দামুড়হুদায় প্রাণিসম্পদ অফিসারের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ
- আপলোড টাইম : ০৯:০৪:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২
- / ২১ বার পড়া হয়েছে
সমীকরণ প্রতিবেদক:
দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ অফিসার নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা দিয়ে গর্ভবতী একটি গাভী গরু মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত শনিবার দুপুরে গরুর মালিক ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার চিৎলা গ্রামের আনসার আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দুসের ৮ মাসের একটি গর্ভবতী গাভী গরু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ গাভী গরুটির চিকিৎসার জন্য গরুর মালিক আব্দুল কুদ্দুস দামুড়হুদা উপজেলার উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ অফিসার পশুচিকিৎসক নজরুল ইসলামকে খবর দেন। পশুচিকিৎসক নজরুল ইসলাম চিৎলা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে গিয়ে গরুটিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গরুর মালিককে জানান গরুটির শিরটানা রোগ হয়েছে। এরপর অপারেশন করার কথা বলে শুরু হয় দর কষাকষি।
দরদাম শেষ হলে পশুচিকিৎসক নজরুল ইসলাম গাভী গরুটির অস্ত্রপোচার শেষ করেন। একপর্যায়ে গরু মালিক বলেন, শিরকেটে দিলেন যদি গরুর কোনো সমস্যা হয়? পশুচিকিৎসক বলেন গরুর কিছু হলে দায়-দায়িত্ব আমার বলে ফিস নিয়ে চলে যান। গরুটির অস্ত্রপোচারের পর গরুটির অবস্থা খারাপ হতে থাকে। গরু মালিক পশুচিকিৎসককে বিষয়টি জানালে তিনি আর সেখানে না যেয়ে বিভিন্নভাবে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। এরই মধ্যে গত বুধবার গাভীটি মারা যায়। পশুচিকিৎসক নজরুল ইসলামের ভুল চিকিৎসায় গরুটি মারা যাওয়ার অভিযোগে ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত শনিবার দামুড়হুদা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস।
গরুর মালিক ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমি অনেক কষ্টে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ করে গরুটি কিনেছিলাম। কয়েকদিন আগে গরুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। দামুড়হুদা উপজেলার সরকারি পশুচিকিৎসক নজরুল ইসলামকে চিকিৎসার জন্য ডাকি। তিনি এসে গরুটি দেখার পর বলেন অপারেশন করতে হবে। অপারেশন করার আগে গরুটিকে ২টি ইনজেকশন পুশ করেন। তারপর অপারেশন করে ৩ হাজার টাকা নিয়ে চলে যান। ওইদিন রাতেই গরুটি অসুস্থ পড়ে। তাকে বারবার মোবাইলে কল করি। তখন তিনি গরুটিকে ৫টি নাপা ট্যাবলেট খাইয়ে দিতে বলেন এবং পরদিন সকালে এসে গরুটি দেখে যাবেন বলেন। গত বুধবার গরুটি মারা যায়। তারপর থেকে তিনি আর আমার কল রিসিভ করছেন না। তাই বাধ্য হয়ে আমি ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আমার স্যার আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে কথা বলে গরুটির চিকিৎসা দিয়েছি। ওষুধ বাবদ গরু মালিকের থেকে ২ হাজার ৫ শ টাকা নিয়েছি। কোনো ভুল চিকিৎসায় গরু মারা যায়নি। গরুটির ফুড পয়জোনিং ছিল, হয়ত সে জন্য মারা গেছে।’
দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গাভী গরুটির চিকিৎসা দেওয়ার পরে চিকিৎসক নজরুল ইসলাম বিষয়টি আমাকে জানায়। ওই অবস্থায় আমি কুষ্টিয়াতে ট্রেনিংয়ে ছিলাম। পরবর্তীতে গরুটি মারা গিয়েছে এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। চিকিৎসা বাবদ টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।