ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

দর্শনায় লিটিল এঞ্জেল কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:১৪:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

দর্শনা অফিস:
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার শিল্পনগরী দর্শনায় লিটিল এঞ্জেল কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটি মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে মনগড়া তালিকা প্রেরণে করেছেন বলেও অভিযোগে জানা যায়। এ ঘটনায় অত্র প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষার্থীর পিতা দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাকি ছালাম বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের তদন্তে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক ৩ সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল তদন্ত কমিটি সরেজমিনে বিদ্যালয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে ও বৃত্তি পরীক্ষার খাতা জব্দ করে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- দাড়হুদা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দীন, নূর ইসলাম ও সেলিম রেজা।

জানা যায়, চলতি বছরের বৃত্তি পরীক্ষায় লিটিল এঞ্জেল কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির বেশকিছু মেধাবী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটি বৃত্তি পরীক্ষার্থীদের খাতা যাচাই-বাছাই না করে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে মনগড়া তালিকা তৈরি করে তা প্রেরণ করে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর পিতা দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গতকাল তদন্ত কমিটি সরেজমিনে বিদ্যালয়ে এসে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে ও বৃত্তি পরীক্ষার খাতাগুলো জব্দ করে।

এবিষয়ে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর পিতা শ্রী তমাল জানান, ‘প্রধান শিক্ষক বিকাশ কুমার দত্ত অনিয়ম-দূর্নীতি করে স্কুলে কোচিং বানিজ্য করেন। তিনি আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরুপ কুমারকে দিয়ে প্রশ্ন করে পরীক্ষা নিয়েছে। তাই কোচিং বাণিজ্যকারী শিক্ষক সরুপ কুমার তার কাছে যারা কোচিং করেছে তাদেরই বৃত্তি পরীক্ষার জন্য মেধা তালিকায় নাম দিয়েছেন।’

এবিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ‘মেধা তালিকা অনুযায়ী বৃত্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের নাম নেওয়া হয়নি। আমার সন্তান ৫৮০ নাম্বার পাওয়ার পরেও বৃত্তি পরীক্ষা তালিকায় তার নাম দেওয়া হয়নি। অথচ শিক্ষক সরুপ কুমারের নিকট কোচিং করা এক শিক্ষার্থী ৫৭৫ নাম্বার পেয়েও মেধা তালিকায় তার উঠেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকাশ কুমার দত্তের সাথে কথা বললে, তিনি জানান, ‘স্কুলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরুপ কুমার পরিচালনা কমিটির সঙ্গে জড়িত আছেন। তিনি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরও পড়ান। তবে অভিভাবকেরা যে অভিযোগ করছেন, তা সঠিক নয়। সকল অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে, তবেই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আমরা মেধাবী শিক্ষার্থীদেরই মূল্যায়ণ করেছি। আমার স্কুলের সুনাম ক্ষুণ্ন্ করতে একটি চক্র এ ধরণের অভিযোগ করছে বলে, আমি মনে করি।’

এবিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাকি ছালাম বলেন, ‘এ ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পর ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রাথমিক তদন্তে পরীক্ষার খাতায় নাম্বার কাটাকাটির বিষয়টি পাওয়া গেছে। তবে নাম্বার দেওয়ার মধ্যে খুব বেশি তারতম্য নেই। এখন পর্যন্ত আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। আজিমপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সরুপ কুমারের বিরুদ্ধে অভিভাবকেরা যে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন, প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জাননো হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দর্শনায় লিটিল এঞ্জেল কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

আপলোড টাইম : ১১:১৪:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২

দর্শনা অফিস:
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার শিল্পনগরী দর্শনায় লিটিল এঞ্জেল কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটি মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে মনগড়া তালিকা প্রেরণে করেছেন বলেও অভিযোগে জানা যায়। এ ঘটনায় অত্র প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষার্থীর পিতা দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাকি ছালাম বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের তদন্তে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক ৩ সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল তদন্ত কমিটি সরেজমিনে বিদ্যালয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে ও বৃত্তি পরীক্ষার খাতা জব্দ করে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- দাড়হুদা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দীন, নূর ইসলাম ও সেলিম রেজা।

জানা যায়, চলতি বছরের বৃত্তি পরীক্ষায় লিটিল এঞ্জেল কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির বেশকিছু মেধাবী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটি বৃত্তি পরীক্ষার্থীদের খাতা যাচাই-বাছাই না করে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে মনগড়া তালিকা তৈরি করে তা প্রেরণ করে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর পিতা দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গতকাল তদন্ত কমিটি সরেজমিনে বিদ্যালয়ে এসে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে ও বৃত্তি পরীক্ষার খাতাগুলো জব্দ করে।

এবিষয়ে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর পিতা শ্রী তমাল জানান, ‘প্রধান শিক্ষক বিকাশ কুমার দত্ত অনিয়ম-দূর্নীতি করে স্কুলে কোচিং বানিজ্য করেন। তিনি আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরুপ কুমারকে দিয়ে প্রশ্ন করে পরীক্ষা নিয়েছে। তাই কোচিং বাণিজ্যকারী শিক্ষক সরুপ কুমার তার কাছে যারা কোচিং করেছে তাদেরই বৃত্তি পরীক্ষার জন্য মেধা তালিকায় নাম দিয়েছেন।’

এবিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ‘মেধা তালিকা অনুযায়ী বৃত্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের নাম নেওয়া হয়নি। আমার সন্তান ৫৮০ নাম্বার পাওয়ার পরেও বৃত্তি পরীক্ষা তালিকায় তার নাম দেওয়া হয়নি। অথচ শিক্ষক সরুপ কুমারের নিকট কোচিং করা এক শিক্ষার্থী ৫৭৫ নাম্বার পেয়েও মেধা তালিকায় তার উঠেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকাশ কুমার দত্তের সাথে কথা বললে, তিনি জানান, ‘স্কুলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরুপ কুমার পরিচালনা কমিটির সঙ্গে জড়িত আছেন। তিনি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরও পড়ান। তবে অভিভাবকেরা যে অভিযোগ করছেন, তা সঠিক নয়। সকল অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে, তবেই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আমরা মেধাবী শিক্ষার্থীদেরই মূল্যায়ণ করেছি। আমার স্কুলের সুনাম ক্ষুণ্ন্ করতে একটি চক্র এ ধরণের অভিযোগ করছে বলে, আমি মনে করি।’

এবিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাকি ছালাম বলেন, ‘এ ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পর ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রাথমিক তদন্তে পরীক্ষার খাতায় নাম্বার কাটাকাটির বিষয়টি পাওয়া গেছে। তবে নাম্বার দেওয়ার মধ্যে খুব বেশি তারতম্য নেই। এখন পর্যন্ত আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। আজিমপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সরুপ কুমারের বিরুদ্ধে অভিভাবকেরা যে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন, প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জাননো হবে।’