ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

দামুড়হুদায় শিশু ইয়ামিন হত্যার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:

দামুড়হুদার কানাইডাঙ্গা গ্রামের শিশু ইয়ামিন হাসানের হত্যাকারী ও মামলার প্রধান আসামি খুনি জাহিদ হাসানের ফাঁসিসহ মামলার অন্যান্য আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দামুড়হুদা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত শিশু ইয়ামিনের মা রিনা খাতুন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে আমার ছেলে ২য় শ্রেণির ছাত্র ইয়ামিন (৮) ও একই গ্রামের প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের ছেলে শিশু জুনাইদ হাসান (৭) প্রতিদিনের ন্যায় এক সাথে খেলা করছিল। এসময় একই গ্রামের আসাদুল মেম্বারের ছেলে জাহিদ (১৯) শিশু ইয়ামিনের হাতে ২০ টাকা দিয়ে সিগারেট কিনতে দোকানে পাঠায়। শিশু ইয়ামিন ও জুনাইদ পার্শ্ববর্তী খোরশেদ আলীর দোকানে গিয়ে সিগারেট চাইলে সিগারেট নেই বলে তাদের জানায় দোকানি খোরশেদ আলী। এসময় তাদের কাছে থাকা ২০ টাকার মধ্যে ২ টাকা মূল্যের ৪ প্যাকেট জি-বিস্কুট কেনে এবং জুনাইদ ও ইয়ামিন ৫ টাকা করে ভাগ করে নেয়। ওই ৪ প্যাকেট জি-বিস্কুট কিনে বাড়ি চলে আসে। এর কিছুক্ষণ পর তারা দুজনেই জি-বিস্কুট হাতে আমবাগানে যায়।

এসময় জাহিদ সিগারেট চাইলে সিগারেট পাওয়া যায়নি বলে জানায় শিশু ইয়ামিন। সিগারেট না পেয়ে জাহিদ তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং টাকা ফেরত চাই। টাকা খরচ করে ফেলেছি বলে জানালে জাহিদ গালাগালি শুরু করে এবং গালাগালির একপর্যায়ে শিশু ইয়ামিনকে বেঁধে মারধর শুরু করে। মারধরের এক পর্যায়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাকে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে জবাই করে হত্যা করে এবং মরদেহ ওই আমবাগানের মধ্যে একটি পাঁকা কবরের মধ্যে ফেলে রাখে। এসময় শিশু ইয়ামিনের সাথে থাকা জুনাইদ পালিয়ে আসে এবং বিষয়টি আমাকে জানায়। এসময় আমি পরিবারের লোকজনকে সাথে নিয়ে ছুটতে ছুটতে ঘটনাস্থলে যায় এবং আম বাগানের চারদিক খুঁজতে থাকি। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে শিশু ইয়ামিনকে ওই কবরের মধ্যে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পর ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে থাকা খুনি জাহিদকে আমরা জাপটে ধরে ফেলি।

কিন্তু জাহিদের পরিবারের লোকজন আমাদেরকে মারধর করে খুনি জাহিদকে ছাড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। শিশু ইয়ামিন হত্যাকারী খুনি জাহিদের বয়স কমপক্ষে ১৯ বছর। আমরা জানতে পেরেছি, পুলিশ তার বয়স কম দেখিয়ে তাকে যশোর সংশোধনাগারে পাঠিয়েছে। এছাড়া মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের ছেলে জুনাইদকে এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার প্রকৃত কারণ উন্মোচন হবে। আপনাদের মাধ্যমে আমি বলতে চাই, খুনি জাহিদের বয়স প্রমাণের জন্য তার ডিএনএ টেস্ট করানো হোক এবং মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের ছেলে জুনাইদকে সাংবাদিকদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। মামলার প্রধান আসামি খুনি জাহিদের ফাঁসিসহ মামলার অন্যান্য আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি এবং আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।’ সংবাদ সম্মেলন শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করে নিহত শিশু ইয়ামিনের পরিবারের লোকজনসহ এলাকাবাসী।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দামুড়হুদায় শিশু ইয়ামিন হত্যার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন

আপলোড টাইম : ০৮:৫৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:

দামুড়হুদার কানাইডাঙ্গা গ্রামের শিশু ইয়ামিন হাসানের হত্যাকারী ও মামলার প্রধান আসামি খুনি জাহিদ হাসানের ফাঁসিসহ মামলার অন্যান্য আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দামুড়হুদা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত শিশু ইয়ামিনের মা রিনা খাতুন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে আমার ছেলে ২য় শ্রেণির ছাত্র ইয়ামিন (৮) ও একই গ্রামের প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের ছেলে শিশু জুনাইদ হাসান (৭) প্রতিদিনের ন্যায় এক সাথে খেলা করছিল। এসময় একই গ্রামের আসাদুল মেম্বারের ছেলে জাহিদ (১৯) শিশু ইয়ামিনের হাতে ২০ টাকা দিয়ে সিগারেট কিনতে দোকানে পাঠায়। শিশু ইয়ামিন ও জুনাইদ পার্শ্ববর্তী খোরশেদ আলীর দোকানে গিয়ে সিগারেট চাইলে সিগারেট নেই বলে তাদের জানায় দোকানি খোরশেদ আলী। এসময় তাদের কাছে থাকা ২০ টাকার মধ্যে ২ টাকা মূল্যের ৪ প্যাকেট জি-বিস্কুট কেনে এবং জুনাইদ ও ইয়ামিন ৫ টাকা করে ভাগ করে নেয়। ওই ৪ প্যাকেট জি-বিস্কুট কিনে বাড়ি চলে আসে। এর কিছুক্ষণ পর তারা দুজনেই জি-বিস্কুট হাতে আমবাগানে যায়।

এসময় জাহিদ সিগারেট চাইলে সিগারেট পাওয়া যায়নি বলে জানায় শিশু ইয়ামিন। সিগারেট না পেয়ে জাহিদ তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং টাকা ফেরত চাই। টাকা খরচ করে ফেলেছি বলে জানালে জাহিদ গালাগালি শুরু করে এবং গালাগালির একপর্যায়ে শিশু ইয়ামিনকে বেঁধে মারধর শুরু করে। মারধরের এক পর্যায়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাকে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে জবাই করে হত্যা করে এবং মরদেহ ওই আমবাগানের মধ্যে একটি পাঁকা কবরের মধ্যে ফেলে রাখে। এসময় শিশু ইয়ামিনের সাথে থাকা জুনাইদ পালিয়ে আসে এবং বিষয়টি আমাকে জানায়। এসময় আমি পরিবারের লোকজনকে সাথে নিয়ে ছুটতে ছুটতে ঘটনাস্থলে যায় এবং আম বাগানের চারদিক খুঁজতে থাকি। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে শিশু ইয়ামিনকে ওই কবরের মধ্যে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পর ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে থাকা খুনি জাহিদকে আমরা জাপটে ধরে ফেলি।

কিন্তু জাহিদের পরিবারের লোকজন আমাদেরকে মারধর করে খুনি জাহিদকে ছাড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। শিশু ইয়ামিন হত্যাকারী খুনি জাহিদের বয়স কমপক্ষে ১৯ বছর। আমরা জানতে পেরেছি, পুলিশ তার বয়স কম দেখিয়ে তাকে যশোর সংশোধনাগারে পাঠিয়েছে। এছাড়া মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের ছেলে জুনাইদকে এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার প্রকৃত কারণ উন্মোচন হবে। আপনাদের মাধ্যমে আমি বলতে চাই, খুনি জাহিদের বয়স প্রমাণের জন্য তার ডিএনএ টেস্ট করানো হোক এবং মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের ছেলে জুনাইদকে সাংবাদিকদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। মামলার প্রধান আসামি খুনি জাহিদের ফাঁসিসহ মামলার অন্যান্য আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি এবং আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।’ সংবাদ সম্মেলন শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করে নিহত শিশু ইয়ামিনের পরিবারের লোকজনসহ এলাকাবাসী।