ইপেপার । আজ রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

পাটের বাম্পার ফলনেও হাসি নেই কৃষকের মুখে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০২২
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

দর্শনা অফিস: চলতি পাট উৎপাদন মৌসুমে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে পাটের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। চলতি বর্ষা মৌসুমে ঠিক মতো বৃষ্টি হয়নি। ফলে খালে-বিলে পানি না থাকায় পাট জাগ দেওয়া (পচানো) নিয়ে এ উপজেলার কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। খেতের পাট কাটতে পারছেন না। প্রবল বর্ষার জন্য অপেক্ষা করতে করতে খেতের পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। কৃষকদের কেউ কেউ ট্রাক্টর ও পাওয়ার ট্রলি বাড়তি ভাড়া করে দূরে মাথাভাঙ্গা নদী, চিত্রা নদী, পুকুরে বা ডোবা নালায় শ্যালো-মেশিন দিয়ে পানি জমিয়ে পাট জাগ দিচ্ছে। ফলে পাটের চাষে খরচ বেড়ে গেছে ৩-৪ গুন। এছাড়া অনেক সকল কৃষক পাট কেটে ধান লাগানোর আশায় আগাম পাট চাষ করে বিপাকে পড়েছে। পাট কাটতে না পেরে খেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে।

এবিষয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, চলতি পাঠ উৎপাদন মৌসুমে দামুড়হুদা উপজেলায় ৭ হাজার ৬৪৮ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। দামুড়হুদার লোকপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আলিম জানান, তিন বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলেন, ৬৫০ আটি পাট হয়েছে। বৃষ্টির অপেক্ষায় থেকে শেষমেষ সড়কের ধারের গর্তে পলেথিন বিছিয়ে ৫ টাকা আঁটি দরে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি দিয়ে পাট পচাতে দেওয়া হয়েছে। এতে তার বাড়তি বিঘা প্রতি ৩ হাজার ৫ শ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। হাতিভাঙ্গা গ্রামের টিপু সুলতান বলেন, তাদের ৬ ভাইয়ের ১৫ বিঘা জমি পাট রয়েছে। পাট কেটে কুমড়ার আবাদ করব। কিন্তু পানির অভাবে কাটতে পারছি না। শ্যালো মেশিন মালিকরা গর্তে পানি দিয়ে ৭ টাকা আটি চাচ্ছে। এতে করে অনেক বাড়তি খরচ হয়ে যাবে। এদিকে জমিতেও রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ২-১ দিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে আর রাখা যাবে না ৭ টাকা আটি দরে পচাঁতে হবে। মুক্তারপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তার আড়াই বিঘা জমিতে পাট রয়েছে।

এদিকে, উপজেলা কৃষক সংগঠন বলছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভৈরব নদীতে পাট জাগ দিতে দিচ্ছে না। এখানে পাট পচাঁতে দিলে কোনো সমস্যা হতো না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান মনির বলেন, চলতি মৌসুমে মাঠের পাট খুবই ভালো হয়েছে, কিন্তু ভরা বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় খাল, বিল, ডোবায় পানি না থাকায় চাষিরা পাট কাটতে পারছে না। অনেক উচু জমিতে পাট শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। অনেকে নিচু এলাকায় শ্যালো মেশিনের দিয়ে পানি কিনে জাঁগ দিচ্ছে। এতে তাদের উৎপাদন খরচ অনেকাংশে বেড়ে যাবে। ডোবায় পাট জাগ দিচ্ছে দামুড়হুদা উপজেলার কৃষকরা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

পাটের বাম্পার ফলনেও হাসি নেই কৃষকের মুখে

আপলোড টাইম : ০৮:০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০২২

দর্শনা অফিস: চলতি পাট উৎপাদন মৌসুমে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে পাটের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। চলতি বর্ষা মৌসুমে ঠিক মতো বৃষ্টি হয়নি। ফলে খালে-বিলে পানি না থাকায় পাট জাগ দেওয়া (পচানো) নিয়ে এ উপজেলার কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। খেতের পাট কাটতে পারছেন না। প্রবল বর্ষার জন্য অপেক্ষা করতে করতে খেতের পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। কৃষকদের কেউ কেউ ট্রাক্টর ও পাওয়ার ট্রলি বাড়তি ভাড়া করে দূরে মাথাভাঙ্গা নদী, চিত্রা নদী, পুকুরে বা ডোবা নালায় শ্যালো-মেশিন দিয়ে পানি জমিয়ে পাট জাগ দিচ্ছে। ফলে পাটের চাষে খরচ বেড়ে গেছে ৩-৪ গুন। এছাড়া অনেক সকল কৃষক পাট কেটে ধান লাগানোর আশায় আগাম পাট চাষ করে বিপাকে পড়েছে। পাট কাটতে না পেরে খেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে।

এবিষয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, চলতি পাঠ উৎপাদন মৌসুমে দামুড়হুদা উপজেলায় ৭ হাজার ৬৪৮ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। দামুড়হুদার লোকপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আলিম জানান, তিন বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলেন, ৬৫০ আটি পাট হয়েছে। বৃষ্টির অপেক্ষায় থেকে শেষমেষ সড়কের ধারের গর্তে পলেথিন বিছিয়ে ৫ টাকা আঁটি দরে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি দিয়ে পাট পচাতে দেওয়া হয়েছে। এতে তার বাড়তি বিঘা প্রতি ৩ হাজার ৫ শ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। হাতিভাঙ্গা গ্রামের টিপু সুলতান বলেন, তাদের ৬ ভাইয়ের ১৫ বিঘা জমি পাট রয়েছে। পাট কেটে কুমড়ার আবাদ করব। কিন্তু পানির অভাবে কাটতে পারছি না। শ্যালো মেশিন মালিকরা গর্তে পানি দিয়ে ৭ টাকা আটি চাচ্ছে। এতে করে অনেক বাড়তি খরচ হয়ে যাবে। এদিকে জমিতেও রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ২-১ দিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে আর রাখা যাবে না ৭ টাকা আটি দরে পচাঁতে হবে। মুক্তারপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তার আড়াই বিঘা জমিতে পাট রয়েছে।

এদিকে, উপজেলা কৃষক সংগঠন বলছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভৈরব নদীতে পাট জাগ দিতে দিচ্ছে না। এখানে পাট পচাঁতে দিলে কোনো সমস্যা হতো না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান মনির বলেন, চলতি মৌসুমে মাঠের পাট খুবই ভালো হয়েছে, কিন্তু ভরা বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় খাল, বিল, ডোবায় পানি না থাকায় চাষিরা পাট কাটতে পারছে না। অনেক উচু জমিতে পাট শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। অনেকে নিচু এলাকায় শ্যালো মেশিনের দিয়ে পানি কিনে জাঁগ দিচ্ছে। এতে তাদের উৎপাদন খরচ অনেকাংশে বেড়ে যাবে। ডোবায় পাট জাগ দিচ্ছে দামুড়হুদা উপজেলার কৃষকরা।