ইপেপার । আজ রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

ভাইকে ফাঁসাতে নিজের ছেলেকে অপহরণের নাটক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৩৪:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ অগাস্ট ২০২২
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় অপহরণের নাটক। পুলিশের জেরার মূলে বেরিয়ে এলো আসল ঘটনা। অবশেষে ভাইকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফাঁসলেন মারজান বেগম নামের এক নারী। তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দীননাথপুর নিমতলা পাড়ার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী। গেল ২৬ তারিখ থেকে সাজানো অপহরণের নাটকের আসল রহস্য উদ্ঘাটন করলেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাব্বুর রহমান কাজল। তিনি তাঁর বিচক্ষণতায় ওই রহস্যের উদ্ঘাটন করেন। তবে ওই রহস্য উদ্ঘাটন করতে তাকে ছুটতে হয়েছে অনেক জায়গায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাব্বুর রহমান কাজল জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দীননাথপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম তার ১২ বছর বয়সী ছেলে আপনকে খুঁজে না পেয়ে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৬ তারিখে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একই গ্রামে তার নানীর বাড়িতে যায় রাতের খাবার দিতে। সেখান থেকে আপন আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে কোনো সন্ধান না পেয়ে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মারজান বেগমের নিকট বিষয়টি চানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার খালা ও ভাই ইউছুপ আলীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সাথে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। তারাই আমার ছেলেকে অপহরণ করতে পারে।’
ওসি মাহাব্বুর রহমান আরও বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিতে শুরু করি। এভাবে চলার পর আমরা ইউছুপকে খুঁজতে থাকি। ইউছুপকে না পেয়ে তার মোবাইল ফোনে কল করলে বন্ধ পেয়ে আমাদের সন্দেহ বাড়তে থাকে। আমরা নিশ্চিত ছিলাম আসলেই এটা অপহরণ। বিষয়টি আমরা পুলিশ সুপারসহ কর্তৃপক্ষকে জানাই। এভাবে চলার পর আজ (গতকাল) রোববার দুপুরে খবর আসে ওই ছেলেকে পাওয়া গেছে। আমরা প্রথমে আপনের সাথে মোবাইলে কথা বলে বিষয়টি জানার চেষ্টা করি। আপন বলে, আমার হাত,পা বেঁধে মাঠের মধ্যে ফেলে রাখে। অনেক কষ্টে রোববার সকালে আমি সেখান থেকে ফিরে আসি। আপনকে একের পর এক জিজ্ঞাসাবাদে সে আসল ঘটনা শিকার করে। আপন বলেছে, সে বলে আমি একটা বাড়িতে গিয়েছিলাম। গতকাল বিকেলে আপনসহ তার বাবা-মাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসা করি এবং আপনকে তারা কোথায় রেখেছিল, সেখানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এরই মাঝে আপনের মা মারজান বেগম মাথা ঘুরে পড়ে যায়। আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিই। মারজান বেগমের আচার-আচরণে আমাদের সন্দেহের আর কিছু বাকি থাকে না। কৌশলে মারজান বেগমকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আসল ঘটনা বলতে থাকে।’
মারজান বেগম বলেন, ‘আমার ভাই ইউছুপ আলীকে ফাঁসানোর জন্য আমার ছেলে আপনকে গাইদঘাটে আমার এক আত্মীয় কালামের বাড়িতে রেখে আসি। পরে থানায় ডায়েরি করি। আমার ভুল হয়ে গেছে আমাকে ক্ষমা করে দেন। পরে এ ধরণের ভুল পুনরায় করার অঙ্গীকার করলে এবং বিষয়টি নিয়ে কারও অভিযোগ না থাকায় মারজান ও তার স্বামীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ভাইকে ফাঁসাতে নিজের ছেলেকে অপহরণের নাটক

আপলোড টাইম : ০৮:৩৪:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় অপহরণের নাটক। পুলিশের জেরার মূলে বেরিয়ে এলো আসল ঘটনা। অবশেষে ভাইকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফাঁসলেন মারজান বেগম নামের এক নারী। তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দীননাথপুর নিমতলা পাড়ার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী। গেল ২৬ তারিখ থেকে সাজানো অপহরণের নাটকের আসল রহস্য উদ্ঘাটন করলেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাব্বুর রহমান কাজল। তিনি তাঁর বিচক্ষণতায় ওই রহস্যের উদ্ঘাটন করেন। তবে ওই রহস্য উদ্ঘাটন করতে তাকে ছুটতে হয়েছে অনেক জায়গায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাব্বুর রহমান কাজল জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দীননাথপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম তার ১২ বছর বয়সী ছেলে আপনকে খুঁজে না পেয়ে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৬ তারিখে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একই গ্রামে তার নানীর বাড়িতে যায় রাতের খাবার দিতে। সেখান থেকে আপন আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে কোনো সন্ধান না পেয়ে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মারজান বেগমের নিকট বিষয়টি চানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার খালা ও ভাই ইউছুপ আলীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সাথে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। তারাই আমার ছেলেকে অপহরণ করতে পারে।’
ওসি মাহাব্বুর রহমান আরও বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিতে শুরু করি। এভাবে চলার পর আমরা ইউছুপকে খুঁজতে থাকি। ইউছুপকে না পেয়ে তার মোবাইল ফোনে কল করলে বন্ধ পেয়ে আমাদের সন্দেহ বাড়তে থাকে। আমরা নিশ্চিত ছিলাম আসলেই এটা অপহরণ। বিষয়টি আমরা পুলিশ সুপারসহ কর্তৃপক্ষকে জানাই। এভাবে চলার পর আজ (গতকাল) রোববার দুপুরে খবর আসে ওই ছেলেকে পাওয়া গেছে। আমরা প্রথমে আপনের সাথে মোবাইলে কথা বলে বিষয়টি জানার চেষ্টা করি। আপন বলে, আমার হাত,পা বেঁধে মাঠের মধ্যে ফেলে রাখে। অনেক কষ্টে রোববার সকালে আমি সেখান থেকে ফিরে আসি। আপনকে একের পর এক জিজ্ঞাসাবাদে সে আসল ঘটনা শিকার করে। আপন বলেছে, সে বলে আমি একটা বাড়িতে গিয়েছিলাম। গতকাল বিকেলে আপনসহ তার বাবা-মাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসা করি এবং আপনকে তারা কোথায় রেখেছিল, সেখানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এরই মাঝে আপনের মা মারজান বেগম মাথা ঘুরে পড়ে যায়। আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিই। মারজান বেগমের আচার-আচরণে আমাদের সন্দেহের আর কিছু বাকি থাকে না। কৌশলে মারজান বেগমকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আসল ঘটনা বলতে থাকে।’
মারজান বেগম বলেন, ‘আমার ভাই ইউছুপ আলীকে ফাঁসানোর জন্য আমার ছেলে আপনকে গাইদঘাটে আমার এক আত্মীয় কালামের বাড়িতে রেখে আসি। পরে থানায় ডায়েরি করি। আমার ভুল হয়ে গেছে আমাকে ক্ষমা করে দেন। পরে এ ধরণের ভুল পুনরায় করার অঙ্গীকার করলে এবং বিষয়টি নিয়ে কারও অভিযোগ না থাকায় মারজান ও তার স্বামীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।