ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

পাকশিয়া বিলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা, রাজু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হিন্দুু সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ ও হুমকির অভিযোগ

প্রতিবেদক, তিতুদহ:
  • আপলোড টাইম : ০৭:১১:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ মে ২০২২
  • / ৭৭ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়নের গহেরপুর পাকশিয়া বিল নিয়ে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চলছে নানা ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা। চলছে গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজু ও গহেরপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির সদস্যদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। এরই প্রেক্ষিতে গত চারদিন ধরে অত্র এলাকায় ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

গহেরপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি রহিত মাঝি বলেন, ‘বিল হাক দেবার পর রাজু চেয়ারম্যান তার দলবল নিয়ে প্রতিনিয়ত আমাদের মাঝি সম্পদায়সহ বিল হাকের সাথে যারা জড়িত আছে, তাদের সবাইকে নানা ধরণের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যা আমাদের প্রাণনাশের বিষয় হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ঈদের আগের রাতে প্রকাশ্যে গহেরপুর গ্রাম থেকে হিন্দু সম্প্রদায় উচ্ছেদ করার হুমকি দেয়। পরদিন সকালে গ্রামের অনেকজন নারী-পুরুষ মিলে রাজু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঝাটা মিছিল করায় রাতে আমাদের ওপর দেশীয় ধারালো রামদা-চাপাতি হাতুড়িসহ অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে হামলা করলে আমরা সবাই একত্রিত হয়ে তাদেরকে তাবড় দিই। পরে একটি রামদা উদ্ধার করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ, আমরা তো তাদের মতো ক্ষমতাসীন না, তাই ভয়ে তেমন কিছু বলতেও পারছি না।’

এবিষয়ে গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজু বলেন, ‘বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি এসম্পর্কে কিছুই জানি না।’

এবিষয়ে গতকাল দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, তদন্ত) নিখিল সর্বাধিক তদন্ত করার জন্য সরেজমিনে গহেরপুর পাকশিয়া বিলে আসে  সর্বসাধারণের সামনে বলেন, বিলটি পাবার জন্য রিট চলছে। তাই হাইকোর্টের সুনির্দিষ্ট রায় না আসা পর্যন্ত সবাইকে বিলের আশেপাশে না যাওয়ার জন্য বলেন।

এ বিষয়ে তিতুদহ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মেজবাহ বলেন, ‘গত বুধবার রাতে আমাদের কাছে ফোন আসে কে বা কারা গহেরপুর মাঝি পাড়ায় হামলা করেছে। আমি তৎক্ষণাৎ ফোর্স নিয়ে এসে দেখতে পায় কারা যেন একটি ধারালো রামদা ফেলে চলে গেছে।’ উল্লেখ্য, গত চারদিন পূর্বে রাজু চেয়ারম্যান সমবায় সমিতির সদস্যদের নানা ধরণের হুমকি ও হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারকে উচ্ছেদ করবেন বলে অভিযোগ উঠে। এরই প্রেক্ষিতে গত বুধবার সকালে গ্রামের দেড় শতাধিক মানুষ রাজু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঝাটা মিছিল করেন। এ ঘটনার পর রাতেই রাজু চেয়ারম্যানের ১০-১২ জন লোকজন হিন্দু পরিবারের লোকদের ওপর হামলা করতে যায় বলেও অভিযোগ উঠে। এসময় অত্র মহল্লার সবাই হামলা করতে ব্যক্তিদের ওপর একসাথে আক্রমণ করলে তখন সবাই পালিয়ে যায়। এসময় একটি ধারালো রামদা উদ্ধার করে তারা। পরে তিতুদহ পুলিশ ক্যাম্পে জানালে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে রামদাটি পুলিশ হেফাজতে নেয়। এবিষয়ে ওই রাতে দু’পক্ষই দর্শনা থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

পাকশিয়া বিলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা, রাজু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হিন্দুু সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ ও হুমকির অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৭:১১:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ মে ২০২২

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়নের গহেরপুর পাকশিয়া বিল নিয়ে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চলছে নানা ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা। চলছে গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজু ও গহেরপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির সদস্যদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। এরই প্রেক্ষিতে গত চারদিন ধরে অত্র এলাকায় ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

গহেরপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি রহিত মাঝি বলেন, ‘বিল হাক দেবার পর রাজু চেয়ারম্যান তার দলবল নিয়ে প্রতিনিয়ত আমাদের মাঝি সম্পদায়সহ বিল হাকের সাথে যারা জড়িত আছে, তাদের সবাইকে নানা ধরণের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যা আমাদের প্রাণনাশের বিষয় হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ঈদের আগের রাতে প্রকাশ্যে গহেরপুর গ্রাম থেকে হিন্দু সম্প্রদায় উচ্ছেদ করার হুমকি দেয়। পরদিন সকালে গ্রামের অনেকজন নারী-পুরুষ মিলে রাজু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঝাটা মিছিল করায় রাতে আমাদের ওপর দেশীয় ধারালো রামদা-চাপাতি হাতুড়িসহ অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে হামলা করলে আমরা সবাই একত্রিত হয়ে তাদেরকে তাবড় দিই। পরে একটি রামদা উদ্ধার করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ, আমরা তো তাদের মতো ক্ষমতাসীন না, তাই ভয়ে তেমন কিছু বলতেও পারছি না।’

এবিষয়ে গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজু বলেন, ‘বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি এসম্পর্কে কিছুই জানি না।’

এবিষয়ে গতকাল দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, তদন্ত) নিখিল সর্বাধিক তদন্ত করার জন্য সরেজমিনে গহেরপুর পাকশিয়া বিলে আসে  সর্বসাধারণের সামনে বলেন, বিলটি পাবার জন্য রিট চলছে। তাই হাইকোর্টের সুনির্দিষ্ট রায় না আসা পর্যন্ত সবাইকে বিলের আশেপাশে না যাওয়ার জন্য বলেন।

এ বিষয়ে তিতুদহ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মেজবাহ বলেন, ‘গত বুধবার রাতে আমাদের কাছে ফোন আসে কে বা কারা গহেরপুর মাঝি পাড়ায় হামলা করেছে। আমি তৎক্ষণাৎ ফোর্স নিয়ে এসে দেখতে পায় কারা যেন একটি ধারালো রামদা ফেলে চলে গেছে।’ উল্লেখ্য, গত চারদিন পূর্বে রাজু চেয়ারম্যান সমবায় সমিতির সদস্যদের নানা ধরণের হুমকি ও হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারকে উচ্ছেদ করবেন বলে অভিযোগ উঠে। এরই প্রেক্ষিতে গত বুধবার সকালে গ্রামের দেড় শতাধিক মানুষ রাজু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঝাটা মিছিল করেন। এ ঘটনার পর রাতেই রাজু চেয়ারম্যানের ১০-১২ জন লোকজন হিন্দু পরিবারের লোকদের ওপর হামলা করতে যায় বলেও অভিযোগ উঠে। এসময় অত্র মহল্লার সবাই হামলা করতে ব্যক্তিদের ওপর একসাথে আক্রমণ করলে তখন সবাই পালিয়ে যায়। এসময় একটি ধারালো রামদা উদ্ধার করে তারা। পরে তিতুদহ পুলিশ ক্যাম্পে জানালে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে রামদাটি পুলিশ হেফাজতে নেয়। এবিষয়ে ওই রাতে দু’পক্ষই দর্শনা থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে।