ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

জীবননগরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর ওপর অমানসিক নির্যাতন: এক সপ্তাহ পর গৃহবধূর মৃত্যু

জীবননগর অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৩৮ বার পড়া হয়েছে

জীবননগরে স্বামীর নির্যাতনের এক সপ্তাহ পর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের মেদেনীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ মেদেনীপুর গ্রামের আব্দুল আলিমের মেয়ে কুলসুম খাতুন (১৫)।

নিহতর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাত মাস আগে মেদেনীপুর গ্রামের আব্দুল আলিমের মেয়ে কুলসুমের সাথে মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের ইয়াদ কাজীর ছেলে বাবুর দুই পরিবারের সম্মতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে ছেলে যৌতুকের জন্য মেয়ের পরিবারকে চাপ দেয়। মেয়ের সুখের জন্য হতদরিদ্র বাবা তাঁর সাধ্যমতো যৌতুকের ২০ হাজার টাকা দেয়। এক সপ্তাহ আগে আবারও টাকা দাবি করলে মেয়ে টাকা আনতে অপরাগতা জানালে মেয়ের ওপর অমানসিকভাবে শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিড়ির আগুন দিয়ে ছ্যাকা দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে। মেয়ের ওপর এ নির্যাতন দেখে বাবা সহ্য করতে না পেরে অবশেষে চিকিৎসার জন্য নিজ বাড়ি মেদেনীপুর গ্রামে নিয়ে আসেন। অবশেষে চিকিৎসার এক সপ্তাহ পর ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়।

এদিকে, শারীরিক নির্যাতনে মৃত্যু হলেও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য একটি রফার মাধ্যমে গতকাল বেলা ১১টার দিকে লাশটি দাফন করে দেওয়া হয়। এ ঘটনাটি নিয়ে এখন আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে দিয়ে কিছু দিনের জন্য স্বস্তি পেলেও অবশেষে সারা জীবনের জন্য মেয়েকে হারালো তার পরিবার। মেয়েকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন হতভাগা বাবা-মা।

এদিকে, স্থানীয় জনগণ ঘাতক বাবুকে উত্তম-মাধ্যম দিয়ে বিদায় করে। ফতেপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়েকে মারধর করেছে, এমন কোনো বিষয় আমাকে ছেলের পক্ষ থেকে বলেনি। তারা শুধু আমাকে বলেছে মেয়েটি তার বাবার বাড়িতে যেয়ে স্ট্রোক করে মারা গিয়েছে। সে জন্য আমি ছেলের সাথে মেয়ের বাড়িতে যায়। সেখানে যেয়ে জানতে পারি ছেলে মেয়েটিকে অমানসিকভাবে নির্যাতন করেছে এবং মেয়েটির গায়ে নাকি বিড়ির আগুনের ছ্যাকা দেওয়া হয়েছে।’

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন, মেদেনীপুর গ্রামে যে ঘটনা ঘটেছে, এ বিষয়ে থানায় এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবননগরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর ওপর অমানসিক নির্যাতন: এক সপ্তাহ পর গৃহবধূর মৃত্যু

আপলোড টাইম : ০৯:৩৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২১

জীবননগরে স্বামীর নির্যাতনের এক সপ্তাহ পর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের মেদেনীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ মেদেনীপুর গ্রামের আব্দুল আলিমের মেয়ে কুলসুম খাতুন (১৫)।

নিহতর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাত মাস আগে মেদেনীপুর গ্রামের আব্দুল আলিমের মেয়ে কুলসুমের সাথে মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের ইয়াদ কাজীর ছেলে বাবুর দুই পরিবারের সম্মতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে ছেলে যৌতুকের জন্য মেয়ের পরিবারকে চাপ দেয়। মেয়ের সুখের জন্য হতদরিদ্র বাবা তাঁর সাধ্যমতো যৌতুকের ২০ হাজার টাকা দেয়। এক সপ্তাহ আগে আবারও টাকা দাবি করলে মেয়ে টাকা আনতে অপরাগতা জানালে মেয়ের ওপর অমানসিকভাবে শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিড়ির আগুন দিয়ে ছ্যাকা দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে। মেয়ের ওপর এ নির্যাতন দেখে বাবা সহ্য করতে না পেরে অবশেষে চিকিৎসার জন্য নিজ বাড়ি মেদেনীপুর গ্রামে নিয়ে আসেন। অবশেষে চিকিৎসার এক সপ্তাহ পর ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়।

এদিকে, শারীরিক নির্যাতনে মৃত্যু হলেও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য একটি রফার মাধ্যমে গতকাল বেলা ১১টার দিকে লাশটি দাফন করে দেওয়া হয়। এ ঘটনাটি নিয়ে এখন আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে দিয়ে কিছু দিনের জন্য স্বস্তি পেলেও অবশেষে সারা জীবনের জন্য মেয়েকে হারালো তার পরিবার। মেয়েকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন হতভাগা বাবা-মা।

এদিকে, স্থানীয় জনগণ ঘাতক বাবুকে উত্তম-মাধ্যম দিয়ে বিদায় করে। ফতেপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়েকে মারধর করেছে, এমন কোনো বিষয় আমাকে ছেলের পক্ষ থেকে বলেনি। তারা শুধু আমাকে বলেছে মেয়েটি তার বাবার বাড়িতে যেয়ে স্ট্রোক করে মারা গিয়েছে। সে জন্য আমি ছেলের সাথে মেয়ের বাড়িতে যায়। সেখানে যেয়ে জানতে পারি ছেলে মেয়েটিকে অমানসিকভাবে নির্যাতন করেছে এবং মেয়েটির গায়ে নাকি বিড়ির আগুনের ছ্যাকা দেওয়া হয়েছে।’

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন, মেদেনীপুর গ্রামে যে ঘটনা ঘটেছে, এ বিষয়ে থানায় এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।