ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

দামুড়হুদায় পেঁয়াজের ঝাঁঝে নাকাল মানুষ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে

জয়রামপুর, প্রতিবেদক:
সারাদেশে হঠাৎ করে পেঁয়াজের বাজার চড়া। দামুড়হুদা উপজেলার বৃহৎ ডুগডুগী বাজারেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। ডুগডুগী বাজারে পেঁয়াজের ক্রেতা জামাল উদ্দিন (৪৫) বলেন, ‘পেঁয়াজ দুই দিন আগেও ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি। এখন সেই পেঁয়াজ দাম বেড়ে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি। কিন্তু কেন হলো আমরা জানি না। বাজারে সবজিসহ বিভিন্ন জিনিস আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। পেঁয়াজ ২০০ টাকা কেজি, রসুন ২০০ টাকা কেজি, আলু ৬০ টাকা কেজি। মানুষ কিনবে কী? আমরা নিম্নআয়ের মানুষ বাজারে এসে হিমশিম খাচ্ছি। এর একটা সমাধান হওয়া উচিত।’
ডুগডুগীতে বাজার করতে আসা আরেক ক্রেতা শহিদুল ইসলাম (৬০) বলেন, ‘বাবা কী আর বলব, বাজার করতে এসে নাভিশ্বাস ফেলতে হয়। যদি কাঁচা পেঁয়াজের দাম ১৬০ টাকা কেজি হয়, তাহলে কিনব ডশ? বাজার করতে এসে পয়সা কড়িতে আর কুলান দিতে পারছিনে। তোমার চাচীর সাথেও ঝগড়া হয় সবকিছু কিনে নিয়ে যেতে পারি না বলে।’
বাজার করতে আসা ইউসুফ আলী (৫০) বলেন, ‘বর্তমানে সারাদেশে মানুষ যে কত কষ্ট করছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এই জিনিসটা যদি কেউ তদারকি করত, বাজার মনিটরিং থাকতো, দেশে একটা সুশাসন থাকত, তাহলে আমার মনে হয় সাধারণ মানুষ এর সুফল ভোগ করতে পারত। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সুশাসনের অভাবে বাজার মনিটরিং নাই। মানুষের দুর্ভোগের শেষ নাই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের দাবিটা অন্যায্য নয়। যে বাজারে সকালে পণ্যের এক দাম আর বিকেলে এক দাম। প্রতি ঘণ্টায় পরিবর্তন হয়। তাতে করে সাধারণ রিকশাওয়ালা সারাদিন পরে বাজারে এসে মাছ কেনার পয়সা থাকে না। আমরা যারা মানবাধিকার এর কথা বলি। উঁচু তলায় যারা কর্মরত তাদের বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত। বাজার মনিটরিং করে সাধারণ মানুষের পণ্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা উচিত। মাঝে মাঝে ভোক্তা অধিকারের নামকাওয়াস্তে মনিটরিং করতে দেখি। কিন্তু তারা যদি আন্তরিকতা সাথে বাজার মনিটরিং করে, সাধারণ মানুষের অনেকটা ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসবে।’ তিনি আরও বলেন, ভারত পেঁয়াজ বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর পর আড়তে পেঁয়াজ মজুদ থাকা সত্ত্বেও পেঁয়াজের হঠাৎ দ্বিগুণ দাম বাড়ে।
ডুগডুগী বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম (২২) বলেন, ‘আমরা পেঁয়াজ আগে যে দামে কিনতাম আড়ত থেকে সে দামে আর পাচ্ছিনে। যে পেঁয়াজ আগে কিনতাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, সেই পেঁয়াজ এখন কিনতে হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজি। আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। এছাড়া অন্যান্য সবজি কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। তাতে করে আমাদেরও সমস্যা হচ্ছে। সাধারণ মানুষেরও কিনে খেতে সমস্যা হচ্ছে।’ অন্যান্য সবজির দাম জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আলু ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, পাতা কপি ৪০ টাকা, পেঁয়াজের কলি ৬০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, শোসা ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন।
দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাশ বলেন, আমরা গত রোববার দামুড়হুদা হাট মনিটরিং করেছি, সেসময় পেঁয়াজের দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। আজ (গতকাল সোমবার) কার্পাসডাঙ্গা বাজার মনিটরিং করা হয়েছে। আমরা নিয়মিত বাজার তদারকি চালিয়ে যাচ্ছি। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দামুড়হুদায় পেঁয়াজের ঝাঁঝে নাকাল মানুষ

আপলোড টাইম : ১০:১৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩

জয়রামপুর, প্রতিবেদক:
সারাদেশে হঠাৎ করে পেঁয়াজের বাজার চড়া। দামুড়হুদা উপজেলার বৃহৎ ডুগডুগী বাজারেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। ডুগডুগী বাজারে পেঁয়াজের ক্রেতা জামাল উদ্দিন (৪৫) বলেন, ‘পেঁয়াজ দুই দিন আগেও ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি। এখন সেই পেঁয়াজ দাম বেড়ে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি। কিন্তু কেন হলো আমরা জানি না। বাজারে সবজিসহ বিভিন্ন জিনিস আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। পেঁয়াজ ২০০ টাকা কেজি, রসুন ২০০ টাকা কেজি, আলু ৬০ টাকা কেজি। মানুষ কিনবে কী? আমরা নিম্নআয়ের মানুষ বাজারে এসে হিমশিম খাচ্ছি। এর একটা সমাধান হওয়া উচিত।’
ডুগডুগীতে বাজার করতে আসা আরেক ক্রেতা শহিদুল ইসলাম (৬০) বলেন, ‘বাবা কী আর বলব, বাজার করতে এসে নাভিশ্বাস ফেলতে হয়। যদি কাঁচা পেঁয়াজের দাম ১৬০ টাকা কেজি হয়, তাহলে কিনব ডশ? বাজার করতে এসে পয়সা কড়িতে আর কুলান দিতে পারছিনে। তোমার চাচীর সাথেও ঝগড়া হয় সবকিছু কিনে নিয়ে যেতে পারি না বলে।’
বাজার করতে আসা ইউসুফ আলী (৫০) বলেন, ‘বর্তমানে সারাদেশে মানুষ যে কত কষ্ট করছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এই জিনিসটা যদি কেউ তদারকি করত, বাজার মনিটরিং থাকতো, দেশে একটা সুশাসন থাকত, তাহলে আমার মনে হয় সাধারণ মানুষ এর সুফল ভোগ করতে পারত। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সুশাসনের অভাবে বাজার মনিটরিং নাই। মানুষের দুর্ভোগের শেষ নাই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের দাবিটা অন্যায্য নয়। যে বাজারে সকালে পণ্যের এক দাম আর বিকেলে এক দাম। প্রতি ঘণ্টায় পরিবর্তন হয়। তাতে করে সাধারণ রিকশাওয়ালা সারাদিন পরে বাজারে এসে মাছ কেনার পয়সা থাকে না। আমরা যারা মানবাধিকার এর কথা বলি। উঁচু তলায় যারা কর্মরত তাদের বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত। বাজার মনিটরিং করে সাধারণ মানুষের পণ্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা উচিত। মাঝে মাঝে ভোক্তা অধিকারের নামকাওয়াস্তে মনিটরিং করতে দেখি। কিন্তু তারা যদি আন্তরিকতা সাথে বাজার মনিটরিং করে, সাধারণ মানুষের অনেকটা ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসবে।’ তিনি আরও বলেন, ভারত পেঁয়াজ বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর পর আড়তে পেঁয়াজ মজুদ থাকা সত্ত্বেও পেঁয়াজের হঠাৎ দ্বিগুণ দাম বাড়ে।
ডুগডুগী বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম (২২) বলেন, ‘আমরা পেঁয়াজ আগে যে দামে কিনতাম আড়ত থেকে সে দামে আর পাচ্ছিনে। যে পেঁয়াজ আগে কিনতাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, সেই পেঁয়াজ এখন কিনতে হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজি। আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। এছাড়া অন্যান্য সবজি কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। তাতে করে আমাদেরও সমস্যা হচ্ছে। সাধারণ মানুষেরও কিনে খেতে সমস্যা হচ্ছে।’ অন্যান্য সবজির দাম জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আলু ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, পাতা কপি ৪০ টাকা, পেঁয়াজের কলি ৬০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, শোসা ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন।
দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাশ বলেন, আমরা গত রোববার দামুড়হুদা হাট মনিটরিং করেছি, সেসময় পেঁয়াজের দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। আজ (গতকাল সোমবার) কার্পাসডাঙ্গা বাজার মনিটরিং করা হয়েছে। আমরা নিয়মিত বাজার তদারকি চালিয়ে যাচ্ছি। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।