ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

নির্বাহী পরিচালকের ছবি নিয়ে শিষ্টাচার বর্হিভূত কার্যক্রমের প্রতিবাদে ওয়েভ কর্মীদের সংবাদ সম্মেলন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:১৯:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালকের ছবি নিয়ে শিষ্টাচার বর্হিভূত কার্যক্রম ও সংস্থা কর্তৃক অকারণে চাকুরিচ্যুতিসহ সকল অভিযোগকে বানোয়াট এবং মিথ্যা দাবি করে সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও কর্র্মীরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা মালোপাড়াস্থ ওয়েভ ট্রেনিং সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে গত ৭ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধবন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে দেয়া স্মারকলিপির বিষয়ে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের বক্তব্য জানায় সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম ও কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্য কানিজ ফাতেমা। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি ২০২৩ সকাল ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে ৫৯ জন নারী-পুরুষ-যুব-কিশোর-শিশু মিলে এক মানববন্ধন করে। যাদের হাতে সংস্থা ও নির্বাহী পরিচালক বিরোধী বক্তব্য সম্বলিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন ছিল। মানববন্ধনে সংস্থা এবং সংস্থা প্রধানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপনের পাশাপাশি নির্বাহী পরিচালক যিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা তাঁর ছবি নিয়ে শিষ্টাচার বর্হিভূত কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যা আমাদের সকলকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে। ওইদিন স্মারকলিপিতে উল্লেখিত, বিগত ৩ বছরে সংস্থা কর্তৃক অকারণে ৪৫০-৫০০ জনকে চাকুরীচ্যুতিসহ সকল অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে বানোয়াট এবং মিথ্যা। বিগত ৩১ বছর ধরে সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা এ ধরণের কোন অভিযোগ পাইনি। তাই এ সকল অভিযোগ উত্থাপনের মূল কারণ সম্পর্কে আমাদের খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ১৯৯০ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় ‘ওয়েভ ফাউন্ডেশন’র জন্ম। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার সন্তান। তাঁর সাহসী নেতৃত্ব আর পরিশ্রমে অত্র জেলার পাশাপাশি বর্তমানে খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল এবং সিলেট বিভাগের ২২ জেলায় সংস্থার বহুমুখী কার্যক্রম এবং বিভিন্ন ইস্যুতে দেশব্যাপী পলিসি অ্যাডভোকেসির কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। সংস্থা বিগত ৩২ বছরে দারিদ্র্য বিমোচন ও জীবিকায়ন, কৃষি উন্নয়ন ও ক্ষুদ্রঋণ, সুশাসন ও অধিকার, সামাজিক উন্নয়ন ও যুব ক্ষমতায়ন এবং সোলার ও জলবায়ু ন্যায্যতা কর্মসূচির অধীনে ১ কোটি ১৭ লক্ষের বেশি মানুষের সাথে সরাসরি কাজ করেছে। বর্তমানে ১০ লক্ষের অধিক মানুষের সাথে সরাসরি এবং সরকারি সেবার দায়বদ্ধতা, খাদ্য অধিকার ও স্থানীয় সরকার ইস্যুতে দেশব্যাপি ক্যাম্পেইন ও পলিসি অ্যাডভোকেসির কাজ করছে। সংস্থার এ সকল কর্মসূচিতে ২ হাজারের বেশি কর্মী-কর্মকর্তা এবং ৪ হাজরের বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রয়েছে (সময়ে সময়ে কোন প্রকল্প বা কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এ সংখ্যার কম-বেশি পরিবর্তন হয়)।

লিখিত বক্তব্যে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্য কানিজ ফাতেমা সংস্থার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেওয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানান। জেনারেল বডি, গভর্নিং বডি, সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম (এসএমটি) সম্পর্কেও তিনি অবহিত করেন। সংস্থার প্রাক্তন উপ-নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেনের অব্যাহতি এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়সমূহ তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাহী পরিচালকের পঞ্চম ভাই আনোয়ার হোসেন ১৯৯৬ সালে সংস্থায় প্রশিক্ষক পদে চাকুরিতে যোগদান করে। তার কাজের ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালে উপ-নির্বাহী পরিচালক পদে পদোন্নতি পায়। পদোন্নতি প্রাপ্তির প্রেক্ষিতে প্রথমে ঋণ কর্মসূচি পরবর্তীতে সোলার কর্মসূচি এবং চুয়াডাঙ্গার অদূরে কোষাঘাটায় সংস্থার সহযোগী প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ক্যাপাসিটি-সিডিসি কেন্দ্রিক ছাগল খামার, দুম্বা খামার, মৎস্য হ্যাচারী এবং মেহেরপুর সড়কে অবস্থিত ভেড়া খামারসহ সংস্থার ৩টি এন্টারপ্রাইজ তার দায়িত্বের অধীন ছিল।

শুরুর দিকে তার দায়িত্বের অধীন কাজের ফলাফল মোটামুটি ভাল দেখা গেলেও পর্যায়ক্রমে তা খারাপ হতে থাকে এবং ২০১৫ সালে নির্বাহী পরিচালকের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ঋণ কর্মসূচির ফলাফল কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক পিছিয়ে। এ বিষয়ে ২০১৭ সালে ঋণ কর্মসূচির দূর্বলতা নিয়ে পিকেএসএফ থেকেও একটি চিঠি আসে। পরবর্তীতে সোলার কর্মসূচি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ইডকলের ঋণ পরিশেধের ক্ষেত্রে সংস্থা ঝুকিঁর সম্মুখীন। এছাড়া সিডিসি কেন্দ্রিক কার্যক্রমে দূর্বলতার ফলে দীর্ঘদিন ধরে সংস্থা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কাজের ফলাফলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভাল ব্যবস্থা ছিল না। এ ধারাবাহিকতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে সংস্থার ঋণ কর্মসূচির প্রথম লোকসান হয় (দেশে এরকম কাজের ফলাফল অন্য কোন সংস্থার আছে কিনা জানা যায় না)। এ প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের জুলাই থেকে নির্বাহী পরিচালক সরাসরি ঋণ কর্মসূচির তদারকি করতে থাকেন এবং অক্টোবর মাসে প্রাক্তন উপ-নির্বাহী পরিচালকের মাঠ পর্যায়ের দায়িত্ব কমিয়ে দিয়ে পরিচালক কফিল উদ্দীনকে কর্মসূচির অপারেশনস প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করেন। তখন থেকেই মূলত আনোয়ার হোসেন বিভিন্নভাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে কফিল উদ্দীনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এবং নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে মনিটরিং এর নামে কর্মীদের চাকুরি চলে যাচ্ছে বলে মিথ্যা প্রচারণা শুরু করে।

আনোয়ার হোসেনের অধীন কার্যক্রম পরিচালনায় সকল ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া, নিয়মিত মনিটরিং ও ফলাফলের জাবদিহিতাসহ ব্যবস্থাপনার সকল ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতা এবং দূর্বলতা ছিল বলেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের মার্চ মাসে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিদর্শন প্রতিবেদন, পরবর্তীতে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ১ জুলাই ২০২২ সিডিসি কেন্দ্রিক ৩ জনকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে আনোয়ার হোসেন সংস্থার ভিতরে কারো কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে নির্বাহী পরিচালকের ৪র্থ ভাই ও সংস্থার প্রাক্তন সাধারণ সদস্য আশরাফ আলম বাবুর সাথে যোগসাজেশে সামাজিকভাবে সংস্থার নেতৃস্থানীয় অনেকের ও নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার, মিথ্যা ও বানোয়াট কথা প্রচার এবং ব্যক্তিগতভাবে অনেককে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে।
আনোয়ার হোসেন ও আশরাফ আলম বাবুর যোগসাজেশে সংগঠন বিরোধী সামগ্রিক কার্যক্রম পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে গত ১০ নভেম্বর ২০২২ গভর্নিং বডির ১৩৭ তম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আনোয়ার হোসেনকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। পাশাপাশি ২৬ নভেম্বর ২০২২ সংস্থার বিশেষ সাধারণ সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠদের মতামতের ভিত্তিতে সাধারণ সদস্য আশরাফ আলম বাবুকে সংস্থার জেনারেল বডি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্য কানিজ ফাতেমা সংস্থা থেকে চাকরিচ্যুতি এবং প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ড নিয়ে জানান, সাধারণভাবে সরকারি-বেসরকারি-প্রাইভেট সেক্টরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির মতো আমাদের সংস্থায়ও প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন নতুন নিয়োগ হয়, একইভাবে ভাল সুযোগ এবং বিভিন্ন কারণে অনেকে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেয়। কেউ কেউ অবসর গ্রহণ করে, পাশাপাশি অর্থ আত্মসাৎ, দীর্ঘ সময়কাল ধরে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ও সংস্থার অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করলে অব্যহতি বা বাধ্যতামূলক অবসর এবং নারী সহকর্মীদের সাথে সহিংস আচরণ করলে বহিষ্কার করা হয়। সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী সকলকে প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ডের সুবিধা দেয়া হয়। এ বিষয়ে নিম্নে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদত্ত হলো এবং প্রাসঙ্গিক কথা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুলে ধরবেন।

লিখিত বক্তব্যে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্য কানিজ ফাতেমা একইদিনে ৬৫ জনকে পদোন্নতি এবং ১০-১২ জনকে ডাবল পদোন্নতির বিষয়ে খোলোসা করেন। নিয়ম মাফিক সবকিছু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্থা কর্তৃক প্রতি ৫ বছর পরপর পে-স্কেল রিভিউ করা হয়। ২০১৭ সালে পে-স্কেল রিভিউ করার পর সম্প্রতি ২০২২ সালে পে-স্কেল রিভিউ করা হয়েছে। ২০২২ এ রিভিউ পে-স্কেল অনুযায়ী ৬৫ জন নয়, প্রকৃতপক্ষে মোট ৮৩ জনকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও ৭ জন কর্মকর্তা যারা আরও বেশি দায়িত্ব পালনে ইতিমধ্যে সক্ষমতা প্রদর্শন করেছেন আগামীতে তাদের নেতৃত্ব বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে ডাবল পদোন্নতি প্রদান করা হয় (১০-১২ জন নয়)। উক্ত ৭ জন কর্মকর্তাকে আগামী জুন ২০২৩ পর্যন্ত মধ্যবর্তী পদের অর্থাৎ ১টি পদোন্নতির আর্থিক সুবিধাদি প্রদান করা হচ্ছে। শর্ত আছে যে, আগামী জুন ২০২৩ এর মধ্যে তাদের কার্যক্রম সন্তোষজনক মানে উন্নীত হলে মূল্যায়নের প্রেক্ষিতে পরবর্তী জুলাই ২০২৩ হতে আর্থিক সুবিধা কার্যকর হবে। প্রকৃতপক্ষে, ২০২২ এর আপডেটেড পে-স্কেলে মধ্যবর্তী পদ (সিনিয়র কোঅর্ডিনেটর পদ সৃষ্টি না হলে)/গ্রেডটি গঠিত না হলে ৫ জন স্বাভাবিকভাবে ডাবল পদোন্নতি পেত। প্রতি ৫ বছর পরপর সংস্থার কর্মকর্তাগণের পদোন্নতি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বিগত ২০১৭ সালেও একইভাবে পে-স্কেল রিভিউ-এর সময় সংস্থার মোট ৯৭ জনকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়।

নির্বাহী পরিচালকের কন্যা নাসিফা আলী নিজ যোগ্যতায় ৮ ধাপে পদোন্নতি পেয়েছেন জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নির্বাহী পরিচালকের কন্যা নাসিফা আলী ঢাকার হলিক্রস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে, পরবর্তীতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে বায়ো কেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিষয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় হতে এমবিএ কোর্সও সমাপ্ত করেন। তার সকল একাডেমিক রেকর্ড প্রমাণ করে যে, তিনি একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। অ্যধয়ন শেয় করেই তিনি বিভিন্ন সংস্থায় চাকুরীর সুযোগ পান। কিন্তু ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে তার কাজের সম্ভাবনা ও আগ্রহ বিবেচনায় নিয়ে জানুয়ারি ২০১৯ এসএমটি সদস্য ও গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে নাসিফা আলীকে সংস্থার সহকারী সমন্বয়কারী পদে নিয়োগ দেয়া হয়। নাসিফা আলী কৃষি ও ভ্যালু চেইন কর্মসূচির বাস্তবায়ন ও সমন্বয় কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হন। প্রায় ৪ বছরে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন ও যোগাযোগ, বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরামর্শ প্রদান এবং ক্ষুদ্রঋণ ও কৃষি কর্মসূচি বিষয়ে গবেষণাসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রস্তুত ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। করেনাকালে দাতা সংস্থার জন্য ঈধঢ়ধপরঃু ঝঃধঃবসবহঃ, ঋণ কর্মসূচির লজিক মডেল ও ঙহব ঃড় ঙহব অঢ়ঢ়ৎড়ধপয প্রণয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ঋণ কর্মসূচির ফান্ডিং-এর জন্য আন্তর্জাতিক যোগাযোগ এবং ঋণ কর্মসূচিসহ পিকেএসএফ-এর সকল প্রকল্প নিয়ে ‘ঊীঢ়ষড়ৎরহম ঙঢ়ঢ়ড়ৎঃঁহরঃরবং: টহভড়ষফরহম ঃযব ঋঁঃঁৎব’ শিরোনামে ১টি প্রকাশনা সম্পাদন করে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ইতিমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আনোয়ার হোসেনের সংগঠন বিরোধী সামগ্রিক কার্যক্রম পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে, গত ১৫ অক্টোবর ২০২২ গভর্নিং বডির ১৩৬তম সভায় আনোয়ারের স্থলে পরবর্তী সম্ভাব্য নেতৃত্ব হিসেবে কাকে দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে, এ বিষয়ে আলোচনা হয়। এ প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান এসএমটি সদস্যদের কাছে মতামত জানতে চাইলে উপস্থিত সকলে নাসিফা আলীর নাম প্রস্তাব করেন। পরবর্তীতে গভর্নিং বডির সকলে এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন। সংস্থার গভর্নিং বডি এবং সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম মনে করে, পর্যায়ক্রমে নাসিফা আলী সংস্থার ২য় পর্যায়ের নেতৃত্বের দায়িত্ব পালনে তার সক্ষমতা প্রদর্শন করবেন। এক্ষেত্রে কয়েক ধাপ পদোন্নতি মূল বিষয় নয়, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব এবং সংস্থা পরিচালনায় সক্ষমতা ও কমিটমেন্টের বিষয়টি প্রধান। আজকের যুব সমাজই আগামী দিনে প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃত্ব প্রদান করবে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ওয়েভ জেনারেল বডির সদস্য ওয়েভ গভর্ণিং বডির সাবেক চেয়ারপার্সন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, ওয়েভ গভর্ণিং বডি সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলুল হক, প্রশাসন ও মানব সম্পদ বিভাগ পরিচালক ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টীম সদস্য ইফতেখার হোসেন, ওয়েভ গভর্ণিং বডির ভাইস চেয়ারপার্সন ডা: শাহীনূর হায়দার, সহকারী পরিচালক (নবায়যোগ্য শক্তি কর্মসূচি) কিতাব আলী।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, ওয়েভ গভর্ণিং বডি সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশিদুন নাহার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মহসীন আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলুল হক, ওয়েভ জেনারেল বডির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার বদরুল আলম, নুরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক (প্রশিক্ষণ বিভাগ) জহির রায়হান, উপদেষ্টা (সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি) আব্দুস শুকুর, , সিনিয়র রিজিওনাল ম্যানেজার (কমিউনিটি অর্থয়িন কর্মসূচি) জিল্লুর রহমান যুদ্ধ, সিনিয়র সমন্বয়কারী (সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি) কামরুজ্জামান যুদ্ধ, সিনিয়র সমন্বয়কারী (ওয়েভ ট্রেড ট্রেনিং সেন্টার) আব্দুস সালাম, সমন্বয়কারী (অডিট বিভাগ) কামরুজ্জামান কামাল।

এ সময় চুয়াডাঙ্গা প্রেক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সভাপতি নাজমুল হক স্বপন, সম্পাদক পরিষদের আহ্বায়ক আজাদ মালিতা, চুয়াডাঙ্গা প্রেক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফসহ চুয়াডাঙ্গার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

নির্বাহী পরিচালকের ছবি নিয়ে শিষ্টাচার বর্হিভূত কার্যক্রমের প্রতিবাদে ওয়েভ কর্মীদের সংবাদ সম্মেলন

আপলোড টাইম : ০৭:১৯:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালকের ছবি নিয়ে শিষ্টাচার বর্হিভূত কার্যক্রম ও সংস্থা কর্তৃক অকারণে চাকুরিচ্যুতিসহ সকল অভিযোগকে বানোয়াট এবং মিথ্যা দাবি করে সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও কর্র্মীরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা মালোপাড়াস্থ ওয়েভ ট্রেনিং সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে গত ৭ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধবন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে দেয়া স্মারকলিপির বিষয়ে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের বক্তব্য জানায় সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম ও কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্য কানিজ ফাতেমা। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি ২০২৩ সকাল ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে ৫৯ জন নারী-পুরুষ-যুব-কিশোর-শিশু মিলে এক মানববন্ধন করে। যাদের হাতে সংস্থা ও নির্বাহী পরিচালক বিরোধী বক্তব্য সম্বলিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন ছিল। মানববন্ধনে সংস্থা এবং সংস্থা প্রধানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপনের পাশাপাশি নির্বাহী পরিচালক যিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা তাঁর ছবি নিয়ে শিষ্টাচার বর্হিভূত কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যা আমাদের সকলকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে। ওইদিন স্মারকলিপিতে উল্লেখিত, বিগত ৩ বছরে সংস্থা কর্তৃক অকারণে ৪৫০-৫০০ জনকে চাকুরীচ্যুতিসহ সকল অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে বানোয়াট এবং মিথ্যা। বিগত ৩১ বছর ধরে সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা এ ধরণের কোন অভিযোগ পাইনি। তাই এ সকল অভিযোগ উত্থাপনের মূল কারণ সম্পর্কে আমাদের খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ১৯৯০ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় ‘ওয়েভ ফাউন্ডেশন’র জন্ম। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার সন্তান। তাঁর সাহসী নেতৃত্ব আর পরিশ্রমে অত্র জেলার পাশাপাশি বর্তমানে খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল এবং সিলেট বিভাগের ২২ জেলায় সংস্থার বহুমুখী কার্যক্রম এবং বিভিন্ন ইস্যুতে দেশব্যাপী পলিসি অ্যাডভোকেসির কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। সংস্থা বিগত ৩২ বছরে দারিদ্র্য বিমোচন ও জীবিকায়ন, কৃষি উন্নয়ন ও ক্ষুদ্রঋণ, সুশাসন ও অধিকার, সামাজিক উন্নয়ন ও যুব ক্ষমতায়ন এবং সোলার ও জলবায়ু ন্যায্যতা কর্মসূচির অধীনে ১ কোটি ১৭ লক্ষের বেশি মানুষের সাথে সরাসরি কাজ করেছে। বর্তমানে ১০ লক্ষের অধিক মানুষের সাথে সরাসরি এবং সরকারি সেবার দায়বদ্ধতা, খাদ্য অধিকার ও স্থানীয় সরকার ইস্যুতে দেশব্যাপি ক্যাম্পেইন ও পলিসি অ্যাডভোকেসির কাজ করছে। সংস্থার এ সকল কর্মসূচিতে ২ হাজারের বেশি কর্মী-কর্মকর্তা এবং ৪ হাজরের বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রয়েছে (সময়ে সময়ে কোন প্রকল্প বা কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এ সংখ্যার কম-বেশি পরিবর্তন হয়)।

লিখিত বক্তব্যে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্য কানিজ ফাতেমা সংস্থার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেওয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানান। জেনারেল বডি, গভর্নিং বডি, সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম (এসএমটি) সম্পর্কেও তিনি অবহিত করেন। সংস্থার প্রাক্তন উপ-নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেনের অব্যাহতি এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়সমূহ তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাহী পরিচালকের পঞ্চম ভাই আনোয়ার হোসেন ১৯৯৬ সালে সংস্থায় প্রশিক্ষক পদে চাকুরিতে যোগদান করে। তার কাজের ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালে উপ-নির্বাহী পরিচালক পদে পদোন্নতি পায়। পদোন্নতি প্রাপ্তির প্রেক্ষিতে প্রথমে ঋণ কর্মসূচি পরবর্তীতে সোলার কর্মসূচি এবং চুয়াডাঙ্গার অদূরে কোষাঘাটায় সংস্থার সহযোগী প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ক্যাপাসিটি-সিডিসি কেন্দ্রিক ছাগল খামার, দুম্বা খামার, মৎস্য হ্যাচারী এবং মেহেরপুর সড়কে অবস্থিত ভেড়া খামারসহ সংস্থার ৩টি এন্টারপ্রাইজ তার দায়িত্বের অধীন ছিল।

শুরুর দিকে তার দায়িত্বের অধীন কাজের ফলাফল মোটামুটি ভাল দেখা গেলেও পর্যায়ক্রমে তা খারাপ হতে থাকে এবং ২০১৫ সালে নির্বাহী পরিচালকের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ঋণ কর্মসূচির ফলাফল কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক পিছিয়ে। এ বিষয়ে ২০১৭ সালে ঋণ কর্মসূচির দূর্বলতা নিয়ে পিকেএসএফ থেকেও একটি চিঠি আসে। পরবর্তীতে সোলার কর্মসূচি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ইডকলের ঋণ পরিশেধের ক্ষেত্রে সংস্থা ঝুকিঁর সম্মুখীন। এছাড়া সিডিসি কেন্দ্রিক কার্যক্রমে দূর্বলতার ফলে দীর্ঘদিন ধরে সংস্থা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কাজের ফলাফলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভাল ব্যবস্থা ছিল না। এ ধারাবাহিকতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে সংস্থার ঋণ কর্মসূচির প্রথম লোকসান হয় (দেশে এরকম কাজের ফলাফল অন্য কোন সংস্থার আছে কিনা জানা যায় না)। এ প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের জুলাই থেকে নির্বাহী পরিচালক সরাসরি ঋণ কর্মসূচির তদারকি করতে থাকেন এবং অক্টোবর মাসে প্রাক্তন উপ-নির্বাহী পরিচালকের মাঠ পর্যায়ের দায়িত্ব কমিয়ে দিয়ে পরিচালক কফিল উদ্দীনকে কর্মসূচির অপারেশনস প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করেন। তখন থেকেই মূলত আনোয়ার হোসেন বিভিন্নভাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে কফিল উদ্দীনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এবং নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে মনিটরিং এর নামে কর্মীদের চাকুরি চলে যাচ্ছে বলে মিথ্যা প্রচারণা শুরু করে।

আনোয়ার হোসেনের অধীন কার্যক্রম পরিচালনায় সকল ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া, নিয়মিত মনিটরিং ও ফলাফলের জাবদিহিতাসহ ব্যবস্থাপনার সকল ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতা এবং দূর্বলতা ছিল বলেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের মার্চ মাসে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিদর্শন প্রতিবেদন, পরবর্তীতে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ১ জুলাই ২০২২ সিডিসি কেন্দ্রিক ৩ জনকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে আনোয়ার হোসেন সংস্থার ভিতরে কারো কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে নির্বাহী পরিচালকের ৪র্থ ভাই ও সংস্থার প্রাক্তন সাধারণ সদস্য আশরাফ আলম বাবুর সাথে যোগসাজেশে সামাজিকভাবে সংস্থার নেতৃস্থানীয় অনেকের ও নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার, মিথ্যা ও বানোয়াট কথা প্রচার এবং ব্যক্তিগতভাবে অনেককে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে।
আনোয়ার হোসেন ও আশরাফ আলম বাবুর যোগসাজেশে সংগঠন বিরোধী সামগ্রিক কার্যক্রম পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে গত ১০ নভেম্বর ২০২২ গভর্নিং বডির ১৩৭ তম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আনোয়ার হোসেনকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। পাশাপাশি ২৬ নভেম্বর ২০২২ সংস্থার বিশেষ সাধারণ সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠদের মতামতের ভিত্তিতে সাধারণ সদস্য আশরাফ আলম বাবুকে সংস্থার জেনারেল বডি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্য কানিজ ফাতেমা সংস্থা থেকে চাকরিচ্যুতি এবং প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ড নিয়ে জানান, সাধারণভাবে সরকারি-বেসরকারি-প্রাইভেট সেক্টরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির মতো আমাদের সংস্থায়ও প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন নতুন নিয়োগ হয়, একইভাবে ভাল সুযোগ এবং বিভিন্ন কারণে অনেকে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেয়। কেউ কেউ অবসর গ্রহণ করে, পাশাপাশি অর্থ আত্মসাৎ, দীর্ঘ সময়কাল ধরে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ও সংস্থার অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করলে অব্যহতি বা বাধ্যতামূলক অবসর এবং নারী সহকর্মীদের সাথে সহিংস আচরণ করলে বহিষ্কার করা হয়। সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী সকলকে প্রোভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ডের সুবিধা দেয়া হয়। এ বিষয়ে নিম্নে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদত্ত হলো এবং প্রাসঙ্গিক কথা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুলে ধরবেন।

লিখিত বক্তব্যে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্য কানিজ ফাতেমা একইদিনে ৬৫ জনকে পদোন্নতি এবং ১০-১২ জনকে ডাবল পদোন্নতির বিষয়ে খোলোসা করেন। নিয়ম মাফিক সবকিছু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্থা কর্তৃক প্রতি ৫ বছর পরপর পে-স্কেল রিভিউ করা হয়। ২০১৭ সালে পে-স্কেল রিভিউ করার পর সম্প্রতি ২০২২ সালে পে-স্কেল রিভিউ করা হয়েছে। ২০২২ এ রিভিউ পে-স্কেল অনুযায়ী ৬৫ জন নয়, প্রকৃতপক্ষে মোট ৮৩ জনকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও ৭ জন কর্মকর্তা যারা আরও বেশি দায়িত্ব পালনে ইতিমধ্যে সক্ষমতা প্রদর্শন করেছেন আগামীতে তাদের নেতৃত্ব বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে ডাবল পদোন্নতি প্রদান করা হয় (১০-১২ জন নয়)। উক্ত ৭ জন কর্মকর্তাকে আগামী জুন ২০২৩ পর্যন্ত মধ্যবর্তী পদের অর্থাৎ ১টি পদোন্নতির আর্থিক সুবিধাদি প্রদান করা হচ্ছে। শর্ত আছে যে, আগামী জুন ২০২৩ এর মধ্যে তাদের কার্যক্রম সন্তোষজনক মানে উন্নীত হলে মূল্যায়নের প্রেক্ষিতে পরবর্তী জুলাই ২০২৩ হতে আর্থিক সুবিধা কার্যকর হবে। প্রকৃতপক্ষে, ২০২২ এর আপডেটেড পে-স্কেলে মধ্যবর্তী পদ (সিনিয়র কোঅর্ডিনেটর পদ সৃষ্টি না হলে)/গ্রেডটি গঠিত না হলে ৫ জন স্বাভাবিকভাবে ডাবল পদোন্নতি পেত। প্রতি ৫ বছর পরপর সংস্থার কর্মকর্তাগণের পদোন্নতি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বিগত ২০১৭ সালেও একইভাবে পে-স্কেল রিভিউ-এর সময় সংস্থার মোট ৯৭ জনকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়।

নির্বাহী পরিচালকের কন্যা নাসিফা আলী নিজ যোগ্যতায় ৮ ধাপে পদোন্নতি পেয়েছেন জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নির্বাহী পরিচালকের কন্যা নাসিফা আলী ঢাকার হলিক্রস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে, পরবর্তীতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে বায়ো কেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিষয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় হতে এমবিএ কোর্সও সমাপ্ত করেন। তার সকল একাডেমিক রেকর্ড প্রমাণ করে যে, তিনি একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। অ্যধয়ন শেয় করেই তিনি বিভিন্ন সংস্থায় চাকুরীর সুযোগ পান। কিন্তু ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে তার কাজের সম্ভাবনা ও আগ্রহ বিবেচনায় নিয়ে জানুয়ারি ২০১৯ এসএমটি সদস্য ও গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে নাসিফা আলীকে সংস্থার সহকারী সমন্বয়কারী পদে নিয়োগ দেয়া হয়। নাসিফা আলী কৃষি ও ভ্যালু চেইন কর্মসূচির বাস্তবায়ন ও সমন্বয় কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হন। প্রায় ৪ বছরে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন ও যোগাযোগ, বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরামর্শ প্রদান এবং ক্ষুদ্রঋণ ও কৃষি কর্মসূচি বিষয়ে গবেষণাসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রস্তুত ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। করেনাকালে দাতা সংস্থার জন্য ঈধঢ়ধপরঃু ঝঃধঃবসবহঃ, ঋণ কর্মসূচির লজিক মডেল ও ঙহব ঃড় ঙহব অঢ়ঢ়ৎড়ধপয প্রণয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ঋণ কর্মসূচির ফান্ডিং-এর জন্য আন্তর্জাতিক যোগাযোগ এবং ঋণ কর্মসূচিসহ পিকেএসএফ-এর সকল প্রকল্প নিয়ে ‘ঊীঢ়ষড়ৎরহম ঙঢ়ঢ়ড়ৎঃঁহরঃরবং: টহভড়ষফরহম ঃযব ঋঁঃঁৎব’ শিরোনামে ১টি প্রকাশনা সম্পাদন করে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ইতিমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আনোয়ার হোসেনের সংগঠন বিরোধী সামগ্রিক কার্যক্রম পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে, গত ১৫ অক্টোবর ২০২২ গভর্নিং বডির ১৩৬তম সভায় আনোয়ারের স্থলে পরবর্তী সম্ভাব্য নেতৃত্ব হিসেবে কাকে দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে, এ বিষয়ে আলোচনা হয়। এ প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান এসএমটি সদস্যদের কাছে মতামত জানতে চাইলে উপস্থিত সকলে নাসিফা আলীর নাম প্রস্তাব করেন। পরবর্তীতে গভর্নিং বডির সকলে এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন। সংস্থার গভর্নিং বডি এবং সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম মনে করে, পর্যায়ক্রমে নাসিফা আলী সংস্থার ২য় পর্যায়ের নেতৃত্বের দায়িত্ব পালনে তার সক্ষমতা প্রদর্শন করবেন। এক্ষেত্রে কয়েক ধাপ পদোন্নতি মূল বিষয় নয়, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব এবং সংস্থা পরিচালনায় সক্ষমতা ও কমিটমেন্টের বিষয়টি প্রধান। আজকের যুব সমাজই আগামী দিনে প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃত্ব প্রদান করবে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ওয়েভ জেনারেল বডির সদস্য ওয়েভ গভর্ণিং বডির সাবেক চেয়ারপার্সন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, ওয়েভ গভর্ণিং বডি সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলুল হক, প্রশাসন ও মানব সম্পদ বিভাগ পরিচালক ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টীম সদস্য ইফতেখার হোসেন, ওয়েভ গভর্ণিং বডির ভাইস চেয়ারপার্সন ডা: শাহীনূর হায়দার, সহকারী পরিচালক (নবায়যোগ্য শক্তি কর্মসূচি) কিতাব আলী।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, ওয়েভ গভর্ণিং বডি সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশিদুন নাহার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মহসীন আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলুল হক, ওয়েভ জেনারেল বডির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার বদরুল আলম, নুরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক (প্রশিক্ষণ বিভাগ) জহির রায়হান, উপদেষ্টা (সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি) আব্দুস শুকুর, , সিনিয়র রিজিওনাল ম্যানেজার (কমিউনিটি অর্থয়িন কর্মসূচি) জিল্লুর রহমান যুদ্ধ, সিনিয়র সমন্বয়কারী (সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি) কামরুজ্জামান যুদ্ধ, সিনিয়র সমন্বয়কারী (ওয়েভ ট্রেড ট্রেনিং সেন্টার) আব্দুস সালাম, সমন্বয়কারী (অডিট বিভাগ) কামরুজ্জামান কামাল।

এ সময় চুয়াডাঙ্গা প্রেক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সভাপতি নাজমুল হক স্বপন, সম্পাদক পরিষদের আহ্বায়ক আজাদ মালিতা, চুয়াডাঙ্গা প্রেক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফসহ চুয়াডাঙ্গার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।