীব্র শীত পড়েছে। গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঢাকায় ১৩ দশমিক ০, ময়মনসিংহে ১১ দশমিক ২, চট্টগ্রামে ১২ দশমিক ৫, সিলেটে ১১ দশমিক ৯, রাজশাহীতে ৮ দশমিক ৬, রংপুরে ৯ দশমিক ২, খুলনায় ১১ দশমিক ০ এবং বরিশালে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ধারণ করা হয়। পরবর্তী তিন দিনে রাতের তাপমাত্রা বাড়তে পারে।

এছাড়াও গতকাল রোববার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক সামাদুল ইসলাম জানান, রোববার চুয়াডাঙ্গার সর্বনিম্ন তাপামাত্রা ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী আরও দু-এক দিন জেলার তাপমাত্রা কম থাকতে পারে।

এদিকে, পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং এর কাছাকাছি বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। গতকাল সকাল থেকে ঢাকায় পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৪ শতাংশ। দেশের সব বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ গতকাল থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তরাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকায় কুয়াশা পড়ছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো। অনেক জায়গায় সূর্যের দেখা মেলেনি। রংপুর বিভাগে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করেছে। নৌ চলাচলও বিঘ্ন ঘটেছে। ঘনকুয়াশার কারণে শীতে শিশু ও বৃদ্ধরা নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয় পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এই শৈত্যপ্রবাহ আরও দু-একদিন অব্যাহত থাকতে পারে। শ্রীমঙ্গল, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে চলা শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে এবং আশপাশের এলাকায় তা বিস্তৃত হতে পারে। তীব্র ঠাণ্ডায় কোথাও কোথাও কোল্ড ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। শীতে সবচেয়ে বেশি ভুগছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে ঠাণ্ডার কারণে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। মাঠে কাজ করা তো দূরের কথা, দুপুরেও কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে রাস্তাঘাট। হেডলাইট জ্বালিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। নিম্ন আয়ের মানুষ ঠাণ্ডা ও ঘনকুয়াশায় কাজে যেতে না পারায় তাদের আয় কমে গেছে। রংপুরে জেঁকে বসেছে শীত। চরাঞ্চলের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। শীতবস্ত্র না থাকায় তাদের কষ্ট বেড়েছে। দক্ষিণাঞ্চলেও কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যার আগেই মানুষ ঘরে ফেরার তাড়া শুরু করে।

আবহাওয়াবিদ মাহবুব রশীদ বলেন, যথারীতি পুরো মাঘ মাস পর্যন্ত শীত আবহাওয়া থাকবে। তবে এ শীতের মধ্যেই তাপমাত্রা কখনও বাড়বে, কখনও কমবে। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মাঘের শীতে কাঁপছে দেশ, জনজীবন বিপর্যস্ত

আপলোড টাইম : ০৯:৪২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন:

দেশের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গাসহ সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। ঘনকুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে কনকনে হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দেশের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু ও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। গতকাল দেশের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা কম থাকায় সেখানে তীব্র শীত পড়েছে। চুয়াডাঙ্গায় গতকাল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রোববার আবহাওয়া অফিস থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাঙামাটি, ফেনী, মৌলভীবাজার, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, ভোলা, সীতাকুন্ডসহ রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সেটা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এদিন সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘনকুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। এদিন তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা কম থাকায় সেখানে তীব্র শীত পড়েছে। গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঢাকায় ১৩ দশমিক ০, ময়মনসিংহে ১১ দশমিক ২, চট্টগ্রামে ১২ দশমিক ৫, সিলেটে ১১ দশমিক ৯, রাজশাহীতে ৮ দশমিক ৬, রংপুরে ৯ দশমিক ২, খুলনায় ১১ দশমিক ০ এবং বরিশালে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ধারণ করা হয়। পরবর্তী তিন দিনে রাতের তাপমাত্রা বাড়তে পারে।

এছাড়াও গতকাল রোববার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক সামাদুল ইসলাম জানান, রোববার চুয়াডাঙ্গার সর্বনিম্ন তাপামাত্রা ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী আরও দু-এক দিন জেলার তাপমাত্রা কম থাকতে পারে।

এদিকে, পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং এর কাছাকাছি বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। গতকাল সকাল থেকে ঢাকায় পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৪ শতাংশ। দেশের সব বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ গতকাল থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তরাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকায় কুয়াশা পড়ছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো। অনেক জায়গায় সূর্যের দেখা মেলেনি। রংপুর বিভাগে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করেছে। নৌ চলাচলও বিঘ্ন ঘটেছে। ঘনকুয়াশার কারণে শীতে শিশু ও বৃদ্ধরা নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয় পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এই শৈত্যপ্রবাহ আরও দু-একদিন অব্যাহত থাকতে পারে। শ্রীমঙ্গল, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে চলা শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে এবং আশপাশের এলাকায় তা বিস্তৃত হতে পারে। তীব্র ঠাণ্ডায় কোথাও কোথাও কোল্ড ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। শীতে সবচেয়ে বেশি ভুগছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে ঠাণ্ডার কারণে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। মাঠে কাজ করা তো দূরের কথা, দুপুরেও কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে রাস্তাঘাট। হেডলাইট জ্বালিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। নিম্ন আয়ের মানুষ ঠাণ্ডা ও ঘনকুয়াশায় কাজে যেতে না পারায় তাদের আয় কমে গেছে। রংপুরে জেঁকে বসেছে শীত। চরাঞ্চলের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। শীতবস্ত্র না থাকায় তাদের কষ্ট বেড়েছে। দক্ষিণাঞ্চলেও কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যার আগেই মানুষ ঘরে ফেরার তাড়া শুরু করে।

আবহাওয়াবিদ মাহবুব রশীদ বলেন, যথারীতি পুরো মাঘ মাস পর্যন্ত শীত আবহাওয়া থাকবে। তবে এ শীতের মধ্যেই তাপমাত্রা কখনও বাড়বে, কখনও কমবে। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে।