ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

জীবননগর গয়েশপুর সীমান্তে চোরাকারবারিদের সঙ্গে কোন্দল

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:০৬:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর অফিস:
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর সীমান্তে তারিক হোসেন (৪০) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার দিনগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার গয়েশপুর সীমান্তের ৬৮ নম্বর মেইন পিলারের নিকট দোয়াড় মাঠে এ ঘটনা ঘটে। বিজিবির দাবি, চোরাকারবারিদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে। নিহত তারেক পূর্বে বিজিবিকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করলেও তিনি বিজিবির সোর্স নয়। তবে পরিবারের দাবি, তারিক বিজিবির সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। নিহত তারিক গয়েশপুর গ্রামের পুকুরপাড়ার প্রান্তিক কৃষক রবগুল হোসেনের ছেলে। এদিকে ঘটনার তদন্তে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আবু তারেক, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) মুন্না বিশ্বাস, জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেকসহ বিজিবির সদস্যরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে দোয়াড় মাঠে তারিককে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে দুর্বৃত্তরা। এসময় চিৎকার শুনে বিজিবির সদস্যরা তারিককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করে। পরে পরিবারের সদস্যরা তারিককে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। তারিকের জখম গুরুতর হওয়ায় জীবননগর থেকে তাঁকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে তারিকের মৃত্যু হয়।

পারিবারিক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তারিক বিজিবির সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। গত সোমবার রাতেও তাকে কে বা কারা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন, ‘এমন একটি ঘটনা সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা ঘটনা সম্পর্কে আরও খোঁজখবর নিচ্ছি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রাতে তারিককে কুপিয়ে জখম করা হয়, তিনি রাতে গয়েশপুর গ্রামের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আতি, জিয়া, নাহিদসহ বেশ কয়েকজন একসঙ্গে ছিলেন। তবে তারিকের মৃত্যুর পর থেকে আতি, জিয়া, নাহিদসহ অনান্যরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। স্থানীয় ব্যক্তিদের ধারণা, মাদক চোরাকারবারি আতি, জিয়া ও নাহিদকে আটক করলে তারিকের হত্যার বিষয়ে অনেক কিছু জানা যাবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক বলেন, ‘সোমবার রাত একটার দিকে জীবননগর গয়েশপুর সীমান্তের ৬৮ নম্বর মেইন পিলারে কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কয়েকজন মাদককারবারি ভারত থেকে ফেনসিডিল আনার জন্য যায়। এসময় তারা বিজিবির সোর্স তারিককে দেখতে পেয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।’

ঝিনাইদহের মহেশপুর-৫৮ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহীন আজাদ বলেন, ‘নিহত তারিক বিভিন্ন সময় তথ্য দিয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। তবে তিনি আমাদের সোর্স নয়। চোরাকারবারিদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবননগর গয়েশপুর সীমান্তে চোরাকারবারিদের সঙ্গে কোন্দল

আপলোড টাইম : ০১:০৬:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২

জীবননগর অফিস:
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর সীমান্তে তারিক হোসেন (৪০) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার দিনগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার গয়েশপুর সীমান্তের ৬৮ নম্বর মেইন পিলারের নিকট দোয়াড় মাঠে এ ঘটনা ঘটে। বিজিবির দাবি, চোরাকারবারিদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে। নিহত তারেক পূর্বে বিজিবিকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করলেও তিনি বিজিবির সোর্স নয়। তবে পরিবারের দাবি, তারিক বিজিবির সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। নিহত তারিক গয়েশপুর গ্রামের পুকুরপাড়ার প্রান্তিক কৃষক রবগুল হোসেনের ছেলে। এদিকে ঘটনার তদন্তে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আবু তারেক, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) মুন্না বিশ্বাস, জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেকসহ বিজিবির সদস্যরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে দোয়াড় মাঠে তারিককে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে দুর্বৃত্তরা। এসময় চিৎকার শুনে বিজিবির সদস্যরা তারিককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করে। পরে পরিবারের সদস্যরা তারিককে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। তারিকের জখম গুরুতর হওয়ায় জীবননগর থেকে তাঁকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে তারিকের মৃত্যু হয়।

পারিবারিক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তারিক বিজিবির সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। গত সোমবার রাতেও তাকে কে বা কারা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন, ‘এমন একটি ঘটনা সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা ঘটনা সম্পর্কে আরও খোঁজখবর নিচ্ছি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রাতে তারিককে কুপিয়ে জখম করা হয়, তিনি রাতে গয়েশপুর গ্রামের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আতি, জিয়া, নাহিদসহ বেশ কয়েকজন একসঙ্গে ছিলেন। তবে তারিকের মৃত্যুর পর থেকে আতি, জিয়া, নাহিদসহ অনান্যরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। স্থানীয় ব্যক্তিদের ধারণা, মাদক চোরাকারবারি আতি, জিয়া ও নাহিদকে আটক করলে তারিকের হত্যার বিষয়ে অনেক কিছু জানা যাবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক বলেন, ‘সোমবার রাত একটার দিকে জীবননগর গয়েশপুর সীমান্তের ৬৮ নম্বর মেইন পিলারে কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কয়েকজন মাদককারবারি ভারত থেকে ফেনসিডিল আনার জন্য যায়। এসময় তারা বিজিবির সোর্স তারিককে দেখতে পেয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।’

ঝিনাইদহের মহেশপুর-৫৮ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহীন আজাদ বলেন, ‘নিহত তারিক বিভিন্ন সময় তথ্য দিয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। তবে তিনি আমাদের সোর্স নয়। চোরাকারবারিদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’