ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

পেরিলার খেত পরিদর্শনকালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক মহাপরিচালক ড. হামিদুর রহমান

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১
  • / ৫১ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদায় উচ্চফলনশীল ভোজ্যতেল ফসল পেরিলার পরীক্ষামূলক খেত পরিদর্শন করলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞপুলের সদস্য ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. হামিদুর রহমান ও গবেষক অব্দুল কাইউম। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার নাস্তিপুর মাঠের এই খেত পরিদর্শন করেন তিনি। পরে সেখানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মাসুম আব্দুল্লার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টা হামিদুর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্তরেট ডিগ্রি অর্জনের জন্য গবেষণাকারী কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল কাইউম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান। উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান জানান, দামুড়হুদা উপজেলায় নতুন ফসল পেরিলার পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় লোকনাথপুর, দর্শনা, মদনা ও কার্পাসডাঙ্গায় প্রাথমিকভাবে কয়েকজন কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে এই চাষ করছেন। গতকাল রোববার দুপুরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টা হামিদুর রহমান ও গবেষক আব্দুল কাইউম এই পরীক্ষামূলক খেত পরিদর্শন করেন।
গবেষক আব্দুল কাইউম বলেন, ‘এটি আমাদের দেশে একটি নতুন ফসল। এটি সাধারণত কোরিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম, ভারত, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পেরিলা চাষ হয়ে থাকে। প্রথমবারের মতো আমাদের দেশে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করা হয়েছে। এই ফসল সাধারণত উঁচু জমিতে ভালো হয়। পেরিলা থেকে উৎপাদিত তেলের দামও ভালো। এই তেল ২ হাজার থেকে ২১০০ টাকা কেজি দরে এর তেল বিক্রি হয়ে থাকে। ফলনও ভালো, বিঘাপ্রতি ৮ থেকে ৯ মণ ফসল মেলে। জুন-জুলাই মাস রোপণের উপযুক্ত সময়। রোপা আউশ ও পাট কাটার পর পতিত জমি অথবা চারা বাগানে এটা রোপণ করা যায়। ৯০ দিনের ফসল হলেও বীজতলা থেকে চারা তৈরি করে রোপণের ৬০ দিনের মধ্যে উঠে যায়। এসময় সাধারণত কম-বেশি বৃষ্টি হয়ে থাকে। তাই সেচ তেমন একটা লাগে না। সামান্য সার ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হয়।
প্রধান অতিথি কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞপুলের সদস্য ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. হামিদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে ভোজ্য তেলের ব্যপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিবছর বিদেশ থেকে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার তেল আমদানি করা হয়ে থাকে। পেরিলার শতকরা ৬৫ ভাগেই মেলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এর তেল আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। বিশেষ করে হৃদযন্ত্র, মস্তিস্ক ও ত্বকসহ ডায়াবেটিস রোগে এটি খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। পেরিলার তেল স্বাস্থ্যসম্মত। এর পাতা সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। এতে সরিষা বা অন্যান্য তেলে ইউরেসিক অ্যাসিড থাকলেও এই তেলে তা নেই। এই চাষে সফল হলে বাজার দর ভালো হওয়ায় কৃষকরা যেমন লভবান হবে, তেমনই এলাকায় তেলের চাহিদা কিছুটা হলেও কমে আসবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

পেরিলার খেত পরিদর্শনকালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক মহাপরিচালক ড. হামিদুর রহমান

আপলোড টাইম : ০৯:২৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১

দামুড়হুদায় উচ্চফলনশীল ভোজ্যতেল ফসল পেরিলার পরীক্ষামূলক খেত পরিদর্শন করলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞপুলের সদস্য ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. হামিদুর রহমান ও গবেষক অব্দুল কাইউম। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার নাস্তিপুর মাঠের এই খেত পরিদর্শন করেন তিনি। পরে সেখানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মাসুম আব্দুল্লার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টা হামিদুর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্তরেট ডিগ্রি অর্জনের জন্য গবেষণাকারী কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল কাইউম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান। উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান জানান, দামুড়হুদা উপজেলায় নতুন ফসল পেরিলার পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় লোকনাথপুর, দর্শনা, মদনা ও কার্পাসডাঙ্গায় প্রাথমিকভাবে কয়েকজন কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে এই চাষ করছেন। গতকাল রোববার দুপুরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টা হামিদুর রহমান ও গবেষক আব্দুল কাইউম এই পরীক্ষামূলক খেত পরিদর্শন করেন।
গবেষক আব্দুল কাইউম বলেন, ‘এটি আমাদের দেশে একটি নতুন ফসল। এটি সাধারণত কোরিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম, ভারত, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পেরিলা চাষ হয়ে থাকে। প্রথমবারের মতো আমাদের দেশে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করা হয়েছে। এই ফসল সাধারণত উঁচু জমিতে ভালো হয়। পেরিলা থেকে উৎপাদিত তেলের দামও ভালো। এই তেল ২ হাজার থেকে ২১০০ টাকা কেজি দরে এর তেল বিক্রি হয়ে থাকে। ফলনও ভালো, বিঘাপ্রতি ৮ থেকে ৯ মণ ফসল মেলে। জুন-জুলাই মাস রোপণের উপযুক্ত সময়। রোপা আউশ ও পাট কাটার পর পতিত জমি অথবা চারা বাগানে এটা রোপণ করা যায়। ৯০ দিনের ফসল হলেও বীজতলা থেকে চারা তৈরি করে রোপণের ৬০ দিনের মধ্যে উঠে যায়। এসময় সাধারণত কম-বেশি বৃষ্টি হয়ে থাকে। তাই সেচ তেমন একটা লাগে না। সামান্য সার ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হয়।
প্রধান অতিথি কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞপুলের সদস্য ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. হামিদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে ভোজ্য তেলের ব্যপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিবছর বিদেশ থেকে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার তেল আমদানি করা হয়ে থাকে। পেরিলার শতকরা ৬৫ ভাগেই মেলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এর তেল আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। বিশেষ করে হৃদযন্ত্র, মস্তিস্ক ও ত্বকসহ ডায়াবেটিস রোগে এটি খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। পেরিলার তেল স্বাস্থ্যসম্মত। এর পাতা সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। এতে সরিষা বা অন্যান্য তেলে ইউরেসিক অ্যাসিড থাকলেও এই তেলে তা নেই। এই চাষে সফল হলে বাজার দর ভালো হওয়ায় কৃষকরা যেমন লভবান হবে, তেমনই এলাকায় তেলের চাহিদা কিছুটা হলেও কমে আসবে।’